বিশ্বজুড়ে ওয়্যারেবল ডিভাইসের চাহিদা ক্রমবর্ধমান থাকায় তৃতীয় প্রান্তিকে বিক্রি বেড়েছে। এ সময় বিক্রির হার ৯ দশমিক ৯ শতাংশ বেড়ে ১৩ কোটি ৮৪ লাখ ইউনিটে পৌঁছেছে। সম্প্রতি ইন্টারন্যাশনাল ডাটা করপোরেশনের (আইডিসি) সর্বশেষ ওয়ার্ল্ডওয়াইড কোয়ার্টারলি ওয়্যারেবল ডিভাইস ট্র্যাকার প্রতিবেদন সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
ওয়্যারেবলের পাশাপাশি হিয়ারেবল ডিভাইসের বাজার গত বছরের তুলনায় ২৬ দশমিক ৩ শতাংশ বেড়েছে, যা মোট বিক্রীত ডিভাইসের ৬৪ দশমিক ৭ শতাংশ। প্রথমবারের মতো স্মার্টওয়াচের বিক্রি ফিটনেস ট্র্যাকারকে ছাড়িয়ে গেছে। এর মাধ্যমে ওয়্যারেবল ডিভাইসের বাজারে দ্বিতীয় বৃহত্তম ক্যাটাগরি হচ্ছে স্মার্টওয়াচ।
স্মার্টওয়াচের বিক্রি বাড়ার পেছনে অন্যতম কারণ হিসেবে ব্যবহারকারীদের পছন্দের বিষয়টিকেই চিহ্নিত করেছেন সংশ্লিষ্টরা। অধিক ফিচার ও বিবিধ কার্যক্রমের কারণে ব্যবহারকারীরা ফিটনেস ব্যান্ডের পরিবর্তে স্মার্টওয়াচের দিকে বেশি ঝুঁকেছেন। পাশাপাশি ফিটনেস ট্র্যাকার ও স্মার্টওয়াচের দামের মধ্যে খুব বেশি পার্থক্য না থাকায় বিক্রি বেড়েছে।
আইডিসির মোবিলিটি অ্যান্ড কনজিউমার ডিভাইস ট্র্যাকার বিভাগের গবেষণা পরিচালক জিতেশ উবরানি বলেন, ব্যবহারকারীরা ধীরে ধীরে স্মার্টব্যান্ড থেকে স্মার্টওয়াচের দিকে ঝুঁকেছেন। বিশেষ করে অধিক ফিচার ও দামের ক্ষেত্রে খুব বেশি পার্থক্য না থাকায় ব্যবহারকারীরা স্মার্টওয়াচকেই প্রাধান্য দিয়েছেন।
তিনি বলেন, ১০০ ডলারের কম মূল্যের স্মার্টওয়াচের সংখ্যা বর্তমানে স্মার্টব্যান্ডের সমানুপাতিক। সাশ্রয়ী মূল্যের স্মার্টওয়াচের বাজারে ভারত ও চীনের প্রতিষ্ঠানগুলো নেতৃত্ব দিচ্ছে। অন্যদিকে বেশি মূল্যের স্মার্টওয়াচের বাজারে শীর্ষস্থানে রয়েছে অ্যাপল, হুয়াওয়ে ও স্যামসাং।
আইডিসির ওয়্যারেবল দলের গবেষণা পরিচালক র্যামন টি লামাস বলেন, এক বছরের হিসাবে ওয়্যারেবলের সামগ্রিক বাজার কমলেও স্মার্টওয়াচের বাজার ৪ দশমিক ৩ শতাংশ বেড়েছে। স্মার্টওয়াচ বেশ জনপ্রিয় হলেও কিডস ওয়াচ, এক্সারসাইজ ওয়াচ, হাইব্রিড ওয়াচসহ অন্যান্য ক্যাটাগরির ডিভাইস বিক্রি ও বাজার বাড়াতে সাহায্য করেছে।
তিনি বলেন, স্মার্টওয়াচ যে ধীরে ধীরে ভোক্তাদের আগ্রহ হারাচ্ছে, সেটি বলার অপেক্ষা রাখে না। অ্যাপলের ওয়াচ সিরিজ ৭ ও ওয়্যার অপারেটিং সিস্টেম দেরিতে উন্মুক্ত করা হলেও অন্য ব্যান্ডের তুলনায় এটি ব্যবহারকারীদের মধ্যে নতুন করে আগ্রহ তৈরি করবে।
বছরের তৃতীয় প্রান্তিকে স্মার্টওয়াচ বিক্রি ৩৫ দশমিক ৩ শতাংশ পতন হলেও শীর্ষস্থানে ছিল অ্যাপল। এয়ারপড ও বিটস প্রতিষ্ঠানটিকে ওয়্যারেবলের বাজারে শীর্ষস্থান ধরে রাখতে সাহায্য করেছে। গ্যালাক্সি ওয়াচ ৪ সিরিজ উন্মুক্তের মাধ্যমে স্যামসাং বাজারে ভালো প্রভাব বিস্তার করতে পেরেছে। স্মার্টওয়াচের অপারেটিং সিস্টেম হিসেবে টাইজেন থেকে বেরিয়ে এসে গুগলের ওয়্যার ওএস ব্যবহারের মাধ্যমে যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত নিয়েছে এ প্রযুক্তি জায়ান্ট।
স্মার্টওয়াচে আগ্রহী হওয়ার কারণে তৃতীয় প্রান্তিকে শাওমির ওয়্যারেবল ডিভাইস বিক্রি ২৩ দশমিক ৮ শতাংশ হ্রাস পায়। এ পরিপ্রেক্ষিতে প্রতিষ্ঠানটি বর্তমানে চীনের বাজার থেকে বিশ্ববাজারে স্মার্টওয়াচ বাজারজাতে কাজ করছে। স্মার্টফোনের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক বাজারে ভালো অবস্থান তৈরি করতে পারায় এ উদ্যোগ নিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।