সম্প্রতি সাইবার সিকিউরিটি ইস্যুতে হুয়াওয়ের ভূমিকা নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উদ্বেগ বিষয়ে হুয়াওয়ের রোটেটিং চেয়ারম্যান এরিক ঝু’কে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে হুয়াওয়ের খুব বেশি বেজ স্টেশন নেই। যা আছে তা-ও ব্যবহার করে প্রত্যন্ত অঞ্চলের কিছু ছোট অপারেটর। যেহেতু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র হুয়াওয়ের টেলিকম যন্ত্রাংশ খুব বৃহৎ আকারে ব্যবহার করে না, সুতরাং তাদের উদ্বেগও ভিত্তিহীন।’ তিনি আরো বলেন, এই মুহূর্তে সাইবার সিকিউরিটি আর কোনভাবেই টেকন্যিকাল ইস্যু নেই; বরং তা রাজনৈতিক ও আদর্শগত ইস্যুতে পরিনত হয়েছে।
হুয়াওয়ে ও চীনা সরকারের মধ্যকার সম্পর্ক নিয়ে প্রশ্ন করা হলে এরিক ঝু বলেন, ‘হুয়াওয়ে একটি চীনা বেসরকারি প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান হিসেবে চীনা সরকারের আইনের আওতায় পড়ে এবং সে অনুযায়ী তাদের মধ্যে সম্পর্ক থাকতে পারে। চীনা কর্মী মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান হিসেবে বাণিজ্যিকভাবে সফল হতে হলে অবশ্যই নিজস্ব ব্যবসায়িক নীতি মেনেই করতে হবে। আমরা কখনই কোন ব্যক্তি বা জাতীয় স্বার্থের ক্ষতি করব না। চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ইতোমধ্যে বিবৃতি প্রদান করে বলেছে যে চীনা কোন আইনে কোন প্রতিষ্ঠানের গুপ্তচরবৃত্তি করার বাধ্যবাধকতা নেই। এখন পর্যন্ত হুয়াওয়ে এরকম কোন অনুরোধও পায়নি।’
ঝু আরো বলেন, ‘আমরা এই বিষয়ে আমাদের অবস্থান পরিস্কার করতে যুক্তরাজ্য, কানাডা, জার্মানি, এবং অন্যান্য ইউরোপিয়ান অংশীদারদের সাথে কাজ করে গেছি। এত বছর পর এসে এখন অনেকেই আমাদের সেই সুনাম নষ্ট করতে চাইছে। চীনা সরকার অবশ্যই হুয়াওয়ের মুখপাত্র হয়ে কাজ করতে পারে না।’
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যকার বাণিজ্য দ্বন্দ্ব এবং হুয়াওয়ের সিএফও মেং ওয়াংঝু’র শাস্তির প্রশ্নে ঝু বলেন, ‘হুয়াওয়ে সবসময় বলে এসেছে তারা মার্কিন-চীনা বাণিজ্য দ্বন্দ্বের সমঝোতা এজেন্ডা হিসেবে ব্যবহৃত হতে চায় না। কেননা চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের তুলনায় হুয়াওয়ের আকার অনেক ছোট। অবশ্যই দুটি বৃহৎ অর্থনৈতিক শক্তির স্বার্থ একটি প্রতিষ্ঠানের জন্য ক্ষুণ্ণ হতে পারে না। এ বিষয়ে আমাদের অবস্থান খুবই পরিস্কার। হুয়াওয়ে যে দেশে ব্যবসা করছে সেই দেশের স্থানীয় আইন ও প্রবিধান মেনেই তা করছে। এমনকি জাতিসংঘ, যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের রপ্তানি নিয়ন্ত্রন আইনও মেনে চলছে। আমাদের যুক্তরাষ্ট্র এবং কানাডার আইন ব্যবস্থার উপর পূর্ণ আস্থা আছে। আমরা মনে করি দেশ দুটির আইন উন্মুক্ত এবং স্বচ্ছ এবং তারা একটি ভালো সমাধানে পৌঁছাবে।’
গবেষণা ও উন্নয়ন কার্যক্রমে হুয়াওয়ে সম্প্রতি ব্যাপক পরিমাণে বিনিয়োগ করেছে, যা অন্য এখনও পর্যন্ত করেনি। এ সম্পর্কে ঝু বলেন, ‘এই মুহুর্তে আমাদের টেলিকম খাত ৫জি প্রযুক্তির জন্য প্রস্তুত নয়। কিন্তু এর মধ্যেই হুয়াওয়ে ৫জি প্রযুক্তির জন্য পরিবেশ তৈরি করছে, যা সম্ভব হয়েছে গবেষণায় প্রচুর বিনিয়োগের মাধ্যমে। ২জি, ৩জি ও ৪জির থেকে আরো উন্নত এবং নিরাপদ নেটওয়ার্ক মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে আমরা সকলেই অসাধারন প্রচেষ্টায় একসাথে কাজ করছি।’