কয়েক বছর আগেও নতুন কোথাও ভ্রমণে যেতে হলে পথ-ঘাট চিনে রওনা দিতে হতো। তবে গুগল ম্যাপ এখন গোটা পৃথিবীকে মানুষের হাতের মুঠোয় এনেছে। রাস্তা চিনতে আমরা কম বেশি প্রায় সবাই গুগল ম্যাপের সাহায্য নিয়ে থাকি। যেখানেই যেতে চান, গুগল ম্যাপে অনুসন্ধান করলে বেরিয়ে আসবে সে স্থান, যাওয়ার পথ, কীভাবে যেতে হবে তার সবই। বিশ্বব্যাপী গুগল ম্যাপ বৃহৎ পরিসরে ব্যবহার হলেও, আমাদের দেশে এখনো অনেকে সেবাটির সঙ্গে অভ্যস্ত হয়ে উঠতে পারেনি। গুগল ম্যাপের ফিচার নিয়ে আজকেরএবারের আয়োজন
ভয়েস কমান্ড ব্যবহারকারী
গুগল ম্যাপে ভয়েস কমান্ড ব্যবহার করেও সাহায্য পাওয়া যায়। সার্চ বারের পাশে থাকা মাইক্রোফোন আইকনে ক্লিক করে ভয়েস কমান্ড দেওয়া যায়। ফিচারটির মাধ্যমে গন্তব্যে পৌঁছানোর সময় জেনে নিতে বলতে হবে ‘শো মাই ইটিএ’।
ফেভারিট লেবেল
অনেক জায়গাই আছে যেখানে পরবর্তীতে আবারও যেতে হতে পারে। জায়গা চিনে রাখতে তাই ব্যবহার করা যেতে পারে ফেভারিট লিস্ট। এর জন্য প্রথমে ঠিকানা সার্চ করে তাতে লাল রঙের লোকেশন চিহ্নিত করা আইকনের ওপরে ক্লিক করতে হবে। এরপরে নতুন একটি পেইজ আসলে এর ওভারভিউ ফিচারের সেইভ অপশনে ক্লিক করতে হবে। নতুন আরেকটি পেইজ আসলে ফেভারিট অপশনে ক্লিক করে ঠিকানাটি সেইভ করে নিতে হবে।
ট্রাফিক অপশন
কোন রাস্তায় কতোখানি জ্যাম আছে তা দেখতে গুগল ম্যাপসের হোম পেইজের উপরে ডান দিকে থাকা চারকোনা আকৃতির আইকনে ক্লিক করতে হবে। এরপর ছয়টি অপশনসহ একটি পেইজ আসবে। সেখান থেকে ট্রাফিক অপশনটি সিলেক্ট করতে হবে। ট্রাফিক অপশনটি চালু হলে ম্যাপে দেখানো রাস্তা বিভিন্ন রঙে ভরে উঠবে।মেরুন রঙ দেখানো হলে বুঝে নিতে হবে প্রচণ্ড জ্যাম আছে। লাল দেখালে বুঝতে হবে রাস্তায় জ্যাম আছে। সবুজ বা হলুদ রঙ দেখালে বুঝে নিতে হবে রাস্তা ফাঁকা আছে ।
ডিফল্ট অ্যাড্রেস
গুগল ম্যাপে অফিস থেকে বাসার লোকেশন সিলেক্ট করলে সহজেই জানা যাবে রাস্তায় জ্যাম আছে কিনা। লোকেশন সেট করতে যেতে হবে মেনু বাটন অপশনে। সেখানে ইয়োর প্লেসেস অপশনে গিয়ে বাসা আর অফিসের ঠিকানা সেট করতে হবে। এরপর যেকোনো একটি ঠিকানার উপরে ক্লিক করলেই রাস্তায় জ্যাম আছে কিনা তা দেখে নেওয়া যাবে।
লোকেশন শেয়ার
কোনো বন্ধু যদি আপনার বাসার ঠিকানা না চিনতে পারে তাহলে নিজের লোকেশন শেয়ার করেও তাকে রাস্তা চেনানো যাবে। গুগল ম্যাপে নিজের অবস্থান চিহ্নিত করে লোকেশন শেয়ার অপশনে ক্লিক করতে হবে। এরপরে যে অ্যাপের মাধ্যমে লোকেশনটি শেয়ার করতে চান তাতে ক্লিক করতে হবে।
অফলাইন ম্যাপ
ইন্টারনেট সংযোগ ছাড়াও গুগল ম্যাপ ব্যবহার করা যাবে। দুর্গম পাহাড়ে বেড়াতে গিয়ে পথ হারিয়ে ফেললেন কিংবা হাতে স্মার্টফোন আছে, কিন্তু নেটওয়ার্ক কাভারেজের বাইরে অবস্থান করছেন। এক্ষেত্রে কোনো এলাকায় বেড়াতে যাওয়ার আগে সে এলাকার ম্যাপ ডাউনলোড করে রাখা যাবে। অর্থাৎ একবার কোনো এলাকার ম্যাপ ডাউনলোড করে নিলে ইন্টারনেট সংযোগ ছাড়াও তা দিকনির্দেশনা, অবস্থান ও রাস্তাঘাট সম্পর্কে বিস্তারিত জানা যাবে।
দূরত্ব পরিমাপ
রাজধানীর কারওয়ান বাজার থেকে গুলশানের দূরত্ব কত কিংবা ঢাকা থেকে বাংলাদেশের যেকোনো বিভাগীয় শহরের দূরত্ব কত? তা খুব সহজে এবং নিমেষেই বের করা যাবে গুগল ম্যাপে। সুবিধাটি পেতে প্রথমে যেখান থেকে দূরত্ব মাপতে চান, সে অবস্থানে ড্রপ পিন রাখতে হবে। এবার ড্রপ পিনের ওপর চাপ দিয়ে ধরলে কতগুলো অপশন দেখানো হবে। সেখান থেকে ‘মেজার ডিসটেন্স’-এ ক্লিক করে দূরত্ব জেনে নেয়া যাবে।
কাছাকাছি রেস্তোরাঁ বা ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান
দীর্ঘদিন পর খুব কাছের এক বন্ধুর সঙ্গে দেখা হয়ে গেল। কিন্তু এমন একটি জায়গায় দুজনের দেখা হলো, যা সম্পর্কে দুজনেরই খুব বেশি জানা-শোনা নেই। গুগল ম্যাপ থেকে জেনে নেয়া যাবে কাছাকাছি কোনো রেস্তোরাঁর অবস্থান বা দূরত্ব কতটুকু। চলতি পথে বাইক বা গাড়ির তেল ফুরিয়ে গেলে গুগল ম্যাপ ব্যবহার করে জেনে নেয়া যাবে আশপাশে কোথায় পেট্রল পাম্প আছে।
এক হাতে জুম
গাড়ি চালানোর সময় দুই হাত ব্যবহার করে লোকেশন দেখাটা বেশ ঝুঁকিপূর্ণ। তাই চালকদের সুবিধার্থে ডবল ট্যাপ করে লোকেশন জুম করে দেখার অপশনও আছে গুগল ম্যাপে।