ওয়াইফাই রাউটার দিয়ে ইন্টারনেট ব্যবহার করছেন অথচ মনে হচ্ছে স্পীড কম পাচ্ছেন, আবার অনেক সময় দেখা যায় সংযোগ রয়েছে কিন্তু গতি একেবারেই নেই। মনে রাখতে হবে, ওয়াই-ফাই হলো রেডিও তরঙ্গ যা সামান্য দূরত্বে ছড়িয়ে পড়ে এবং স্মার্টফোনের মতো প্রযুক্তিযন্ত্র তা গ্রহণ করে। তরঙ্গ ছড়িয়ে পড়ার মাঝে বাধা পড়লে তা ধীরগতির তো হবেই। তবে এই সমস্যা হতে খুব সহজেই মুক্তি মিলতে পারে।
চলুন জেনে নেওয়া যাক কিভাবে ওয়াইফাই এর গতি বাড়াবেন-
রাউটার উঁচু জায়গায় রাখুন
বেশির ভাগ মানুষই ওয়াই-ফাই রাউটার রাখার জন্য একটি ভালো জায়গা বাছাই করতে পারেন না। কিন্তু কেমন জায়গায় রাখা হচ্ছে এর ওপর ভিত্তি করে ওয়াই-ফাই রাউটারের কর্মদক্ষতার মধ্যে দিন-রাত পার্থক্য হতে পারে। রাউটার মাটিতে বা অন্য বস্তুর আড়ালে রাখলে সাধারণত এর কাজের ক্ষমতা অনেকটাই কমে যায়। তার পরিবর্তে বেতার তরঙ্গ আদান-প্রদানের জন্য যতটা সম্ভব উঁচু জায়গায় রাউটার রাখুন।
ফার্মওয়্যার আপডেট রাখুন
সবসময় আপডেটেড রাউটার ফার্মওয়্যার ব্যবহার করুন। এতে আগের ভার্সনের তুলনায় অনেক বাগ থেকে মুক্তি পাবেন। সাথে পেতে পারেন নতুন ফিচারও।
অব্যবহৃত ডিভাইস মুছে ফেলুন
যখন কোন ডিভাইস আর ব্যবহার করবেন না তখন সেটি ওয়াইফাই রাউটার থেকে ডিসকানেক্ট করে রাখুন। তাতে রাউটার এর লোড কমে যাবে, বাড়বে স্পীড।
রিস্টার্ট
রাউটার চলতে চলতে হ্যাং করে মাঝে মাঝে। কমদামী রাউটার এর ক্ষেত্রে এটা বেশি হয়। যার ফলে হটাৎ ই স্পীডলেস বা নেট ডিসকানেক্ট হয়ে যায়। এমতাবস্থায় রাউটারটি অফ করে অন করুন বা রিস্টার্ট দিন। সমাধান নিজের চোখেই দেখতে পাবেন।
কংক্রিট ও ধাতব পদার্থ থেকে দূরে রাখুন
কংক্রিট ও ধাতব পদার্থ ওয়াই-ফাইয়ের তরঙ্গ আটকে দেয়। তার চেয়ে অন্যান্য সামগ্রী উচ্চ-কর্মক্ষমতার বেতার তরঙ্গ প্রবাহের পথকে সুগম করে। তাই আপনার রাউটার কংক্রিট ও ধাতব পদার্থ, বিশেষত ইলেকট্রনিক যন্ত্র থেকে দূরে রয়েছে তা নিশ্চিত করতে হবে। এ ছাড়া আপনার রাউটারটি এমন জায়গায় রাখুন, যা খুব বেশি কংক্রিটের সঙ্গে যুক্ত নয়।
মাঝামাঝি স্থানে রাখুন
যদি একটি রাউটারের মাধ্যমে অনেকগুলো যন্ত্র চালাতে চান, সে ক্ষেত্রে আপনার ঘরের মাঝামাঝি জায়গায় রাউটার রাখা উচিত।
মাইক্রোওয়েভ ওয়াই-ফাইয়ের গতি কমায়
মাইক্রোওয়েভ ওভেন আপনার ওয়াই-ফাই নেটওয়ার্কের গতি কমিয়ে দিতে পারে। বিশেষ করে পুরোনো রাউটারের। কারণ মাইক্রোওয়েভ ওভেন ২৪৫ গিগাহার্টজ ফ্রিকোয়েন্সিতে কাজ করে, যা অবিশ্বাস্যভাবে ওয়াই-ফাইয়ের ২.৪ গিগাহার্টজ ব্যান্ডের কাছাকাছি। এ ছাড়া ব্লুটুথ যন্ত্রও ২.৪ গিগাহার্টজে কাজ করে, যা ওয়াই-ফাই নেটওয়ার্কের গতি কমানোর ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখতে পারে। তাই ব্লুটুথ যন্ত্র থেকে রাউটারকে দূরে (যথাসম্ভব ব্লুটুথ যন্ত্রটি বন্ধ রাখুন) রাখুন।
ইলেক্ট্রনিক সিগন্যাল থেকে দূরে রাখা
ঘরে কিছু ইলেক্ট্রনিক ডিভাইস একই সিগন্যাল রেঞ্জ ২.৪ গিগাহার্জ ব্যবহার করে থাকতে পারে। যেমন, টিভি, কর্ডলেস ফোন, মাইক্রোওয়েভ ওভেন, ইত্যাদি। এগুলো রাউটারকে তার নিজস্ব সিগন্যাল ব্রডকাস্ট করতে বাধাগ্রস্ত করবে। তাই যথাসম্ভব ইলেক্ট্রনিক ডিভাইস থেকে দূরে রাখার চেষ্টা করবেন।
এন্টেনা
কাভারেজ এরিয়া, সিকিউরিটির উপর ভিত্তি করে পাওয়ারফুল এন্টেনা সহ রাউটার কিনতে চেষ্টা করুন। চাইলে পুরনো রাউটারের এন্টেনা পরিবর্তনশীল হলে, নতুন বড়/আরও উন্নত এন্টেনা লাগিয়ে নিতে পারবেন।
আলোকসজ্জা ওয়াই-ফাইয়ের গতি কমায়
আলোকসজ্জা ওয়াই-ফাইয়ের গতি কমানোয় প্রভাব ফেলতে পারে। কারণ এসব আলো থেকে বিদ্যুৎ চৌম্বকীয় ক্ষেত্র তৈরী হয় । তাই রাউটারকে আলোকসজ্জা থেকে দূরে রাখুন।
সূত্র: ইন্টারনেট।