ডিজিটাল বাংলাদেশে তথ্যপ্রযুক্তি শিল্প বিকাশের বিকল্প নেই। একটা সময় এই কথাগুলো রুপকথা মনে হলেও একবিংশ শতাব্দীতে ক্ষুদে শিক্ষার্থীদের মধ্যেও আজ ডিজিটাল শব্দ বহুল প্রচলিত। রাজধানীর পাশাপাশি ডিজিটালি চট্টগ্রামও বাণিজ্যিক রাজধানী হিসেবে এগিয়ে যাচ্ছে। চট্টগ্রামকে স্মার্ট সিটি হিসেবে গড়ে তোলার জন্য ৫০০ কোটি টাকার প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। পুরো নগরকে নিরাপত্তার চাদরে পরিবেষ্টিত করা হবে। ১১ টি আইপি ক্যামেরা স্থাপন করা হবে যা দিয়ে গভীর রাতেও দুই কিলোমিটার দুর থেকেও স্বচ্ছ ছবি পাওয়া যাবে।
২৮ মার্চ ( বৃহস্পতিবার) বাণিজ্যিক রাজধানী চট্টগ্রামের বৃহত্তম কম্পিউটার মেলা ‘বিসিএস ডিজিটাল এক্সপো চট্টগ্রাম ২০১৯’ উদ্বোধনকালে এসব কথা বলেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আ জ ম নাসির উদ্দিন।
তিনি আরো বলেন, চট্টগ্রামে হাইটেক পার্ক স্থাপনের জন্য চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন হাইটেক পার্ক অথরিটির সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করছে। ইতোমধ্যে ২৫০ কোটি টাকার প্রকল্প বাস্তবায়নে আইটি টু এবং আইটি সেভেন নামে দুইটি অবকাঠামো নির্মাণের কার্যক্রম শিগগির শুরু হবে। আইটি ব্যবসায়ীদের জন্য আগ্রাবাদের সিঙ্গাপুর মার্কেটে দুইটি নতুন ফ্লোর নির্মাণ করা হবে। বিসিএস সদস্যরা এখানে প্রাধান্য পাবেন। তথ্যপ্রযুক্তি মেলা শিক্ষার্থী এবং সাধারণ মানুষদের মধ্যে প্রযুক্তি জ্ঞান বৃদ্ধি করবে। এতে মানুষ নতুন ডিভাইসের সংস্পর্শে এসে দৈনন্দিন জীবনকে আরো সহজ এবং গতিময় করতে পারবে।
উদ্বোধন অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতি (বিসিএস) এর সভাপতি ইঞ্জি. সুব্রত সরকার। তিনি বলেন, চট্টগ্রামের মানুষ বরাবরের মতো প্রযুক্তি বান্ধব। বিসিএস সারাদেশের মানুষের প্রযুক্তি আগ্রহ বাড়াতে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। সারাদেশে তথ্যপ্রযুক্তির উৎকর্ষতা বাড়াতে আয়োজন করছে নিত্যনতুন প্রযুক্তি পণ্যের সমাহার নিয়ে কম্পিউটার মেলা। শুধু রাজধানী কেন্দ্রিক না হয়ে একই মূল্যে সারাদেশে প্রযুক্তি পণ্য কেনা এবং প্রযুক্তি পণ্যের ওয়ারেন্টি নিশ্চিত করতে বিসিএস গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। আমাদের এই যাত্রা অব্যহত থাকবে।
বিসিএস ডিজিটাল এক্সপো চট্টগ্রাম ২০১৯ এর কেন্দ্রীয় সমন্বয়কারী মো. জাবেদুর রহমান শাহীন বলেন, চট্টগ্রামের মানুষকে প্রযুক্তির সঙ্গে হালনাগাদ রাখতে বিসিএস প্রতিবছর প্রদর্শনীর আয়োজন করে থাকে। এমন আয়োজনে শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষরাও নিজ আগ্রহে জড়ো হন। নিজের হাতে নেড়েচেড়ে দেখেন আকর্ষণীয় তথ্যপ্রযুক্তির পণ্যগুলো। এই মেলাকে সফল করতে যারা নিরলসভাবে কাজ করে গেছেন, তাদের প্রতি আমার আন্তরিক কৃতজ্ঞতা। এই প্রদর্শনী প্রযু্ক্তি জ্ঞান সমৃদ্ধ করে মানুষের মধ্যে ইতিবাচক প্রভাব ফেলে ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণকে তড়ান্বিত করবে।
উদ্বোধন অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন বিসিএস মহাসচিব মোশারফ হোসেন সুমন, প্রদর্শনীর আহবায়ক মো. দিদারুল ইসলাম চৌধুরী, বিসিএস সহ-সভাপতি ইউসুফ আলী শামীম, পরিচালক মো. শাহিদ-উল-মুনীর, মো. আছাব উল্ল্যাহ্ খান জুয়েল, মো.মোস্তাফিজুর রহমান প্রমুখ।
অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন বিসিএস চট্টগ্রাম শাখার সভাপতি মো. সুফিয়ান আলী। ‘এগিয়ে যাক ডিজিটাল প্রযুক্তি গঠিত হোক দক্ষ জনশক্তি’ এই স্লোগানে শুরু হওয়া ‘বিসিএস ডিজিটাল এক্সপো চট্টগ্রাম ২০১৯’ ২৮ মার্চ থেকে চারদিন ব্যাপী চট্টগ্রামের জিইসি কনভেনশন সেন্টারে ৩১ মার্চ পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হবে।
১৫ হাজার বর্গফুটের এই প্রদর্শনীতে ১৭টি প্যাভেলিয়ন এবং ৬৫টি স্টলে হালনাগাদ সংস্করণের প্রযুক্তিপণ্য এবং ডিজিটাল জীবনধারাভিত্তিক পণ্য ও সেবা প্রদর্শন করা হবে। প্রদর্শনীর প্লাটিনাম স্পন্সর এইচপি, আসুস, ডেল এবং লেনোভো। গোল্ড স্পন্সর টিপি লিঙ্ক, সিসকো এবং ওয়ালটন। প্রদর্শনীতে সিলভার স্পন্সর হিসেবে থাকছে ড্যাফোডিল, টেন্ডা, হিকভিশন এবং ক্যাস্পারাস্কি। টিকেট স্পন্সর বি-ট্র্যাক এবং টিকেট কাউন্টার স্পন্সর ট্রানসেন্ড। স্বেচ্ছাসেবক ড্রেস স্পন্সর টেন্ডা, প্রদর্শনীর সিকিউরিটি পার্টনার ডাহুয়া, ওয়াইফাই পার্টনার সিওএল এবং গেমিং পার্টনার গিগাবাইট।
বিসিএস ডিজিটাল এক্সপো চট্টগ্রাম ২০১৯ এ প্রবেশ মূল্য ১০ টাকা। শিক্ষার্থীরা পরিচয়পত্র প্রদর্শন করে বিনামূল্যে মেলায় প্রবেশ করতে পারবে। সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত এই প্রদর্শনী চালু থাকবে। মেলায় দর্শনার্থীরা বিনামূল্যে ওয়াইফাই ব্যবহার করতে পারবেন।