প্রশ্ন ফাঁসের জন্য ফেসবুক দায়ী নয়। বরং ফাঁস হওয়া প্রশ্নপত্র ফেসবুকে ছড়িয়ে দেওয়া হয়। ফেসবুক বন্ধ করে প্রশ্ন ফাঁস রোধ করা যাবেনা। কারণ রাষ্ট্রীয়ভাবে ফেসবুক বন্ধ করলেও এখন এমন প্রযুক্তি আছে, যার মাধ্যমে ফেসবুক ব্যবহার করা সম্ভব।
আজ বুধবার সকালে রাজধানীর এ্যালিফেন্ট রোডস্থ কম্পিউটার সিটি সেন্টারে ডিজিটাল আইসিটি ফেয়ার-২০১৮ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার এসব কথা বলেন।
কম্পিউটার সিটি সেন্টার দোকান মালিক সমিতি এ মেলার আয়োজন করে। প্রধান অতিথি এ সময় বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশের লক্ষ্যই হচ্ছে স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতামূলক সরকার, দুর্নীতিমুক্ত প্রশাসন, দ্রুত সেবা, কম খরচ, যুগোপযুগী মাধ্যম এবং টেকসই অর্থনীতি। তাই ডিজিটাল সরকার হিসেবে বাংলাদেশ একটি বিশ্বনন্দিত রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে।
বর্তমান সরকারের প্রযুক্তিবান্ধব বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরে মন্ত্রী বলেন, বর্তমান সরকার পরিচালনার ক্ষেত্রে সকল কার্যক্রমে ডিজিটার পদ্ধতির ব্যবহার বহুলাংশে বৃদ্ধি পেয়েছে। উন্নয়নের প্রতিটি স্তরে ডিজিটাল টুলস ব্যবহার করে দেশ থেকে দারিদ্র্য ও ও বৈষম্য দূর করে বাংলাদেশকে জনগণের রাষ্ট্রে পরিণত করা হয়েছে।
শিক্ষাক্ষেত্রে ডিজিটাল পদ্ধতির প্রচলন বেড়েছে এমন দাবি করে মন্ত্রী বলেন, ছাত্র ছাত্রীরা সকল ধরনের পাঠ্যপুস্তক ইন্টারনেটের মাধ্যমে পড়ার সুযোগ পাচ্ছে। সারাদেশে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে সরকারিভাবে কম্পিউটার ল্যাব স্থাপনসহ ইন্টারনেট সংযোগ বিস্তৃত করা হয়েছে। দেশের সব জায়গায় নেটওয়ার্ক স্থাপনের জন্য বাংলাদেশ ই গর্ভনেন্স নামে একটি প্রকল্প চালু করা হয়েছে।
মন্ত্রী এ সময় মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ভর্তির নিবন্ধন করা, পরীক্ষার ফলাফল সংগ্রহ করা সহ পাঠভিত্তিক বিভিন্ন আপস ব্যবহারের সুবিধার কথা উল্লেখ করেন।
ইতোমধ্যে সরকার প্রযুক্তি কী কী অবদান রেখেছে এমন প্রসঙ্গ বলতে গিয়ে মন্ত্রী বলেন, মন্ত্রণালয়ে ই সেবা চালু, থ্রি জি প্রযুক্তির মোবাইল পরিসেবা, জাতীয় ই তথ্যকোষ, প্রতিটি জেলায় হাইটেক পার্ক স্থাপন, অনলাইনে জন্মমৃত্যুর নিবন্ধন, অনলাইনে ভিসা প্রসেসিং ও যাচাই, জাতীয় ডেটা সেন্টার, ডট বাংলা ডোমেইন চালু উদ্যোগ, ইন্টারনেট ব্যান্ডউইথ ক্যাপাসিটি ৬ দশমিক ৫ গুণ বৃদ্ধির কার্যক্রম গ্রহণ, মোবাইল ব্যাংকিং, জাতীয় ওয়েব পোর্টাল, জেলা উপজেলা ওয়েব পোর্টাল, জেলা ই সেবা কেন্দ্র, ইউনিয়ন তথ্য ও সেবা কেন্দ্র, অনলাইন জিডি ফাইলিং, বাংলাদেশ গর্ভমেন্টের সকল ফরম অনলাইনে সংস্করণ, কৃষি তথ্য সার্ভিস, পাসপোর্ট পরিসেবা, পরিসেবার বিল পরিশোধ, ইলেকট্রিক দরপত্র পদ্ধতি, বাংলাদেশ ডাকবিভাগের ই সেবা অন্যতম।
সরকারের বিভিন্ন ডিজিটাল সেবাখাতের কথা উল্লেখ করতে গিয়ে মন্ত্রী আরো বলেন, বর্তমানে দেশে ডিজিটাল ভূমি ব্যবস্থাপনা, এসএমএসের মাধ্যমে বিদ্যুৎ- গ্যাস-ফোন বিল পরিশোধ, এসএমএসের মাধ্যমে রেলওয়ে যাত্রীদের তথ্যসেবা প্রদান, মুক্তিযোদ্ধাদের তথ্যসমৃদ্ধ ডাটাবেস, ইউনিয়ন পরিষদ ভিত্তিক তথ্যকেন্দ্র, কৃষি তথ্যকেন্দ্র, মৎস্য ও পশুচাষ তথ্যকেন্দ্র, মোবাইল ফোনের মাধ্যমে দুর্যোগ পূর্বাভাস সম্প্রচার সহ বিভিন্ন ডিজিটাল সেবা চালু রয়েছে।
মন্ত্রী এ সময় ডিজিটাল বাংলাদেশ : ভিশন ২০২১ এর লক্ষ্য অর্জনে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি খাতকে শক্তিশালী করার জন্য সবার সহযোগিতা কামনা করেন। উল্লেখ্য কম্পিউটার সিটি সেন্টার নবম বারের মতো এ মেলার আয়োজন করেছে। মেলার প্রদর্শনী চলছে কম্পিউটার সিটি সেন্টারের ৩য় থেকে দশম তলা পর্যন্ত।
আজকে থেকে শুরু হয়ে মেলাটি চলবে ১১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। প্রতিদিন সকাল দশটা থেকে রাত নটা পর্যন্ত যে কেউ মেলায় দর্শনার্থী বা ক্রেতা হয়ে আসতে পারেন।