পাবলিক ফার্স্ট-এর প্রস্তুতকৃত উবারের ২০২১ সালের ইকোনমিক ইমপ্যাক্ট রিপোর্টের মাধ্যমে রাইড শেয়ারিং প্ল্যাটফর্মের পরিবর্তিত প্রভাবের চিত্র ফুটে উঠেছে
• উবারের রাইড থেকে গত বছর কনজিউমার সারপ্লাসে* আনুমানিক ৭,০০০ কোটি টাকা উৎপাদিতে হয়েছে
• ৯৬% নারী যাত্রী বলেন, তাদের উবার বেছে নেওয়ার পেছনে নিরাপত্তা একটি গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার
• চালকদের ক্ষেত্রে এই বর্ধিত সুবিধার আনুমালিক মূল্য ৭২ কোটি টাকা
• ৯০% যাত্রী যাতায়াতের সুবিধার কারণে উবার ব্যবহার করেন, এতে বছরে আনুমানিক ১ কোটি ৭০ লক্ষ ঘণ্টা সময় সাশ্রয় হয়
প্রথমবারের মতো বাংলাদেশে ইকোনমিক ইমপ্যাক্ট রিপোর্ট প্রকাশ করলো উবার। রাজধানী ঢাকায় একটি অনুষ্ঠানের মাধ্যমে রিপোর্টটি উন্মোচন করা হয়। রিপোর্টটি প্রস্তুত করেছে যুক্তরাজ্যভিত্তিক নীতি গবেষণা সংস্থা পাবলিক ফার্স্ট। ২০২১ সালে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে ৪,৫০০ কোটি টাকা অবদান রাখার মাধ্যমে কীভাবে উবার যাত্রী, চালক ও সমাজের জন্য অন-ডিম্যান্ড অর্থনীতির পরিবর্তনে সাহায্য করেছে, রিপোর্টে সে বিষয়টিই তুলে ধরা হয়েছে।
রিপোর্টটি অর্থনৈতিক অবদান, কনজিউমার সারপ্লাস, এই প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে ব্যবহারকারী ও চালকদের প্রাপ্ত উপকারের পেছনের কারণগুলোকে গভীরভাবে বিবেচনা করে। রিপোর্টে অন্তর্ভুক্ত উল্লেখযোগ্য বিষয়গুলো হলো:
বাংলাদেশের অর্থনীতিতে অবদান
• ২০২১ সালে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে আনুমানিক ৪,৫০০ কোটি টাকা অবদান রেখেছে উবার। এর মধ্যে উবারের মাধ্যমে চালকদের উপার্জনের প্রভাব এবং বৃহত্তর পরিসরে কোম্পানির বিস্তৃত সরবরাহ ব্যবস্থায় পরোক্ষ ও বহুমুখী প্রভাব উভয়ই অন্তর্ভুক্ত রয়েছে
• একই বছরে উবারের রাইড কনজিউমার সারপ্লাসে ৭,০০০ কোটি টাকা উৎপাদন করেছে, যা মোটামুটিভাবে দেশের জিডিপির ০.২৫%
যাত্রী ও চালকদের ওপর প্রভাব
• ৯০% যাত্রী বলেন, যাতায়াতকালীন স্বস্তি তাদের উবার ব্যবহার করার পেছনে একটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ। আনুমানিকভাবে, বছরে উবার যাত্রীদের ১ কোটি ৭০ লক্ষ ঘণ্টা সাশ্রয় করে। প্রকৃতপক্ষে, বাংলাদেশি যাত্রীদের মতে, গত এক দশকে পরিবহন খাতে তাদের দেখা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উদ্ভাবনটি হলো রাইডশেয়ারিং
• ৭৩% চালক বলেন, ২০২১ সালে তারা উবার নিয়ে সন্তুষ্ট ছিলেন। এর মাধ্যমে গত বছর তারা অতিরিক্ত ৫২.২ কোটি টাকা আয় করেছেন, যা তাদের সম্ভাব্য পরবর্তী সেরা বিকল্প আয় বা কাজের উৎসের চেয়ে ২৬% বেশি
সমাজের ওপর প্রভাব — নিরাপত্তা এবং উন্নত অ্যাক্সেস
• ৯০% নারী যাত্রী জানান, তাদের উবার বেছে নেওয়ার পেছনে নিরাপত্তা একটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ। এবং ৭২% নারী যাত্রী একমত যে, রাতে দেরি করে বাড়ি পৌঁছানো এখন আগের তুলনায় সহজ।
• ব্যক্তিগত গাড়ি নেই এমন ৮৪% যাত্রী বলেন, উবারের মতো রাইডশেয়ারিং সার্ভিসের সহজলভ্যতার কারণে তারা নিজেদের গাড়ি না কেনার সিদ্ধান্ত নিতে পেরেছেন
• মোটের ওপর, আমাদের অনুমান হচ্ছে, উবারের প্রতি ৬টির মধ্যে ১টি ট্রিপ গণপরিবহনের সাথে যুক্ত
মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান এই রিপোর্ট উন্মোচন উপলক্ষে বলেন, “বাংলাদেশ উন্নয়নের অভিযাত্রায় দ্রুত অগ্রসর হচ্ছে এবং ৪র্থ শিল্প বিপ্লবের এই যুগে প্রযুক্তিগত উদ্ভাবনের জোয়ারে এই গতি ত্বরান্বিত হচ্ছে। আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্ন পুরণ করেছি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দক্ষ নেতৃত্বে স্মার্ট বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার সাথে সাথে ২০৪১ সালের মধ্যে জাতীর পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা বাস্তবায়নের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের দিকেও এগিয়ে যাচ্ছি। আশা করি, সেই লক্ষ্য অর্জনে উবারের মত আরোও ব্র্যান্ড আামদের উন্নয়নের অংশিদার হবে। আমাদের অর্থনীতিতে উবারের ইতিবাচক প্রভাব সম্পর্কে জানতে পেরে আমি অত্যন্ত আনন্দিত। ভবিষ্যতে বাংলাদেশে উবারের প্রবৃদ্ধি ও আরো কার্যকর অবদানের প্রত্যাশা করছি।”
উবারের এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলের পাবলিক পলিসি ও গভর্নমেন্ট রিলেশনস বিভাগের সিনিয়র ডিরেক্টর মাইক অরগিল এই রিপোর্ট সম্পর্কে বলেন, “২০১৬ সাল থেকে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও সুযোগের একটি গুরুত্বপূর্ণ চালিকাশক্তি হিসেবে কাজ করছে উবার। কিন্তু আমাদের অবদানের ব্যাপ্তি সম্পর্কে আমাদের স্পষ্ট ধারণা ছিল না। এই গবেষণার মাধ্যমে প্রথমবারের মতো চালক, যাত্রী ও অর্থনীতির ওপর অবদানের সার্বিক প্রভাব আমরা দেখতে পাচ্ছি। এটি নিজের কাজের সময়ের ওপর নিয়ন্ত্রণের গুরুত্ব তুলে ধরে। পাশাপাশি, এর মাধ্যমে আরও তুলে ধরা হয়েছে, যাতায়াতের উন্নত ব্যবস্থা কীভাবে মানুষকে নিরাপদে চলাচলের সুযোগ করে দেয় এবং অর্থনীতিতে অবদান রাখতে সাহায্য করে। এর ফলে আমাদের সমাজের জন্য কাজ চালিয়ে যাওয়া এবং একটি ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গড়ে তোলার জন্য আমাদের প্রযুক্তি ও দক্ষতাকে কাজে লাগানোর প্রতিজ্ঞা আরও দৃঢ় হয়।”
রিপোর্ট তৈরির পদ্ধতিসহ পুরো রিপোর্ট দেখুন এখানে
*অর্থনৈতিক কল্যাণ সাধনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিকগুলোর একটি হলো —কারো দেওয়া কোনো পণ্য বা পরিষেবার বিপরীতে যে পরিমাণ অর্থ আপনার স্বেচ্ছায় তাকে প্রদান করতে হয়। কোনো পণ্যের কনজিউমার সারপ্লাস শূন্য হওয়ার অর্থ হলো আমরা এটি নিতে পারি বা ছেড়ে দিতে পারি। অপরদিকে, উচ্চ কনজিউমার সারপ্লাস সম্পন্ন পণ্য আমাদের জীবনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।