জাতিসংঘ আয়োজিত ১৯তম ইন্টারনেট গভর্নেন্স ফোরাম (আইজিএফ) শেষ হয়েছে। সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদের কিং আবদুল আজিজ ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্স সেন্টারে ১৫ ডিসেম্বর শুরু হওয়া বৈশ্বিক আয়োজনের এই সম্মেলনটি শেষ হয় ১৯ ডিসেম্বর। চার দিনব্যাপী এই ফোরামে অংশ নিয়েছেন বিশ্বের বিভিন্ন দেশের নীতিনির্ধারক, আইনজীবী, প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ, সাংবাদিক এবং নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা।
‘বহু-পক্ষীয় ডিজিটাল ভবিষ্যৎ গড়ে তোলা’ এই প্রতিপাদ্য নিয়ে আয়োজিত হয় এবারের সম্মেলনটি। ফোরামের আলোচনায় উঠে এসেছে ইন্টারনেটের ভবিষ্যৎ, সাইবার নিরাপত্তা, ডিজিটাল বিভাজন এবং টেকসই উন্নয়নের সঙ্গে প্রযুক্তির সামঞ্জস্যতা। বিশেষত, এআই নীতিমালা, মানবাধিকার, শিশু সুরক্ষা, ডেটা সুরক্ষা এবং অনলাইন প্ল্যাটফর্মের জবাবদিহিতা নিয়ে ছিল বেশকিছু ফলপ্রসূ আলোচনা।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে সরাসরি এবং ভার্চুয়াল মিলে প্রায় ১০ হাজার অংশগ্রহণকারী যুক্ত হয় আইজিএফ ২০২৪ এ। এবারের আইজিএফে বাংলাদেশ লইয়ার্স ইন্টারনেট গভর্নেন্স ফোরাম এর চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট হাসান এন্ড এসোসিয়েটস এর প্রতিষ্ঠাতা ও বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টের আইনজীবী খন্দকার হাসান শাহরিয়ার এবং বাংলাদেশ কিডস ইন্টারনেট গভর্নেন্স ফোরাম এর আহ্বায়ক খন্দকার আয়েশা শাহরিয়ার আনিকা বাংলাদেশের প্রতিনিধি হিসাবে অংশগ্রহন করেছেন।
জাতিসংঘের আইজিএফ সেক্রেটারিয়েটের সাথে বৈঠকে বাংলাদেশের প্রতিনিধি দলের সদস্যরা বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি, শিশু ও তরুনদের বর্তমান অবস্থা তুলে ধরার পাশাপাশি স্থানীয় স্তরে অংশীদারত্বের মাধ্যমে ইন্টারনেট গভর্নেন্সকে আরও সমৃদ্ধ করার বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেন। উভয় পক্ষই ভবিষ্যতে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণের জন্য ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করার বিষয়ে সম্মত হয় এবং জাতিসংঘের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে উদ্যোগ নেয়া হবে বলে জানানো হয়। এ বৈশ্বিক মঞ্চে বিশ্বের নানা প্রান্ত থেকে অংশগ্রহণকারীরা ইন্টারনেট গভর্নেন্সের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করেছেন, যার মধ্যে অন্তর্ভুক্তি, ডিজিটাল সমতা, উদীয়মান প্রযুক্তি এবং নতুন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা ছিল প্রধান বিষয়।
এবারের আইজিএফের সমাপনীতে বিশ্বব্যাপী ডিজিটাল সহযোগিতা জোরদার করার প্রতিশ্রুতি গ্রহণ করা হয়। বিশেষ করে গ্লোবাল ডিজিটাল কম্প্যাক্ট বাস্তবায়ন ও ইন্টারনেটের নিরাপত্তা এবং অন্তর্ভুক্তির লক্ষ্যে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের প্রতি আগ্রহ প্রকাশ করা হয়। পরবর্তী আইজিএফ ২০২৫ সালে অসলো, নরওয়েতে অনুষ্ঠিত হবে, যেখানে ইন্টারনেটকে আরও নিরাপদ, অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং রূপান্তরমূলক টুল হিসাবে গড়ে তোলার জন্য কার্যকর ফলাফলের দিকে মনোযোগ দেওয়া হবে।