শীর্ষস্থানীয় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) প্রতিষ্ঠান হুয়াওয়ে সম্প্রতি ‘টপ ১০ ট্রেন্ডস অফ ডিজিটাল পাওয়ার’ শীর্ষক এক মিডিয়া কমিউনিকেশন ভার্চুয়াল কনফারেন্সের আয়োজন করেছে। এ সম্মেলনে হুয়াওয়ের ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং ডিজিটাল পাওয়ার প্রোডাক্ট লাইনের প্রেসিডেন্ট জো তাইওয়্যান ভবিষ্যতে ডিজিটাল পাওয়ার ট্রেন্ড সম্পর্কে তার ভাবনা প্রকাশ করেছেন।
প্যারিস চুক্তির ৫ বছর পূর্তির কথা স্মরণ করে তিনি প্রথমে কার্বন নিঃসরণ কমানোর বিষয়টি উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, কার্বন নিঃসরণ রোধ বর্তমান বিশ্বের একটি অন্যতম লক্ষ্য। ১১০টিরও বেশি দেশ যেহেতু ‘কার্বন নিরপেক্ষতা’র লক্ষ্যে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, তাই শক্তির অবকাঠামোগত আধুনিকীকরণ এবং জীবাশ্ম শক্তি থেকে নবায়নযোগ্য শক্তিতে রূপান্তরের প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করা প্রয়োজন। ডিজিটাল বিশ্বের মূলভিত্তি, ডিজিটাল শক্তির অবকাঠামোয় বিনিয়োগ বৃদ্ধিতে পুরো খাতের আরও গুরুত্ব দেয়া প্রয়োজন।
সম্মেলনে হুয়াওয়ে ডিজিটাল পাওয়ার প্রোডাক্ট লাইনের ভাইস প্রেসিডেন্ট ও সিএমও ড. ফ্যাং লিয়াংজো ডিজিটাল পাওয়ার ক্ষেত্রে প্রধান ১০টি ট্রেন্ড নিয়ে হুয়াওয়ের আগাম ধারণা বিষয়ে জানান। তিনি পাওয়ার ডিজিটালাইজেশন, গ্রিন এনার্জি ফর অল, এফিশিয়েন্ট ইটুই আর্কিটেকচার, এআই বুস্ট, সিম্পল অ্যান্ড কনভারজেন্ট, অটোনোমাস ড্রাইভিং, কম্প্রিহেনসিভ অ্যান্ড স্মার্ট এনার্জি, ইন্টেলিজেন্ট ইএসএস,সুপার-ফাস্ট চার্জিং এবং সেফ অ্যান্ড রিলায়েবল এই দশটি মূল ধারার কথা উল্লেখ করেন।
সম্মেলনে হুয়াওয়ে ডিজিটাল এবং জ্বালানি প্রযুক্তির উদ্ভাবনী সম্পৃক্ততার ওপর জোর দিয়েছে। ডিজিটাল এবং জ্বালানি প্রযুক্তির এই সম্পৃক্ততা শক্তি উত্পাদন, সঞ্চালন, বিতরণ, সঞ্চয় এবং ব্যবহারে এর কার্যকারিতা আরও বৃদ্ধি করে। সবুজ শক্তি আইসিটি খাতকে কার্বন নিঃসরণ হ্রাসে সহায়তা করতে পারে। হুয়াওয়ের লক্ষ্য ভবিষ্যতে ‘কার্বন-শূন্য নেটওয়ার্ক’ এবং ‘কার্বন-শূন্য ডেটা সেন্টার’ গড়ে তোলা। হুয়াওয়ে কার্যকরী ই-টু-ই আর্কিটেকচার ট্রেন্ডের প্রস্তাব করেছে, যা আর্কিটেকচার এবং সিস্টেমের ক্ষেত্রে শক্তির কার্যকারিতা বৃদ্ধি করতে সক্ষম। এছাড়াও, হুয়াওয়ের বিশ্বাস জ্বালানি খাতে ব্যাপকভাবে এআই ব্যবহার করা হবে এবং একটি স্বাধীন সিস্টেম গড়ে তোলার মাধ্যমে বিশেষজ্ঞদের কাজকে প্রতিস্থাপিত হবে। জ্বালানি খাতের ক্রমশ ডিজিটাল রূপান্তরের কারণে প্রচলিত ম্যানুয়াল ওঅ্যান্ডএম মোড পরিবর্তিত হবে এবং এনার্জি নেটওয়ার্ক ওঅ্যান্ডএম অটোনোমাস ড্রাইভিং -এর ক্ষমতা অর্জন করবে। প্রচলিত শক্তি ব্যবস্থা সিলো আর্কিটেকচার এবং বিচ্ছিন্ন পরিচালনা ব্যবস্থা থেকে এক বিস্তৃত স্মার্ট পরিচালনা ব্যবস্থায় পরিবর্তিত হবে এবং শক্তি উত্পাদন, বিতরণ, ব্যবহারসহ ইটুই সংযুক্তির লক্ষ্য অর্জন করতে সক্ষম হবে। শক্তি সঞ্চয়ের ক্ষেত্রে, সাধারণ লিথিয়াম ব্যাটারির পরিবর্তেধীরে ধীরে জায়গা করে নিবে ইন্টেলিজেন্ট এনার্জি স্টোরেজ সিস্টেম (ইএসএস), যা ব্যাটারির সক্ষমতাকে বাড়িয়ে তুলবে। আরো উল্লেখ্য যে, মানুষ যেকোন সময় যেকোন জায়গায় সুপার-ফাস্ট চার্জিং উপভোগ করতে পারবে।
ড. ফ্যাং লিয়াংজো, ‘ডিজিটাল পাওয়ার ক্রমশ আর্কিটেকচার কনভার্জেন্ট, সহজ গঠন ও প্রিফ্যাব্রিকেটেড মডিউল সহ সিম্পল এবং কনভারজেন্ট নেটওয়ার্কের দিকে অগ্রসর হবে। এনার্জি ডিভাইসগুলো সুসংহত, হালকা এবং মডুলারাইজড হয়ে উঠবে।’ তিনি উদাহরণ টেনে বলেন, ‘বর্তমানে মাল্টি-পাওয়ার সিস্টেমগুলো একটি সমন্বিত সিস্টেমের মধ্যে একীভূত করা হচ্ছে। সাইটগুলো আরও ক্ষুদ্র থেকে ক্ষুদ্রতর হচ্ছে এবং ইনডোর থেকে আউটডোর ক্যাবিনেট এবং আউটডোর থেকে ব্লেড পাওয়ার সাপ্লাই-এ স্থানান্তরিত হয়েছে। আর প্রিফ্যাব্রিকেটেড মডুলার নির্মাণ মোড সাধারণত ডেটা সেন্টারগুলোর জন্য ব্যবহৃত হচ্ছে।’
সম্মেলনের প্রধান আলোচ্য বিষয়গুলোতে জ্বালানি খাতের সাথে হুয়াওয়ের বহু বছরের সম্পর্কের নিবিড়তা প্রতিফলিত হয়। পাওয়ার ইলেক্ট্রনিকস এবং ডিজিটাল প্রযুক্তি সম্পৃক্তকরণের মাধ্যমে হুয়াওয়ে সবুজ শক্তি উত্পাদন এবং শক্তি ব্যবহারে সর্বোচ্চ কার্যকারিতা অর্জনের পথ বেছে নিয়েছে, যা ডিজিটাল রূপান্তর এবং ডিজিটাল অর্থনীতির দিকে সমৃদ্ধির যাত্রাকেই তুলে ধরে।