প্রযুক্তির উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে রোবটের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তারও উন্নয়ন হয়েছে। খ্যাতনামা প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলো এখন শিক্ষক হিসেবে রোবট ব্যবহারকে একটি বড় অর্থনৈতিক সম্ভাবনা বলে মনে করছে। কিন্তু একজন মানব শিক্ষকের পরিবর্তে একটি রোবট কিভাবে শিক্ষার্থীদের জিজ্ঞাসা পূরণ করে, সেটাই বড় প্রশ্ন।
রোবট দিয়ে সাধারণত সূক্ষ্ম বা ঝুঁকিপূর্ণ কাজই বেশি করানো হয়। কিন্তু হিউম্যানয়েড রোবট এলিয়াস ও ওভোটরা এদিক দিয়ে একটু ব্যতিক্রম। তারা এখন বাচ্চাদের স্কুলে অঙ্ক ও ভাষা শিক্ষার ক্লাস নেয়। ক্লাস নেয়ার সময় একাধিকবার একই জিনিস আওড়াতে তাদের কোনো বিরক্তি নেই। তাই কেউ বারবার একই প্রশ্ন করলেও তাকে বিব্রত হতে হয় না। পাইলট প্রোগ্রামের অন্তর্ভুক্ত হয়ে চারটি রোবট ফিনল্যান্ডের দক্ষিণাঞ্চলের ট্যাম্পার সিটির একটি প্রাইমারি স্কুলে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। ভাষা শেখানোর মেশিনকে হিউম্যানয়েড রোবট এলিয়াসে পরিণত করে চালানো হচ্ছে ভাষা শিক্ষার ক্লাস।
এক ফুট উচ্চতার এ রোবটটি চালানো হয় মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে। রোবটটি ২৩টি ভাষা বুঝতে পারে। শুধু তা-ই নয়, বাচ্চাদের একঘেয়েমি দূর করতে সে গ্যাংনাম স্টাইলে নাচতেও পারে। এতে এমন একটি সফটওয়্যার আছে, যা শিক্ষার্থীদের প্রয়োজন বুঝতে সাহায্য করে এবং শিখতে উৎসাহ দেয়। আপাতত রোবটটি শুধু ইংরেজি, ফিনিশ ও জার্মান ভাষায় কথাবার্তা বলতে পারছে। রোবটটি মানুষের দক্ষতাগুলো চিনতে পারে এবং সেই অনুযায়ী প্রশ্ন সাজিয়ে থাকে। শিক্ষার্থীদের সম্ভাব্য সমস্যাগুলো সম্পর্কেও রোবটটি শিক্ষকদের তথ্য দিতে পারে। অঙ্কের রোবটটির নাম ওভোট। এর উচ্চতা ১০ ইঞ্চি। নীল রঙের প্যাঁচার মতো দেখতে এ রোবট তৈরি করেছে ফিনিশ এআই রোবটস। মোট তিনটি ওভোট আগামী এক বছরের জন্য স্কুলটিতে অঙ্ক শেখাবে। অনেক শিক্ষকই রোবটটিকে শিশুদের মনোযোগ ধরে রাখার একটি পদ্ধতি হিসেবে দেখছেন।
রিকা কলুনসারকা নামে এক শিক্ষিকা বলেন, এলিয়াস রোবটটি ক্লাসরুমে ভিন্ন ধরনের কার্যক্রম পরিচালনার একটি মাধ্যম। ক্লাসরুমে রোবটের ব্যবহার এবারই প্রথম নয়। মধ্যপ্রাচ্য, এশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের স্কুলগুলোয়ও সম্প্রতি রোবটের ব্যবহার দেখা যাচ্ছে। তবে মানুষের চেয়ে দক্ষতা বেশি থাকলেও ক্লাসরুমের শৃঙ্খলা রক্ষা করার বিষয়ে তারা পিছিয়ে আছে। তাই আশা করা হচ্ছে, পরীক্ষামূলকভাবে সামান্য পরিসরে রোবটের ব্যবহার শুরু হলেও শিক্ষকদের চাকরি নিরাপদই থাকবে।