চলতি বছর স্থানীয় বাজারে এয়ার কন্ডিশনার বা এসি বিক্রিতে রেকর্ড সৃষ্টি করে চলেছে দেশের ইলেকট্রনিক্স জায়ান্ট ওয়ালটন। গত বছর সারা দেশে যে পরিমান এসি বিক্রি হয়েছিল তাদের, তা চলতি বছরের প্রথম চার মাসেই অর্থাৎ জানুয়ারি থেকে এপ্রিল মাসের মধ্যেই বিক্রি হয়ে গেছে। যা কিনা গত বছরের প্রথম চার মাসের তুলনায় প্রায় ১৫০ শতাংশ বেশি। এদিকে গ্রীষ্মের প্রখরতার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে দেশের শীর্ষস্থানীয় ইলেকট্রনিক্স ব্র্যান্ডটির এসি বিক্রয়।
ওয়ালটন কর্তৃপক্ষের মতে, এসি বিক্রয় বৃদ্ধিতে এই অভাবনীয় সাফল্য অর্জনের ক্ষেত্রে বেশ কিছু বিষয় বিশেষ অবদান রাখছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে- বাজারে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ও ফিচারসমৃদ্ধ এসি নিয়ে আসা, ইনভার্টার এসির কম্প্রেসরে ১০ বছরের গ্যারান্টি ঘোষণা, ৬ মাসের রিপ্লেসমেন্ট গ্যারান্টি সুবিধা, একচেঞ্জ অফারে যে কোনো ব্র্যান্ডের এসি বদলে ওয়ালটনের নতুন এসি ক্রয়ের সুযোগ এবং ডিজিটাল ক্যাম্পেইনের আওতায় ১ বছরের বিদ্যুৎ বিল ফ্রি অথবা সর্বোচ্চ এক লাখ টাকার ক্যাশ ভাউচার বা বিভিন্ন পণ্য ফ্রি পাওয়ার সুযোগ।
সূত্রমতে, এসি এক্সচেঞ্জ অফারের আওতায় গত ৭ ফেব্রয়ারি থেকে গ্রাহকরা যেকোনো ব্র্যান্ডের পুরনো এসি জমা দিয়ে ওয়ালটনের যেকোনো মডেলের নতুন এসি কিনতে পারছেন। দেশের যে কোনো প্লাজা বা পরিবেশক শোরুমে পুরাতন এসি জমা দিলে গ্রাহক তার পছন্দকৃত ওয়ালটনের নতুন এসির মূল্য থেকে ২৫ শতাংশ ছাড় পাবেন।
এই সুবিধার পাশাপাশি ডিজিটাল ক্যাম্পেইন সিজন ফোরের আওতায় ওয়ালটন এসি কিনে রেজিস্ট্রেশন করলেই গ্রাহকরা পেতে পারেন পুরো এক বছরের বিদ্যুৎ বিল ফ্রি অথবা সর্বোচ্চ এক লাখ টাকার ক্যাশ ভাউচার। রয়েছে মোটরসাইকেল, ল্যাপটপ, ফ্রিজ, টিভিসহ অসংখ্য হোম ও ইলেকট্রিক্যাল অ্যাপ্লায়েন্সেস ফ্রি পাওয়ার সুযোগ।
এদিকে ওয়ালটন এসি কিনে গ্রাহক তার মোবাইল ফোনে এসির কলার টিউন সেট করলে এবং ক্রয়কৃত এসি ইনস্টল করার পর ছবি তুলে ফেসবুকে আপলোড করলেই মিলছে ১ হাজার টাকা ইনস্ট্যান্ট ক্যাশব্যাক।
ওয়ালটন এসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো: তানভীর রহমান জানান, এ বছর বাজারে লেটেস্ট প্রযুক্তির এসি নিয়ে আসার পাশাপাশি গ্রাহকবান্ধব অসংখ্য সুবিধা ঘোষণা দেয়ায় এসি বিক্রি হচ্ছে আশাতীত। এরই মধ্যে, ২০১৮ সালে সারা বছর যে পরিমান এসি বিক্রি হয়েছিল ওয়ালটনের, তা এই বছরের প্রথম চার মাসেই বিক্রি হয়েছে। এদিকে গত বছরের প্রথম চার মাসের এসি বিক্রির বিপরীতে এ বছরের একই সময়ে ওয়ালটনের এসি বিক্রিতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে প্রায় ১৫০ শতাংশ। এখন চলছে এসি বিক্রির প্রধান মৌসুম ‘গ্রীষ্মকাল’। তাই, গরমের তীব্রতার সঙ্গে এসির বিক্রিও আরো বাড়ছে।
জানা গেছে, এ বছর ১, ১.৫ ও ২ টনের অসংখ্য মডেলের স্পিট এসি বাজারে ছেড়েছে ওয়ালটন। ভেনচুরি ও রিভারাইন সিরিজের ১.৫ ও ২ টনের এসিতে এনার্জি সেভিং ইনভার্টার, আয়োনাইজার ও আইওটি স্মার্ট প্রযুক্তির নতুন মডেল যুক্ত হয়েছে। এর মধ্যে ২ টনের আইওটি বেজড ইনভার্টার স্মার্ট এসির দাম ৭৬ হাজার ৪’শ টাকা, শুধু ইনভার্টার এসির দাম ৭৪ হাজার ৯’শ টাকা ও আয়োনাইজার প্রযুক্তির এসির দাম ৫৬ হাজার ৯’শ টাকা ধরা হয়েছে।
এদিকে ১.৫ টনের ইনভার্টার স্মার্ট এসি ৬৫ হাজার টাকায়, শুধু ইনভার্টার এসি ৬৩ হাজার ৫’শ টাকা এবং আয়োনাইজার এসি ৪৯ হাজার ৯’শ টাকায় কেনা যাচ্ছে। এছাড়া ওয়ালটনের ১ টন এসি কেনা যাচ্ছে ৩৫ হাজার ৫’শ টাকায়।
ওয়ালটন এসির চীফ অপারেটিং অফিসার প্রকৌশলী ইসহাক রনি জানান, গ্রাহকের হাতে সর্বাধুনিক প্রযুক্তির পণ্য তুলে দিতে এসিতে ব্যাপক বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী ইনভার্টার, আয়োনাইজার, টার্বো কুলিং মুড, গোল্ডেন ফিনের মতো বিশ্বের লেটেস্ট প্রযুক্তি যুক্ত করেছেন তারা। ইনভার্টার কম্প্রেসরের টার্বো কুলিং মুড রুমের তাপমাত্রা দ্রæত কমিয়ে এনে রুমকে তাড়াতাড়ি ঠান্ডা করে।
তিনি বলেন, ইনভার্টার প্রযুক্তিতে পিসিবি বা মাদারবোর্ডের মাধ্যমে রুমের তাপমাত্রা অনুযায়ী কম্প্রেসরের গতি নিয়ন্ত্রিত হয়। অর্থাৎ, রুমের তাপমাত্রা কমার পাশাপাশি কম্পেসরের গতিও কমে আসে। কম্প্রেসরের এ্যাকুইরেসি এবং কুলিং সিস্টেম-এ নিশ্চিত করেছে সর্বোচ্চ পারফেকশন। কম্প্রেসরে বিল্ট-ইন অটোমেটিক ভোল্টেজ প্রোটেকশন সিস্টেম থাকায় বিদ্যুৎ প্রবাহের বিচ্যুতি বা তারতম্যেও ওয়ালটন এসির কম্প্রেসারের তেমন কোনো ক্ষতি হবে না। এসির কনডেনসারে মরিচারোধক গোল্ডেন কালার ফিন ব্যবহার করা হচ্ছে। কম্প্রেসরে বিশ্ব স্বীকৃত সম্পূর্ণ পরিবেশবান্ধব আর৪১০এ রেফ্রিজারেন্ট ব্যবহার করছে ওয়ালটন। এসব কারনে ওয়ালটনের ইনভার্টার এসিতে বিদ্যুৎ সাশ্রয় হয় ৬০ শতাংশ পর্যন্ত। কম্প্রেসরের স্থায়ীত্বও বেড়েছে অনেক।
এসিতে প্রতিদিন বা মাসিক বিল আসছে কত? ভোল্টেজ লো না হাই? কম্প্রেসর কি ওভারলোডে চলছে? ওয়ালটনের স্মার্ট এসিতে মিলবে এসবের উত্তর।
স্মার্ট প্রযুক্তি ছাড়াও ওয়ালটন এসিতে সংযোজন করা হয়েছে আয়োনাইজার প্রযুক্তি। যা রুমকে ঠান্ডা করার পাশাপাশি রুমের বাতাসকে ধূলা-ময়লা ও ব্যাকটেরিয়ামুক্ত করবে।
ওয়ালটনের প্রতিটি এসি আন্তর্জাতিকমানের টেস্টিং ল্যাব নাসদাত-ইউটিএস থেকে মান নিয়ন্ত্রণ সনদ পাওয়ার পরে বাজারজাতকরা হয়।
উল্লেখ্য, গ্রাহক পর্যায়ে দ্রত ও সর্বোত্তম বিক্রয়োত্তর সেবা পৌঁছে দিতে ওয়ালটনের রয়েছে আইএসও সনদপ্রাপ্ত সার্ভিস ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম। এর আওতায় সারা দেশে রয়েছে ৭০টিরও বেশি সার্ভিস সেন্টার। সেখানে নিয়োজিত রয়েছেন আড়াই হাজারের বেশি প্রকৌশলী ও টেকনিশিয়ান।