কাতারের দোহায় অনুষ্ঠেয় ১৬তম আন্তর্জাতিক জুনিয়র সায়েন্স অলিম্পিয়াড (আইজেএসও ২০১৯)-এর জন্যে বাংলাদেশ দল নির্বাচনের লক্ষ্যে আজ ৩টি স্কুলে অনুষ্ঠিত হল আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংক ৫ম বাংলাদেশ জুনিয়র সায়েন্স অলিম্পিয়াডের (বিডিজেএসও ২০১৯) স্কুল অলিম্পিয়াড পর্ব। স্কুল ৩টি হচ্ছে বান্দরবানের লামা উপজেলার কোয়ান্টাম কসমো স্কুল ও কলেজ, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার বিটঘর রাধানাথ উচ্চ বিদ্যালয় ও টাঙ্গাইল সদর উপজেলার সৃষ্টি একাডেমি স্কুল। এই ৩টি স্কুলে প্রায় ৮০০ শিক্ষার্থী এই অলিম্পিয়াডে অংশগ্রহণ করে। ৫ম জুনিয়র সায়েন্স অলিম্পিয়াডের আঞ্চলিক পর্বে শিক্ষার্থীরা অংশ নেয় চারটি ক্যাটাগরিতে—প্রাইমারি (তৃতীয় থেকে পঞ্চম) জুনিয়র (ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণি), সেকেন্ডারি (নবম ও দশম শ্রেণি) ও স্পেশাল (একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণি, ১ জানুয়ারি ২০০৪-এর পর যাদের জন্ম)। কিন্তু আজকের পর্বগুলোয় অংশ নেয় শুধুমাত্র জুনিয়র ও সেকেন্ডারি ক্যাটাগরির শিক্ষার্থীরা। ৪৫ মিনিটের এই অলিম্পিয়াডে শিক্ষার্থীদের পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন ও জীববিজ্ঞানের চারটি করে মোট ১২টি সমস্যার সমাধান করতে হয়। আজ বান্দরবানের কোয়ান্টাম কসমো স্কুল ও কলেজে অনুষ্ঠিত স্কুল অলিম্পিয়াডে অংশ নেয় প্রায় ২ শতাধিক শিক্ষার্থী। এই অলিম্পিয়াডের একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য হচ্ছে, অংশগ্রহণকারীদের ৫৫ শতাংশ পাহাড়ি ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর সদস্য। চাকমা, মারমা, মুরং, বম, চাক, সাওতাল সহ প্রায় ১২টি ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর শিক্ষার্থীরা এই অলিম্পিয়াডে অংশ নেয়। এদিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিটঘর উপজেলার বিটঘর রাধানাথ উচ্চ বিদ্যালয়ে বিডিজেএসও স্কুল অলিম্পিয়াডে অংশ নেয় ১৫ টি স্কুলের ৪৮০জন শিক্ষার্থী। সকাল দশটায় জাতীয় সংগীতের মাধ্যমে অনুষ্ঠান শুরু হয়। অনুষ্ঠানটি উদ্বোধন করেন বিটঘর রাধানাথ উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম। স্থানীয় ভাবে এটি আয়োজনে সহায়তা করে ঢাকাস্থ বিটঘর ইউনিয়ন ছাত্র কল্যাণ পরিষদ। আর টাঙ্গাইলের স্কুল অলিম্পিয়াডটি আয়োজিত হয় টাঙ্গাইল সদরের সৃষ্টি একাডেমিক স্কুলে। এই অলিম্পিয়াডে সৃষ্টি একাডেমিক স্কুলের প্রায় ১০০ জন শিক্ষার্থী অংশ নেয়। সকাল ৯:০০ টায় অনুষ্ঠানটি শুরু হয়। এতে উপস্থিত ছিলেন সৃষ্টি একাডেমিক স্কুলের সাইন্স ক্লাবের মডারেটর শহীদুল ইসলাম শহীদ। এছাড়াও ঐ স্কুলের পদার্থ বিজ্ঞানের শিক্ষক শরিফুল ইসলাম শরীফ, রসায়নের শিক্ষক মো: নয়ন, জীববিজ্ঞানের শিক্ষক ইজবাত আলী সুমন সহ অন্যান্য শিক্ষকমন্ডলী। এর আগে গত ২৬ জুলাই ও ২ আগস্ট দেশের ৭টি বিভাগীয় শহর ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, খুলনা, রংপুর বরিশাল, সিলেট এবং জেলা শহর নেত্রকোণায় মোট আটটি বিডিজেএসও আঞ্চলিক পর্ব অনুষ্ঠিত হয়। ৫ আগস্ট অনলাইনে একটি ই-অলিম্পিয়াডও অনুষ্ঠিত হয়৷ যেখানে প্রায় এক হাজার আটশত শিক্ষার্থী সারাদেশ থেকে অংশ নেয়। এছাড়া আজকের তিনটি স্কুল অলিম্পিয়াডের পাশাপাশি ২৫ জুলাই ২০১৯ তারিখে নারায়ণগঞ্জ সদর, লক্ষ্মীপুর সদর ও দিনাজপুরের বিরল উপজেলায় ৪টি স্কুলে প্রথমবারের মত অনুষ্ঠিত হয়েছে স্কুল অলিম্পিয়াড। এই আটটি আঞ্চলিক পর্ব একটি ই-অলিম্পিয়াড ও সাতটি স্কুল অলিম্পিয়াডে প্রায় ৯ হাজার নয়শত শিক্ষার্থী অংশ নেয়। এই পর্বগুলোয় সারাদেশ থেকে বিজয়ী হয় ছয় শতাধিক শিক্ষার্থী। সকল আঞ্চলিক পর্ব, ই-অলিম্পিয়াড ও স্কুল অলিম্পিয়াডের বিজয়ীদের তালিকা বিডিজেএসও-এর ওয়েবসাইটে (www.bdjso.org) পাওয়া যাবে। এছাড়া জাতীয় পর্বে অংশ নেয়ার পূর্ণাঙ্গ নির্দেশনাও পাওয়া যাবে এই ওয়েবসাইটে। বাংলাদেশ জুনিয়র সায়েন্স অলিম্পিয়াড এবার আয়োজিত হচ্ছে ৫ম বারের মত। আটটি আঞ্চলিক পর্ব, ই-অলিম্পিয়াড ও সাতটি স্কুল অলিম্পিয়াডের বিজয়ীরা অংশ নেবে আগামী ৬ সেপ্টেম্বর ঢাকায় অবস্থিত ইউনিভার্সিটি অব এশিয়া প্যাসিফিকে অনুষ্ঠেয় জাতীয় পর্বে। জাতীয় পর্বের বিজয়ীদের নিয়ে অনুষ্ঠিত হবে ৫ম বিডিজেএসও ক্যাম্প। বিডিজেএসও ক্যাম্পের সেরাদের নিয়ে আয়োজিত হবে এক্সটেনশন ক্যাম্প। সেখান থেকে বাছাই করা হবে কাতারের দোহায় ডিসেম্বরে অনুষ্ঠেয় ১৬তম আন্তর্জাতিক জুনিয়র সায়েন্স অলিম্পিয়াডের ছয় সদস্যের বাংলাদেশ দল। বিডিজেএসও যৌথভাবে আয়োজন করছে বাংলাদেশ বিজ্ঞান জনপ্রিয়করণ সমিতি (এসপিএসবি) ও বাংলাদেশ ফ্রিডম ফাউন্ডেশন (বিএফএফ)। আয়োজনটির পৃষ্ঠপোষক আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড। সহযোগী হিসেবে আছে দৈনিক প্রথম আলো। ম্যাগাজিন পার্টনার কিশোর আলো ও বিজ্ঞানচিন্তা। টেলিভিশন পার্টনার নাগরিক টিভি, কমিউনিকেশন পার্টনার বিজ্ঞান বাক্সো ও নলেজ পার্টনার ম্যাসল্যাব। অলিম্পিয়াডের বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যাবে বিডিজেএসও-র ওয়েবসাইট www.bdjso.org এবং ফেইসবুক পেইজ www.facebook.com/bdjso এ।