রাফি ছোট থেকেই চঞ্চল প্রকৃতির কিন্তু বাবা মারা যাওয়ার পরে পৃথিবীর সকল বিষাদ যেন তার জীবনে ভর করেছে।বিষাদময় জীবনে রাফি দিনের বেশিরভাগ সময় নিজেকে চার দেয়ালের মাঝে বন্দি করে রাখে।ভার্চুয়াল জগত,বন্ধু এমনকি খেলার মাঠ থেকে সে নিজেকে আড়াল করে রেখেছে। আজ ২৪ শে ফেব্রুয়ারি রাফির জন্মদিন। প্রতিবছর এই দিনে বাবা প্রথম উপহার দিতো। কিন্তু আজ ভেবেও কান্না পাচ্ছে এই প্রথম সে বাবার কাছে থেকে কোনো উপহার পাবে না।তাই সারা রাত কান্না করে কাটিয়েছে। ফজরের আযান দেয়ার সাথে সাথে বিছানা থেকে উঠে সে নামাজ আদায় করে নিলো।কিছুক্ষণ বিছানায় গড়াগড়ি করার পরে ঘুমে তার চোখের পাতা বন্ধ হয়ে গেল।হঠাৎ ফোনের শব্দে তার ঘুম ভেঙে যায়।ঘুমের চোখে রাফি অবাক।তার ফোনে দশ টি মিসকল এবং একটি জন্মদিনের বার্তা!কিন্তু কে দিলো তাকে এমন বার্তা? আপনজন বলতে ছিলো একজনই সে হলো রাফির বাবা। কিন্তু তিন মাস হলো সে মারা গিয়েছে।অতঃপর পরিচয় জানার জন্য রাফি ফোনে আসা নাম্বারটিতে কল দিলো।রিং বাজার সাথে সাথে একটি সুকন্ঠী মেয়ে বলে উঠে কেমন আছো রাফী। রাফি তার নাম শুনে চমকে ওঠে।মেয়েটি তার পরিচিত বা কোন আত্মীয় নয়।তবে কীভাবে সে তার নাম জানলো?হঠাৎ রাফি মেয়েটির পরিচয় জানতে চাইলে সে বলে আমিতো তোমার রচিত গল্পের নাইকা ‘অপরিচিতা’।মেয়েটির প্রতিটি কথা রাফিকে ঘোরের মধ্যে নিয়ে যায়।তার প্রতিটি কথা রাফি মুগ্ধ হয়ে শুনতে থাকে।সেদিনকার মুগ্ধতা থেকেই রাফি প্রতিদিন অপরিচিতার সাথে কথা বলতো।কিন্তু প্রতিদিন কথা হলেও মেয়েটির নাম অপরিচিতাই রয়ে গেল।কারণ নামটি রাফির মনে বিশেষ একটি জায়গা করে নিয়েছে।তাই রাফি তাকে অপরিচিতা বলেই ডাকে।
তাদের প্রতিদিনকার ফোনে আলাপন সূত্র ধরেই শুরু হলো মুক্ত আকাশে দুটি প্রজাপতির উড়ার গল্প। কিন্তু কে জানতো আচমকা গল্পটি বিষাদে রুপ নিবে।
হঠাৎ একদিন অপরিচিতা বলে তার ফোনে কল রেকর্ডার চালু ছিল।এক বন্ধুর সাথে ছবি আদান-প্রদানের সময় তার ফোন থেকে সব রেকর্ডগুলো তার বন্ধু কপি করে নিয়ে গেছে।সে এখন অপরিচিতার কাছে দশ লক্ষ টাকা চাচ্ছে।এ কথা বলেই অপরিচিতা মায়া কান্না জুড়ে দিলো। কথাটি শুনে রাফির মাথায় যেন আকাশ ভেঙে পড়লো।আবার রাফি ডুবে গেল বিষাদের মাঝে।প্রতিদিন কয়েকবার অপরিচিতা কল দিয়ে কান্না জুড়ে দেয়।কিন্তু রাফি ভাবে ‘সে কেন টাকা দিবে?সে খারাপ কিছু করেনি তো’। তবে তাকে কেন এভাবে ব্লাকমেইল করা হচ্ছে সে বুঝতে পারে না। আনমনে সে কথাগুলো ভাবতে থাকে। ভাবতে ভাবতে হঠাৎ তার ‘ক্রাফের’ কথা মনে হলো।সে স্যোসিয়াল সাইট থেকে ‘ক্রাফের’ নাম্বার নিয়ে তাদেরকে সব ঘটনা খুলে বললো এবং তাদের কাছে সাহায্য চাইলো।’ক্রাফের’ সদস্যরা তাকে আইনের মাধ্যমে সাহায্য করলো।তাদের মাধ্যমেই রাফি জানতে পারলো অপরিচিতা কোন গল্পের নায়িকা নয় সে কালো পর্দার অন্তঃরালে লুকিয়ে থাকে একটি গ্যাংয়ের সদস্য। যারা সংঘবদ্ধভাবে নিরীহ মানুষদের ফাঁসিয়ে অর্থ ও সম্পদ নিয়ে থাকে।
[আসুন ভার্চুয়াল জগতে বন্ধু নির্বাচনের ক্ষেত্রে সতর্ক হই।
যেকোন সাইবার অপরাধের স্বীকার হলে যোগাযোগ করুন ‘ক্রাফে’র’ সাথে।’ক্রাফ’ এমন একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘যারা আপনাকে বিনামূল্যে সাইবার সংক্রান্ত যেকোন সাহায্য প্রদান করে থাকে এবং আইনি সাহায্যের সুযোগ দিয়ে থাকে’।]
ক্রাফের সাথে যোগাযোগের ঠিকানা:
১.ইমেইল:sheteam@crafbd.com
২.ফেইসবুক:fb.com/CrimeReserchandAnalysisFoundation
লেখক: সামিউল ইসলাম ইমন, শিক্ষার্থী, মাইলস্টোন কলেজ, উত্তরা।