করোনায় মোকাবেলায় সতর্কতার অংশ হিসেবে সবাইকে নিজ নিজ বাসা বাড়িতে অবস্থানের পরামর্শ দিচ্ছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। বলা হচ্ছে, সেলফ বা হোম কোয়ারেন্টিনের মাধ্যমে প্রাণঘাতি কোভিড-১৯ করোনা ভাইরাসের বিস্তার রোধ করা সম্ভব। এমনই প্রেক্ষাপটে নাগরিকদের বাড়িতে বাড়িতে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য পৌঁছবে ইভ্যালি এক্সপ্রেস শপ।
সম্প্রতি দেশের অন্যতম শীর্ষ ইকমার্স ভিত্তিক মার্কেটপ্লেস ইভ্যালি এক ঘোষণায় জানায়, বিভিন্ন নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য গ্রাহকেরা যেন ঘরে বসেই পেতে পারেন তার জন্য ‘ইভ্যালি এক্সপ্রেস শপ’ শিরোনামে নতুন একটি ক্যাম্পেইন করতে যাচ্ছে তারা। মঙ্গলবার (২৪ মার্চ) থেকে শুরু হতে যাচ্ছে ইভ্যালি এক্সপ্রেস শপের কার্যক্রম। তবে এই শপে পাওয়া যাবে না মাছ, মাংসের মতো কাঁচা বাজারের পণ্য। গ্রাহকেরা তাদের পণ্য অর্ডার করার পর সর্বনিম্ন এক ঘণ্টা থেকে ক্ষেত্র বিশেষে সর্বোচ্চ ৩৬ ঘণ্টার মধ্যে নিজেদের বাড়িতেই সরবরাহ পাবেন সেসব পণ্যের।
ইভ্যালির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ রাসেল বলেন, আমাদের প্ল্যাটফর্মে ১৮ লাখের ওপরে গ্রাহক এবং প্রায় ২০ হাজার বিক্রেতা বা সেলার আছে। এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক সেলার মুদি আইটেম বা নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য বিক্রি করেন। আবার এধরনের পণ্য উৎপাদন এবং খুচরা বাজারে সরবরাহ করে এমন কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানগুলোও আছে।
করোনার এই সংকটকালীন মুহুর্তে আমাদের বিশাল এই রিসোর্সকে জনগণের বৃহত্তর স্বার্থে কাজে লাগাতে চাই। বিভিন্ন মহল্লায় বা এলাকায় যারা এধরণের পণ্যের দোকান পরিচালনা করেন তারা ইভ্যালি এক্সপ্রেস শপে যুক্ত হতে পারেন। যেসব গ্রাহক আমাদের প্ল্যাটফর্মের সাথে যুক্ত হননি তারাও ইভ্যালিতে যুক্ত হয়ে পণ্য অনলাইনে অর্ডার করে ঘরে বসে বুঝে পাওয়ার এই সেবা নিতে পারেন।
রাসেল আরও বলেন, আমরা চাই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এবং যথাযথ কর্তৃপক্ষের পরামর্শ মেনে সবাই ঘরে থাকুক। এই সময়ে আমাদের সরকার একা অনেক কিছুই করতে পারবে না। আমাদের ক্ষুদ্র অবস্থান থেকে আমরা সেই জায়গায় অবদান রাখতে চাই। সকল স্বাস্থ্য সুরক্ষা মেনেই গ্রাহকদের বাসায় দ্রুততার সাথে আমরা পণ্য পৌঁছে দেব। সম্প্রতি এক ভিডিও প্রেস কনফারেন্সে সম্মানিত আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকসহ দেশিয় আইসিটি খাতের বিশিষ্টজনেরা এই সময়ে প্রযুক্তির বহুল ব্যবহারের প্রতি গুরুত্বারোপ করেছেন। আর্থিক লেনদেন নগদের তুলনায় ডিজিটাল মাধ্যমে সম্পন্ন করার তাগিদ দিয়েছেন। ইভ্যালির ব্যবসায়িক দর্শন এই স্পিরিট এর সাথে পুরোপুরি সঙ্গতিপূর্ণ।
ইভ্যালি এক্সপ্রেস শপের কার্যক্রম কেমন হবে এমন প্রশ্নের জবাবে মোহাম্মদ রাসেল বলেন, গ্রাহক তার অবস্থান থেকে অনলাইনে অর্ডার করবে। গ্রাহকদের নিকটস্থ দোকানগুলো আমাদের ইভ্যালিতে থাকবে। যার দোকানের অনুকূলে অর্ডার এসেছে সেই সেলার সর্বনিম্ন এক ঘণ্টা থেকে পণ্য ও ক্ষেত্রবিশেষে সর্বোচ্চ ৩৬ ঘণ্টার মধ্যে পণ্য গ্রাহকের কাছে সরবরাহ করবেন। এক্ষেত্রে বাজার মূল্যের বিবেচনায় পণ্যের দাম ইভ্যালি নির্ধারণ করে দেবে যা কোনভাবেই বাজার মূল্য থেকে বেশি হবে না। সকল পণ্যের দায়িত্ব সেলারের।
তবে সেলারদের সবধরনের কারিগরি সহায়তা দেবে ইভ্যালি। যেমন প্রয়োজনীয় সফটওয়্যার এবং অন্যান্য লজিস্টিক সহায়তা প্রয়োজন হলে ইভ্যালি প্রদান করবে। একই সাথে সেলারদের উৎসাহিত করতে তাদের মোট অর্ডারের ওপর ৫ শতাংশ হারে বোনাসও দেবে ইভ্যালি। আমরা মনে করি এই সময়ে আমাদের সবাইকে সবার সহায়তায় কাজ করতে হবে। একই সাথে আমাদের সবার উচিত সচেতন এবং সতর্ক হয়ে নিজ নিজ অবস্থানে অবস্থান করা। ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে নয় বরং সমাজের প্রতি দায়বদ্ধতা থেকে আমাদের এই উদ্যোগ।
আগামী দুই থেকে তিন দিনের মধ্যে রাজধানী ঢাকায় এমন ৮টি এবং পুরো দেশে প্রায় ৫০টি ইভ্যালি এক্সপ্রেস শপ চালু করার পরিকল্পনা রয়েছে প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে জানানো হয়।