‘গভর্নমেন্ট সিকিউরিটি প্রোগ্রাম’ (জিএসপি) নিয়ে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সাথে চুক্তিস্বাক্ষর করেছে মাইক্রোসফট। এ চুক্তির অধীনে মাইক্রোসফটের ডিজিটাল ক্রাইম ইউনিট (ডিসিইউ) ‘বাংলাদেশ সাইবার থ্রেট ইন্টেলিজেন্স প্রোগ্রাম’ (সিটিআইপি) নিয়ে জাতীয় তথ্য কেন্দ্র এবং মন্ত্রণালয়ের সিআইআরটি দলকে প্রয়োজনীয় তথ্য প্রদান করবে।
ডাক, টেলিযোগাযোগ এবং তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার, মাইক্রোসফটের দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া উদীয়মান বাজারের (এসইএএনএম) প্রেসিডেন্ট সুক হুন চিয়াহ এবং মাইক্রোসফট বাংলাদেশ, মিয়ানমার, নেপাল, ভুটান ও লাওসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সোনিয়া বশির কবিরের উপস্থিতিতে আজ তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ে চুক্তিটি স্বাক্ষরিত হয়। বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে এ চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন ডাক, টেলিযোগাযোগ এবং তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের জাতীয় তথ্য কেন্দ্রের পরিচালক তারিক এম বরকতুল্লাহ।
যুক্তরাষ্ট্রের সিয়াটল ভিত্তিক মাইক্রোসফটের ডিজিটাল ক্রাইম ইউনিট (ডিসিইউ) দু’টি বিশেষ এলাকায় কাজ করছে। এর মধ্যে রয়েছে আইটি অবকাঠামোর ম্যালওয়্যার ঝুঁকি, বটনেট টেকডাউন ও ডিজিটাল অপরাধ মোকাবিলা এবং প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য বিগ ডাটা, এআই (কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা) ও ফরেনসিকের মতো অভিনব প্রযুক্তি পাশাপাশি আইন ও অংশীদারিত্বের সুবিধা গ্রহণ। অ্যাটর্নি, তদন্তকারী, ডাটা বিজ্ঞানী, প্রকৌশলী, বিশ্লেষক ও ব্যবসায়িক পেশাদারদের সমন্বয়ে গঠিত ডিসিইউ’র কাজের মূলে রয়েছে মানুষ, সংস্থা ও প্রতিষ্ঠান এবং সাইবার অপরাধীদের থেকে মাইক্রোসফট ক্লাউড সুরক্ষিত করা।
মাইক্রোসফটের প্রতিবেদনে বাংলাদেশের ম্যালওয়্যার ঝুঁকি ও এ বিষয়ে দুর্বলতা সম্পর্কে জানা যাবে পাশাপাশি, প্রতিবেদনের তথ্য দেশের আইটি অবকাঠামোর ঝুঁকি ও হুমকি শনাক্তে এবং এসব হুমকি হ্রাসের মাধ্যমে সুরক্ষিত ডিজিটাল বাংলাদেশ নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ গ্রহণে সহায়তা করবে।
এ নিয়ে ডাক, টেলিযোগাযোগ এবং তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেন, ‘আমাদের ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণের রূপকল্পে জাতীয় নিরাপত্তা রক্ষা এবং সাইবার হুমকি শনাক্ত করা বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এক্ষেত্রে, মাইক্রোসফটের সাথে এ চুক্তি আমাদের সহায়তা করবে কেননা সরকার ভার্চুয়াল স্পেসে আমাদের জাতীয় নিরাপত্তা শক্তিশালীকরণে কাজ করে যাচ্ছে।’
মাইক্রোসফটের দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া উদীয়মান বাজারের (এসইএএনএম) প্রেসিডেন্ট সুক হুন চিয়াহ বলেন, ‘মাইক্রোসফটের লক্ষ্য পৃথিবীর প্রতিটি মানুষ ও সংস্থার ক্ষমতায়নে আরও বেশি কিছু অর্জন। ডিজিটাল রূপান্তরের এ সময়ে প্রত্যেকটি প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের জন্য সাইবার নিরাপত্তা অত্যন্ত প্রয়োজনীয় বিষয়। মাইক্রোসফট এ বিষয়টিকে অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করছে। নিরাপদ, সুরক্ষিত ও বিশ্বাসযোগ্য কম্পিউটিং অভিজ্ঞতায় আমাদের গ্রাহকদের সহায়তা করতে আমরা প্রতিবছর সাইবার নিরাপত্তায় ১ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের চেয়েও বেশি ব্যয় করছি। এছাড়াও, প্রতিষ্ঠানগুলোর সফল সাইবার নিরাপত্তা অনুশীলনে মানুষ, প্রক্রিয়া ও প্রযুক্তি বিবেচনা করতে হবে এবং পাশাপাশি ভাবতে হবে, কিভাবে এসব বিষয় একসাথে প্রতিষ্ঠানের সামগ্রিক নিরাপত্তায় অবদান রাখতে পারে।’
মাইক্রোসফট বাংলাদেশ, মিয়ানমার, নেপাল, ভুটান ও লাওসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সোনিয়া বশির কবির বলেন, ‘বাংলাদেশ সরকারের সাথে মাইক্রোসফটের দীর্ঘস্থায়ী সম্পর্ক রয়েছে এবং আমরা এ দেশের মানুষের প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এ চুক্তি বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলকে নিরাপত্তার উদ্বেগগুলো চিহ্নিতকরণে এবং বিভিন্ন পদক্ষেপের মাধ্যমে আসন্ন ঝুঁকি সম্পর্কে জানতে সহায়তা করবে। পর্যায়ক্রমে এটা জাতীয় নিরাপত্তা শক্তিশালীকরণে এবং ডিজিটাল বাংলাদেশ সুরক্ষিত করতে সহায়তা করবে যেখানে যেখানে প্রতিটি মানুষ ও সংস্থা সাইবার হুমকি থেকে মুক্ত থাকবে।’
বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের লক্ষ্য বাংলাদেশ সরকারের ই-গভর্নমেন্ট নেটওয়ার্ক ও এ সম্পর্কিত অবকাঠামোর সাইবার নিরাপত্তা ব্যবস্থাপনা করা। এ কাউন্সিল বাংলাদেশে জাতীয় সাইবার নিরাপত্তা দুর্ঘটনা ব্যবস্থাপনা সক্ষমতা স্থপনে কাজ করে যাচ্ছে এবং মাইক্রোসফটের প্রতিবেদনটি ফাইন্যান্সিয়াল ও আইডেন্টিটি থেফট এবং অ্যাডভার্টাইজিং ক্লিক প্রতারণা সহ অন্যান্য প্রতারণা ও অপরাধ নিয়ন্ত্রণে কাউন্সিলের কাজ সম্পন্ন করতে সরকারকে সহায়তা করবে।