প্রায় বারো বছরের সুখী দাম্পত্য জীবন। স্বামী, স্ত্রী, সন্তানদের নিয়ে সংসার ভালই চলছিল। বাধ সাধল একটি স্মার্টফোন। গত বৃহস্পতিবার গুরুগ্রামে খুন হন লক্ষ্মী নামে বছর পয়ত্রিশের এক গৃহবধূ। স্ত্রীকে খুন করার অভিযোগে তাঁর স্বামীকেই গ্রেপ্তার করে পুলিশ। হরিওম নামে ওই ব্যক্তি স্বীকার করে নেন, ঘুমের মধ্যে তিনি গলায় ফাঁস দিয়ে তাঁর স্ত্রীকে হত্যা করেছেন। একটি সর্বভারতীয় ইংরেজি দৈনিকের প্রতিবেদনে এমনই দাবি করা হয়েছে।
কিন্তু কেন এমন কাণ্ড ঘটালেন হরিওম? ওই ব্যক্তি পুলিশকে জানিয়েছেন, সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁর স্ত্রী এতটাই আসক্ত ছিলেন যে বিরক্ত হয়ে উঠেছিলেন তিনি। হরিওমের দাবি, তাঁকে তো বটেই, এমনকী নিজের সন্তান, সংসারের কথা ভুলে সারাক্ষণ ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপে মগ্ন হয়ে থাকতেন তাঁর স্ত্রী। একটানা চ্যাট করে যেতেন নিজের ফোনে। সংসার, সন্তান এবং তাঁর প্রতি স্ত্রীর এমন উদাসীনতা সহ্য করতে না পেরেই শেষ পর্যন্ত চরম সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেন হরিওম।
জিজ্ঞাসাবাদে হরিওম তদন্তকারীদের জানিয়েছেন, বিয়ের পরে প্রথম নয় বছর সবকিছু ভালই চলছিল। তার পরেই আমি লক্ষ্মীকে একটি স্মার্টফোন কিনে দিই। এর পরই শেষ দুই বছরে আমার স্ত্রী সম্পূর্ণ বদলে যায়। এক এক সময় এমন মনে হত, সন্তান বা আমার কোনও অস্তিত্বই যেন ওর কাছে নেই। আমার স্ত্রী রান্নাবান্না করা বন্ধ করে দিয়েছিল। সন্তানদের স্কুলে পর্যন্ত পৌঁছে দিত না, হোমওয়ার্কও করাতও না। রাত দিন ফেসবুক আর হোয়াটসঅ্যাপেই মেতে থাকত ও।
ওই ব্যক্তি আরও জানান, প্রথমে তিনি ভেবেছিলেন কয়েকদিন বাদে হয়তো ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপে একঘেঁয়ে লাগতে শুরু করবে তাঁর স্ত্রীর। কিন্তু উল্টে সোশ্যাল মিডিয়ার প্রতি স্ত্রীর আসক্তি বেড়ে যায়। তিনি জানান, লক্ষ্মী সন্তানদের প্রতি এতটাই উদাসীন হয়ে পড়েছিলেন যে আট বছরের মেয়ে এবং দশ বছরের ছেলেকে কুরুক্ষেত্রের একটি বোর্ডিং স্কুলে ভর্তি করিয়ে দেন তিনি। সন্তানদের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি হলেও কোনও হেলদোল হয়নি হরিওমের স্ত্রীর। এর পরেই চরম হতাশা এবং রাগে স্ত্রীকে খুন করার সিদ্ধান্ত নেন তিনি।