চলতি মাসের শেষেই দেখা মিলবে ‘ব্লাড মুন’ বা রক্তাভ চাঁদের। শতাব্দীর দীর্ঘতম পূর্ণগ্রাস চন্দ্রগ্রহণ হবে আগামী ২৭ ও ২৮ জুলাই। এ দুই দিন দেখা যাবে ‘ব্লাড মুন’ বা রক্তাভ চাঁদও। এর মাধ্যমে বিরল এক মহাজাগতিক দৃশ্যের সাক্ষী হতে চলেছে বিশ্ব। চন্দ্রগ্রহণ প্রক্রিয়াটি হবে টানা ৪ ঘণ্টা ধরে। তার মধ্যে ১ ঘণ্টা ৪৩ মিনিট ধরে চলবে পূর্ণগ্রাস। এ বছর শেষ বার রক্তাভ চাঁদ বা ব্লাড মুন দেখা গিয়েছিল জানুয়ারি মাসে ৪৫ মিনিট ধরে।
বাংলাদেশসহ বিশ্বের অগণিত মানুষ একই দিনে দু’টি মহাজাগতিক ঘটনার সাক্ষী থাকতে চলেছেন। আগামী ২৭ জুলাই রাতে শতাব্দীর দীর্ঘতম পূর্ণগ্রাস চন্দ্রগ্রহণ দেখা যাবে। আর সে-দিনই মঙ্গলগ্রহ পৃথিবীর সবচেয় কাছে চলে আসবে। তার ফলে সন্ধ্যা থেকে ভোর পর্যন্ত লাল গ্রহকে আকাশে জ্বলজ্বল করতে দেখা যাবে। তবে সে পৃথিবীর সব থেকে কাছে আসবে ৩১ জুলাই। সে-দিন পৃথিবী থেকে তার দূরত্ব হবে প্রায় পাঁচ কোটি ৭৬ লক্ষ কিলোমিটার। গ্রহণের রাতে চাঁদ পুরোপুরি পৃথিবীর ছায়ায় ঢাকা পড়লে মঙ্গলকে আরও ভাল ভাবে নজরে পড়বে।
জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, ২৭ জুলাই পূর্ণিমা। সে-দিন সূর্য, পৃথিবী ও চাঁদ এক সরলরেখায় চলে আসায় পৃথিবীর ছায়ায় পুরোপুরি প্রবেশ করবে চাঁদ। অর্থাৎ পূর্ণগ্রাস হবে তার। কেন্দ্রীয় সরকারি সংস্থা পজিশনাল অ্যাস্ট্রোনমি সেন্টারের অধিকর্তা সঞ্জীব সেন জানান, ২৭ জুলাই রাত ১১টা ৫৪ মিনিটে চাঁদের আংশিক গ্রহণ শুরু হবে। পূর্ণগ্রাস শুরু রাত ১টায়। চলবে রাত ২টো ৪৩ মিনিট পর্যন্ত। পুরোপুরি গ্রহণ শেষ হবে ২৮ জুলাই ভোর ৩টে ৪৯ মিনিটে।
মঙ্গল গড়ে ২৬ মাস অন্তর পৃথিবীর কাছে আসে এবং প্রতিযোগ হয়। অর্থাৎ সূর্য ও মঙ্গলের মাঝখানে আসে পৃথিবী এবং এক সরলরেখায় থাকে। এ বার এই ঘটনাকে ‘সুবর্ণ প্রতিযোগ’ বলছেন বিজ্ঞানীরা। তাঁরা জানান, মঙ্গল তার কক্ষপথে সূর্যের কাছাকাছি থাকার সময়ে প্রতিযোগ হলে তাকে সুবর্ণ প্রতিযোগ বলা হয়। এর ফলে জুলাইয়ের শেষ সপ্তাহ জুড়ে রাতের আকাশে ঝলমলে লাল গ্রহের দেখা মিলবে। ২০০৩ সালের ২৮ অগস্ট পৃথিবী ও মঙ্গলের দূরত্ব কমে হয়েছিল প্রায় পাঁচ কোটি ৫৮ লক্ষ কিলোমিটার।
বিশ্বের বহু অঞ্চল থেকেই আগামী ২৭ জুলাই এর চন্দ্রগ্রহণ দেখা যাবে। এর মধ্যে পূর্ব আফ্রিকা, মধ্য এশিয়া, দক্ষিণ আমেরিকা, পশ্চিম আফ্রিকা, পূর্ব-এশিয়া ও অস্ট্রেলিয়া উল্লেখযোগ্য। বাংলাদেশ থেকেও বেশ ভালোভাবে দীর্ঘ সময়ব্যাপী এ চন্দ্রগ্রহণ দেখা যাবে বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।