গত বছরের নীল তিমি আতঙ্কের স্মৃতি এখন খানিক ফিকে। কিন্তু ফিকে হলেও অভিভাবকদের অবচেতনে স্থায়ী স্মৃতি রেখে গিয়েছে সেই মারণ খেলা। আদরের সন্তান কখন অগোচরে ইন্টারনেটের কবলে পড়ে বিরাট বিপদের সম্মুখীন হবে, এই দুশ্চিন্তা তাড়া করে ফেরে তাঁদের। এরই মধ্যে বেশ কয়েকটি খেলার কথা শোনা গিয়েছে। সেই খেলাগুলি ব্লু হোয়েল চ্যালেঞ্জ-এর মতো অতটা বিপজ্জনক না হলেও সমূহ ক্ষতি ডেকে আনার ক্ষমতা তাদেরও আছে। ‘ব্লু হোয়েল’ গেমের আতঙ্ক শেষ হতে না হতেই নতুন এক মরণখেলা ইন্টারনেটে ছাড়া হয়েছে যার নাম ‘ডিওডোরেন্ট চ্যালেঞ্জ’।
ব্লু হোয়েল দুনিয়াজুড়ে ঝড় তুলেছিল। আতঙ্কে পড়ে গিয়েছিলেন অভিভাবকরা। পুলিশ হন্যে হয়ে খুঁজছিল ডার্ক ওয়েবে এই গেম ছড়ানোর মাস্টারমাইন্ডদের। শেষ পর্যন্ত ব্লু হোয়েলকে মানুষের দেহ থেকে সমুদ্রে পাঠানো সম্ভব হয়েছিল। সেই মারাত্মক স্মৃতি মুছে যেতে না যেতেই এই মরণখেলা ছড়ানো হচ্ছে ইন্টারনেটে।
সম্প্রতি মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে এই মারণ খেলা। সপ্তাহখানেক আগে জেমি প্রেসকট নামের এক গৃহবধূ ফেসবুকে একটি পোস্ট করেন। ইংল্যান্ডের ব্রিস্টলের বাসিন্দা জেমি সেই পোস্টে তাঁর অসহায়তা ও তীব্র ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন। পোস্টের সঙ্গে জুড়ে দিয়েছেন তাঁর দশ বছরের মেয়ের বাহুর ছবি। সেই বাহুতে গভীর ক্ষত। জেমি জানিয়েছেন, এই ক্ষত সৃষ্টি হয়েছে এক বিপজ্জনক খেলা খেলতে গিয়ে। যার নাম ‘ডিওডোরেন্ট চ্যালেঞ্জ’। তিনি সব অভিভাবকদের সতর্ক করেছেন এই বিপদ থেকে। পোস্টটি প্রায় ৫ হাজার শেয়ার হয়ে গিয়েছে এরই মধ্যে।
কী এই ‘ডিওডোরেন্ট চ্যালেঞ্জ’? ডিওডোরেন্ট চ্যালেঞ্জটি হলো লম্বা সময় ধরে ত্বকের ওপর ডিওডোরেন্ট স্প্রে করা। চ্যালেঞ্জে অংশ নেয়া তরুণরা কে কত লম্বা সময় ধরে নিজের ত্বকে ডিওডোরেন্ট স্প্রে করতে পারে তার প্রতিযোগিতায় নামে। কিন্তু দীর্ঘ সময় ধরে টানা স্প্রে করার ফলে ত্বকে সৃষ্টি হয় ভয়ানক ক্ষত। এমন ক্ষত, যার নিরাময়ের জন্য ত্বক পরিবর্তন করে নতুন ত্বক সংযোজন করতে হয়েছে অনেকের ক্ষেত্রে।
বেশির ভাগ মানুষই এই বিপদ সম্পর্কে জানে না। আপাতত এশিয়ায় এই খেলা ছড়িয়ে পড়ার কোনো খবর এখন পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। কিন্তু যদি অঙ্কুরেই একে বিনষ্ট না করা যায়, তাহলে অদূর ভবিষ্যতে সে সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।