শূন্যপদ জমা দেওয়ার সময় আরো এক ধাপ বৃদ্ধি করেছেন বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ)। রোববার প্রকাশিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এনটিআরসিএ জানিয়েছে আগামী ৩০ তারিখ পর্যন্ত শূন্যপদ জমা দেওয়ার সময় বৃদ্ধি করা হয়েছে।
এর আগে গত ১৩ তারিখে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠাসমূহ থেকে শূন্যপদের চাহিদা প্রদানের সময়সীমা ২৩ তারিখ রাত ১২টা পর্যন্ত বৃদ্ধি করেছিল এনটিআরসিএ।
উল্লেখ্য সংশ্লিষ্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রধানরা শূন্যপদের চাহিদা দিয়ে সঠিকভাবে পালন করছেন কিনা তা পর্যবেক্ষণের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাদের।
কোনো প্রতিষ্ঠান ভুল তথ্য পাঠালে তা সংশোধনের ব্যবস্থা, জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালা ২০১৮ অনুসারে তথ্য প্রেরণ এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পাঠানো তথ্য সঠিক হয়েছে মর্মে মন্তব্য দিতেও বলা হয়েছে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাদের।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে শূন্য পদের সঠিক তালিকা না পাঠানোর কারণে ঝুলে আছে এনটিআরসিএ নিবন্ধনধারীদের নিয়োগ প্রক্রিয়া। দ্রুত সঠিক তালিকা বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষের (এনটিআরসিএ) কাছে পাঠানোর দাবিতে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে ধরনাও দিচ্ছেন চাকরি প্রত্যাশীরা।
জানা গেছে, বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটি ও কলেজ গভর্নিং বডির হাতে শিক্ষক নিয়োগ ক্ষমতা ফিরে আসতে পারে বলে শিক্ষা বিভাগে গুঞ্জন রয়েছে। এ কারণে অনেক শিক্ষক তালিকা দিতে বিলম্ব করছে। অপরদিকে শূন্য পদের প্রকৃত সংখ্যা গোপন করে মিথ্যা তথ্যও পাঠানো হচ্ছে। এতে শিক্ষক নিবন্ধনধারীরা নিয়োগ বঞ্চিত হবেন বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন।
বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, কলেজ ও মাদরাসায় শিক্ষক ও কর্মচারী নিয়োগ এখন সরকারের হাতে। এর আগে ম্যানেজিং কমিটির হাতে ছিল। বর্তমানে এনটিআরসিএ বিশেষ পরীক্ষা নেয়। পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের একটি তালিকা প্রণয়ন করা হয়েছে। বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শূন্য পদে এখন এই তালিকাধারী বা নিবন্ধনধারীদের নিয়োগ দিচ্ছে। কিন্তু নিয়োগ প্রক্রিয়া বন্ধ রয়েছে। স্ব স্ব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে শিক্ষকদের শূন্য পদের তালিকা এনটিআরসিতে না পাঠানোয়নিয়োগ হচ্ছে না বলে জানিয়েছে চাকরি প্রত্যাশীরা।
এনটিআরসিএ নিবন্ধনপ্রাপ্ত মেহেরপুর সদর উপজেলার বুড়িপোতা গ্রামের আব্দুল জব্বার ও গোপালপুর গ্রামের নুরুল ইসলাম জানান, ২০১৬ সালে জেলায় মাধ্যমিকে ৪১টি ও কলেজে ১২টি শূন্য পদ ছিল বলে প্রতিষ্ঠান থেকে এনটিআরসিতে তথ্য দেয়া হয়। তবে এখন পর্যন্ত আর কোনো তালিকা পাঠায়নি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ। গত ২৬ আগস্ট পর্যন্ত তালিকা পাঠানোর জন্য সারা দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে সময় বেঁধে দেয় এনটিআরসি। কিন্তু তালিকা পেতে বিলম্ব হওয়ায় সময় বৃদ্ধি করে চলতি মাসের ২৩ তারিখ পর্যন্ত পুনরায় সময় নির্ধারণ করে। কিন্তু তারা জানতে পারেন সঠিক তালিকা দেয়া হচ্ছে না।
এদিকে ২৩ সেপ্টেম্বরের মধ্যে তালিকা পাঠানোর জন্য নিবন্ধনধারীরা জেলা প্রশাসক ও মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারের কাছে ধরনা দিচ্ছেন। নির্ধারিত সময় যেন পার না হয় সে বিষয়ে সকলের সহযোগিতা প্রত্যাশা করছেন তারা।
নিবন্ধনধারী পিরোজপুর গ্রামের ওয়াহেদ্দুজ্জামান ও টুঙ্গি গ্রামের আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘আমরা জেলা প্রশাসক মহোদয়ের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছি। তিনি নির্দেশও দিয়েছেন মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারকে। কিন্তু মাধ্যমিক শিক্ষা বিভাগ ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধানদের সহযোগিতা না করার কারণে এবারো কী হবে তা নিয়ে দুশ্চিন্তা যাচ্ছে না।’
মেহেরপুর জেলা প্রশাসক আনোয়ার হোসেন জানান, প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের শূন্য পদের প্রকৃত তালিকা এনটিআরসিএতে পাঠানোর জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের একটি সূত্রে জানা গেছে, এনটিআরসিএ প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আলাদা আলাদা চিঠি দিয়ে তালিকা চেয়েছে। তালিকা পাঠানোর জন্য শিক্ষা অফিস তাগাদা দিচ্ছে। এর বেশি কিছু করার নেই শিক্ষা অফিসারদের। কারণ প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানই চলে ম্যানেজিং কমিটির নিয়ন্ত্রণে।
তথ্যসূত্র:বিডি-জার্নাল