৩৫ বছরের স্মৃতিকে সংরক্ষণ করার জন্য বর্তমান ইসি কমিটিকে ধন্যবাদ জানাই। অন্তত নতুন সদস্যদের আমাদের গৌরবাজ্জ্বল ইতিহাস জানা উচিৎ। এই ৩৫ বছর বিসিএস এর অর্জনের। বাংলাদেশের মানুষকে কম্পিউটার চেনানোর একক দাবিদার বিসিএস।
বাংলাদেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাতে বিসিএস পথিকৃৎ এর ভূমিকা পালন করে এসেছে। এই খাতে বিসিএস এর ভূমিকা অসাধারণ। যারা পথ দেখায় তাদের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হয়। বিসিএস এর ব্যর্থতার কোন ইতিহাস নেই। নব নির্বাচিত কার্যনির্বাহী কমিটি এই ধারা অব্যাহত রাখবে বলেই আমার বিশ্বাস।
২৩ মার্চ সন্ধ্যায় বিসিএস ইনোভেশন সেন্টারে বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতির ৩৫ বছর পদার্পনে প্রকাশিত স্মরণিকা গ্রন্থের উন্মোচন ও ওয়েব সাইটের নতুন ভার্সন উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার।
তিনি বলেন, ৯৬ সালে মাত্র ১৮ জন সদস্য নিয়ে বিসিএস কম্পিউটারের উপর শুল্ক এবং ভ্যাট প্রত্যাহার করতে পেরেছিল। বাণিজ্যিক সংগঠনগুলোর মধ্যে এত কম সদস্য নিয়ে জাতীয় দাবি পূরণ করার কৃতিত্ব অন্য কোন সংগঠনের নেই। শুধু শুল্ক আর ভ্যাট প্রত্যাহার করতে পেরেছিল তা নয়, সেসময়ের সিদ্ধান্ত ২০২৩ পর্যন্ত বলবৎ থাকবে সরকারের কাছে এমন ঘোষণাও আদায় করে নিয়েছিল বিসিএস। ২০০৮ সালের বই মেলায় বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতির স্লোগান ছিল, একুশের স্বপ্ন, ডিজিটাল বাংলাদেশ।
মন্ত্রী বলেন, বিসিএস এর গঠনতন্ত্রে এটা বলা নেই যে শুধু কম্পিউটার ব্যবসায়ীরা এই সংগঠনের সদস্য হতে পারবে। যত রকমের কম্পিউটার পেশাজীবি আছেন সবাই এই সংগঠনের সদস্য হতে পারবেন। বেসিস, আইএসপিএবির যাত্রাও শুরু হয় বিসিএস এর হাত ধরে। তথ্যপ্রযুক্তি খাতের বাণিজ্য সংগঠনগুলোর বড় ভাই হচ্ছে বিসিএস এমন দাবি করলেও ভুল হবে না।
মোস্তাফা জব্বার বলেন, বিসিএস এ যদি আমি না আসতাম তাহলে আমি হয়তো একজন কম্পিউটার ব্যবসায়ী হতাম কিন্তু আজকের এই স্থানে আসতে পারতাম না। কৃতজ্ঞচিত্তে আমি বিসিএস এর প্রতি ধন্যবাদ জ্ঞাপন করি। ৩৫ বছরের এই পথচলা অবিরত থাকুক। তথ্যপ্রযুক্তিতে বিসিএস দক্ষ নেতৃত্বে নিজেদের কৃতিত্বের স্বাক্ষর রেখে যাবে বলেই আমি আশাবাদী।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিসিএস সহসভাপতি ও ৩৫ বছর উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক মো. জাবেদুর রহমান শাহীন। তিনি বলেন, বিসিএস এর ৩৫ বছর উদযাপনকে স্মরণীয় করে নিতে আমরা আপ্রাণ চেষ্টা করেছি। বিসিএস এর গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস এবং প্রযুক্তি খাতে এই সংগঠনের ভূমিকাকে সবার মাঝে তুলে ধরার চেষ্টা ছিল আমাদের। ‘৩৫ বছর উদযাপন’ স্মরণিকাতে আমরা মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, সরকারের উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা এবং প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞদের ফিচার যুক্ত করেছি। আশা করছি এই স্মরণিকা প্রযুক্তি খাতে উল্লেখযোগ্য স্মৃতিস্মারক হিসেবে বিবেচিত হবে।
বিসিএস এর ওয়েব সাইটের নতুন ভার্সনের ভূমিকা উল্লেখ করে বিসিএস সভাপতি মো. শাহিদ-উল-মুনীর বলেন, আমরা বিসিএসকে প্রযুক্তি বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছি। কাগজবিহীন সংস্কৃতি অনুশীলনের মাধ্যমে সদস্যরা নিজেরাই এখন নিজেদের সনদ সংরক্ষণ করতে পারবেন। এছাড়াও নতুন সদস্য ফর্ম পূরণ, সদস্যদের হালনাগাদ অবস্থা জানা, অনলাইনে সদস্য ফি প্রদান, ওয়েবসাইটে সদস্যদের জন্য নিজেদের সাইটকে সজ্জিতকরণ, নিজের ওয়েবসাইটের সঙ্গে সমিতির ওয়েবসাইটের সংযোগ ঘটানো সহ নানাবিধ সুবিধাসহ নতুন ভার্সন সমৃদ্ধ হচ্ছে। বিসিএস আইসিটি শিল্পে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
গত বছর আমরা ডব্লিউসিআইটি ২০২১ এবং অ্যাসোসিও ডিজিটাল সামিট সম্পন্ন করেছি। ৩৫ বছর অতিবাহিত হওয়ার পরে বিসিএস এর সুনাম দেশ ছাড়িয়ে সারা বিশ্বে। আপনারা সকলে বিসিএস এর এই কৃতিত্বের দাবিদার।
অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন বিসিএস এর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি এস এম কামাল এবং বিসিএস মহাসচিব মুহাম্মদ মনিরুল ইসলাম। বিসিএস এর যুগ্ম মহাসচিব মো. মুজাহিদ আল বেরুনী সুজনের উপস্থাপনায় অনুষ্ঠানে বিসিএস এর ভিশনারি লিডার, কার্যনির্বাহী কমিটি ও ৩৫ বছর উদযাপন অনুষ্ঠানের স্পন্সরদের মধ্যে ক্রেস্ট প্রদান করেন ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার।
‘বিসিএস এর ৩৫ বছর উদযাপন’ স্মরণিকার মোড়ক উন্মোচন করেন মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার। এসময় বিসিএস সভাপতি, মহাসচিব, জ্যেষ্ঠ সদস্য এবং সরকারি বেসরকারি কর্মকর্তা ও বিসিএস সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।