যাত্রা শুরুর মাত্র ছয় বছরের মধ্যেই দেশে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছে মোবাইল ব্যাংকিং সেবা। গত পাঁচ বছরে গড়ে প্রতি বছর ব্যাংকিং অ্যাপ ব্যবহার বেড়েছে ৩৪ লাখ। ফাইন্যান্স সেবাদানকারী গবেষণা প্রতিষ্ঠান সিএসিআইয়ের রিপোর্ট অনুযায়ী, গত বছর বিশ্বজুড়ে ২ কোটি ২০ লাখ ব্যবহারকারী ফোনে ব্যাংকিং অ্যাপ ইন্সটল করে লেনদেন ও সঞ্চয়ের কাজ সেরেছেন। দ্রুত, সহজ ও নিরাপদ হওয়াই এই সেবার জনপ্রিয়তার কারণ।
এদিকে, অ্যাপের কারণে ব্যবহারকারীরা অনলাইন ব্যাংকিং ব্যবহার কমিয়ে দিচ্ছেন। আগামী বছরেই অনলাইন ব্যাংকিংয়ের চেয়ে মোবাইল ব্যাংকিং সেবা ব্যবহারের পরিমাণ বেড়ে যাবে। এভাবে চলতে থাকলে আগামী ২০২৩ সাল নাগাদ সাড়ে তিনি কোটি মানুষ অ্যাপের মাধ্যমে ফোন থেকেই ব্যাংকিং কাজ সারবেন। মোট কারেন্ট অ্যাকাউন্টধারী মানুষের যা প্রায় ৬০ শতাংশ। এখনই ব্যবহারকারীরা ব্যাংকে যান বছরে পাঁচ বার। সামনের দিনগুলোতে তার পরিমাণ মোবাইল অ্যাপের কারণে আরও কমে যাবে। বন্ধ হয়ে যাবে বেশিরভাগ ব্যাংকের বিপুল পরিমাণ শাখা। মোবাইল ব্যাংকিং বাড়ার মূল কারণ, প্রত্যন্ত অঞ্চলের ব্যবহারকারীরা মোবাইলেই যতটা সম্ভব কাজ সেরে ফেলছেন। তবে ব্যাংকে যাওয়া মানুষের সংখ্যা একদমই কমে যাবে তা নয়। মূল ব্রাঞ্চে ঋণ নেয়া ও বিনিয়োগের জন্য ব্যবহারকারীরা ঠিকই হাজির হবেন।
মোবাইল ব্যাংকিং সেবা ব্যবহার করে যেমন কোটি কোটি মানুষ উপকৃত হচ্ছে তেমনি একটি অসাধু চক্র এই সেবাটির অপব্যবহার করে সাধারণ মানুষকে প্রতারণা করার চেষ্টা করছে। কিছুক্ষেত্রে তারা সফলও হচ্ছে। তাই মোবাইল ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা মোবাইল ফিনান্সিয়াল সার্ভিস প্রতারণা রোধে গ্রাহকের সচেতনতার ওপর সবচেয়ে বেশি জোর দিয়েছেন। তাঁরা মনে করেন, গ্রাহক সচেতন হলে এসব প্রতারণা অনেকাংশে রোধ করা সম্ভব হবে।
নিরাপদ মোবাইল ব্যাংকিংয়ের জন্য কিছু পরামর্শ:
মোবাইল ব্যাংকিং কেন্দ্রিক প্রতারণার ধরন বিশ্লেষণ করে আর্থিক ক্ষতির ঝুঁকি এড়াতে ব্যাংকগুলো গ্রাহকদের বেশ কিছু পরামর্শ দিয়েছে। এগুলো হলো :
১. মোবাইল ফোনে অপরিচিত কারো কথায় নম্বর ডায়াল না করা অথবা লেনদেন না করা।
২. নিজের মোবাইল ব্যাংকিং অ্যাকাউন্টের পিন নম্বর ও কত টাকা আছে তা কাউকে না বলা।
৩. কেউ যদি টেলিফোন করে ভুলে টাকা পাঠানোর কথা বলে ফেরত চায় তাহলে অ্যাকাউন্ট ব্যালান্স চেক করা।
৪. কারো প্ররোচনা বা লটারি জেতার মিথ্যা আশায় লেনদেন না করা।
এসব বিষয়গুলো মাথায় রাখলেই নিরাপদে মোবাইল ব্যাংকিং সেবা ব্যবহার করা সম্ভব বলে মনে করে এসব সেবা প্রদানকারী সংস্থা।