দেশের প্রতিভাবান উদ্যোক্তাদের সহযোগিতা ও প্রাথমিক পর্যায়ের সম্ভাবনাময় স্টার্টআপগুলির পরিচর্যার লক্ষ্যে বাংলালিংক ও বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক অথোরিটি (বিএইচটিপিএ)-এর যৌথ উদ্যোগ বাংলালিংক আইটি ইনকিউবেটর-এর তৃতীয় আসরের গালা নাইট অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই অনুষ্ঠানে এবারের ব্যাচের জন্য নির্বাচিত ৭টি স্টার্টআপের নাম ঘোষণা করা হয়। প্রধান অতিথি হিসেবে অনুষ্ঠানটিতে উপস্থিত ছিলেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের মাননীয় প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক।
বিশেষ এই আয়োজনে আরও উপস্থিত ছিলেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব এন এম জিয়াউল ইসলাম, বাংলালিংক-এর চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার এরিক অস, বাংলালিংক-এর চিফ কর্পোরেট অ্যান্ড রেগুলেটরি অ্যাফেয়ার্স অফিসার তাইমুর রহমান, বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক অথোরিটি-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক হোসনে আরা বেগম এবং অন্যান্য উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তারা।
গত ২০১৯ সালের নভেম্বরে আবেদন প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার পর বহু সংখ্যক ডিজিটাল স্টার্টআপ অনলাইন সাবমিশনের মাধ্যমে এই কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করে। স্টার্টআপগুলির ডিজিটাল পরিকল্পনার অভিনবত্ব, পরিসর পরিবর্তনযোগ্যতা ও কার্যকারিতার উপর ভিত্তি করে মোট ৭টি স্টার্টআপকে নির্বাচন করা হয়। এই ৭টি স্টার্টআপ হলো সেভ আপ লিমিটেড, কারুকথা সফটওয়্যার, ঘটান, এএনটিটি রোবোটিক্স, মেসবুক, অফশোর ও বুকশিওনারি. কম। কারওয়ান বাজারে অবস্থিত জনতা টাওয়ারের আইটি ইসকিউবেটরে স্টার্টআপগুলি অবকাঠামো, উপকরণ ও প্রশিক্ষণ পাবে।
স্টার্টআপগুলি যথাক্রমে ডিসকাউন্ট ভিত্তিক ডিজিটাল ডিরেক্টরি, কারুশিল্পীদের জন্য ই-কমার্স, ইভেন্ট ব্যবস্থাপনায় দক্ষ ফ্রিল্যান্সারদের জন্য প্ল্যাটফর্ম, এসটিইএম প্রশিক্ষণ, ছাত্র/অবিবাহিতদের জন্য বাসস্থান ব্যবস্থাপনা, ভ্রমণকারী ও ক্রেতাদের সংযুক্তকারী ই-কমার্স ও ডিজিটাল পদ্ধতিতে বই বিনিময় নিয়ে উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। গালা নাইটে ঘোষণা করা হয় আরও দুইটি স্টার্টআপের নাম যেগুলি বাংলালিংক আইটি ইনকিউবেটর-এর দ্বিতীয় ব্যাচে যোগ দিয়ে অনুষ্ঠিতব্য মোবাইল ওয়ার্ল্ড কংগ্রেসে ফোরওয়াইএফএন (ফোর ইয়ার্স ফ্রম নাউ) নামক ইভেন্টে অংশগ্রহণের সুযোগ পেয়েছে। এই স্টার্টআপ দুইটি হলো টিচ ইট ও ইজি সেন্স। উক্ত ইভেন্টে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বিনিয়োগকারীদের সামনে নিজেদের উদ্যোগ ও পরিকল্পনা উপস্থাপনার সুযোগ পাবে তারা।
আইটি ইনকিউবেটর বাংলালিংক-এর স্বত্বাধিকারী প্রতিষ্ঠান ভিওনের ফ্ল্যাগশিপ কর্পোরেট রেসপন্সিবিলিটি প্রোগ্রাম “মেক ইওর মার্ক”-এর অন্তর্ভুক্ত। বিশ্বের যেসব স্থান ভিওনের কার্যক্রমের আওতাধীন সেসব স্থানের আইটি খাতের উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে প্রতিষ্ঠানটি প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।
বাংলালিংক-এর চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার এরিক অস বলেন, “আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি যে, প্রয়োজনীয় নির্দেশনা ও সহযোগিতা পেলে এই সম্ভাবনাময় তরুণ উদ্যোক্তারা সমৃদ্ধশালী ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণে অবদান রাখতে পারবে। অনেক আগ্রহী উদ্যোক্তাকে তাদের নিজ নিজ উদ্যোগকে সামনে এগিয়ে নিতে সহায়তা করার মাধ্যমে বাংলালিংক আইটি ইনকিউবেটর ইতোমধ্যেই একটি দৃষ্টান্তমূলক ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে পরিণত হয়েছে। দেশের প্রযুক্তি খাতের উন্নয়নে অবদান রাখার প্রতিশ্রুতির অংশ হিসেবে বাংলালিংক ভবিষ্যতেও সম্ভাবনাময় উদ্যোক্তাদের সহযোগিতা করে যাবে।”
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের মাননীয় প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক বলেন, “দৃঢ় প্রতিজ্ঞা, কঠোর পরিশ্রম ও উদ্ভাবনী প্রয়াসের মাধ্যমে যে প্রতিভাবান তরুণ উদ্যোক্তারা এই পর্যায়ে পৌঁছেছে তাদের মাঝে এসে আমি অত্যন্ত আনন্দিত। আমরা যদি এই সম্ভাবনাময় উদ্যোক্তাদের সন্ধান করে এনে তাদের ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করতে পারি তাহলে নতুন উদ্যোগ গ্রহণ করতে তারা আরও বেশি উৎসাহী হবে। উদ্যোক্তাদের পাশে দাঁড়িয়ে তাদের সঠিক নির্দেশনা প্রদানের জন্য বাংলালিংক ও বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক অথোরিটির সহকর্মীরা সত্যিই আমাদের প্রশংসার দাবিদার।”
২০১৬ সালের জুলাই মাসে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর আইসিটি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় ও ইন্টারন্যাশনাল টেলিকম্যুনিকেশনস্ ইউনিয়নের সেক্রেটারি জেনারেল হওলিন ঝাও আইটি ইনকিউবেটর উদ্বোধন করেন। গত দুই বারের আয়োজনে মোট ১৬টি স্টার্টআপকে সহায়তা প্রদান করেছে বাংলালিংক আইটি ইনকিউবেটর।