বাংলাদেশের পূর্বাঞ্চলে ঘটে যাওয়া ভয়াবহ বন্যার কারণে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়েছে। ভারি বর্ষণ ও উজান থেকে ধেয়ে আসা পানিতে ৭৭টি উপজেলা তলিয়ে যায়, ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৫.২ মিলিয়নেরও বেশি মানুষ। ঘরছাড়া হয় প্রচুর মানুষ।
বাড়িঘর ও নিজের সহায় সম্বল সব হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছে অসংখ্য কমিউনিটি ও বাসিন্দা। এমন পরিস্থিতিতে আশার আলোর উদয় হয়; সামনে আসতে থাকে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের মন জয় করার মতো কিছু উদ্যোগের গল্প।
বন্যার্তদের সাহায্য করতে অনেক সংস্থা, এনজিও এবং স্বেচ্ছাসেবীরা এগিয়ে আসে। সেসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে অন্যতম ছিল আই স্মার্ট ইউ টেকনোলজি বিডি লিমিটেড। তবে তাদের সাহায্য প্রদানের পদ্ধতি ছিল অন্যদের থেকে আলাদা।
আই স্মার্ট ইউ নিজেদের চেষ্টা শুধুমাত্র প্রতিষ্ঠানের অনুদানের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখেনি; বরং তারা প্রতিষ্ঠান হিসেবে একটি ভিন্নধর্মী কৌশল অবলম্বন করে। এই প্রতিষ্ঠানের সকল স্তরের কর্মী থকে শুরু করে ডিস্ট্রিবিউশন পার্টনার সহ সবাই এই ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করেন। এছাড়া, সকল কর্মী তাদের একদিনের বেতন অনুদান হিসেবে প্রদান করেন।
এমনকি এই ব্র্যান্ডের অন্যান্য অঙ্গপ্রতিষ্ঠান, যেমন – টেকনো, আইটেল এবং ইনফিনিক্স এর মতো মোবাইল ব্র্যান্ডগুলোও এই প্রচেষ্টায় আর্থিকভাবে অবদান রেখেছে। এই সম্মিলিত প্রচেষ্টা সমাদৃত হয়েছে। অনেকগুলো ব্র্যান্ডের সম্মিলিত উদ্যোগ কীভাবে ইতিবাচক পরিবর্তন ত্বরান্বিত করে তার এক জ্বলন্ত উদাহরণ হয়ে থাকবে এই পদক্ষেপ।
বন্যা দুর্গতদের মধ্যে যাদের সাহায্য সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন তাদের কাছে পৌঁছানো একটি বড় চ্যালেঞ্জ ছিল। আই স্মার্ট ইউ সেসব মানুষের কাছে পৌঁছানোর জন্য এর স্থানীয় কর্মী ও বাসিন্দাদের সাহায্য নেয়। উদাহরণস্বরূপ, আব্দুল মতিন খসরু সরকারী কলেজের একজন শিক্ষক।
তার সহায়তায় আই স্মার্ট ইউ বেশি ক্ষতিগ্রস্ত এবং এখনও ত্রাণ পৌঁছায়নি এমন এলাকা চিহ্নিত করে। পরে স্থানীয়দের তথ্যের ভিত্তিতে প্রত্যন্ত অঞ্চলের বন্যার্তদের কাছে ত্রাণ নিয়ে পৌঁছে যায় এই প্রতিষ্ঠানের স্বেচ্ছাসেবক দল।
প্রত্যন্ত এবং দুর্গম এলাকায় খাদ্যপণ্য, ওষুধ, বিশুদ্ধ পানি এবং পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেটের মতো প্রয়োজনীয় ত্রাণসামগ্রী পৌঁছানোর লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠানটি জরুরি পরিবহনের ব্যবস্থা করে। এমনকি যেসব এলাকায় পানির স্তরের উচ্চতা বেশি ছিল সেখানে যাওয়ার জন্য নৌকা ব্যবহার করা হয়।
এভাবেই আই স্মার্ট ইউ কুমিল্লা, ফেনী এবং লক্ষ্মীপুর সহ সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ অঞ্চলে পৌঁছে যায়। সময়োপযোগী পরিকল্পনা এবং কঠোর সংকল্পের কারণে সকল প্রতিবন্ধকতা কাটিয়ে ক্ষতিগ্রস্তদের কাছে পৌঁছানো সম্ভব হয়।
আই স্মার্ট ইউ ব্র্যান্ডের বন্যাকালীন সময়ের এই উদ্যোগ (ত্রাণ বিতরণ) অন্যান্য ব্র্যান্ডের জন্য একটি দুর্দান্ত উদাহরণ। দুর্যোগের সময় কীভাবে মানুষের পাশে দাঁড়াতে হয় এর উত্তম উদাহরণ হয়ে থাকবে এই প্রচেষ্টার গল্প।
প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের সম্পৃক্ত করে এবং স্থানীয় জনবলের সাহায্যে আই স্মার্ট ইউ সত্যিকারের ভুক্তভোগীদের খুঁজে বের করেছে এবং তাদের কাছে ত্রান নিয়ে পৌঁছে গেছে। সঠিক পরিকল্পনা ও সদিচ্ছা না থাকলে এমনটা করা সম্ভব হতো না। এমন একটি নজির স্থাপন করে আই স্মার্ট ইউ কর্পোরেট সামাজিক দায়বদ্ধতা (সিএসআর) বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে নতুন মাত্রা যোগ করেছে।