ঝড় বাদলের সময় শুরু হয়ে গেছে। মাঝেমাঝেই বইতে শুরু করেছে ঝড়োহাওয়া। সাধারনত বৈশাখের শুরুতেই এমনটা হয়। ঝড় বৃষ্টি কিংবা কালবৈশাখী সব প্রাকৃতিক দূর্যোগের সময় তাই কিছু সচেতনতা প্রয়োজন। কালবৈশাখী ঝড় শুরু হলেই নানা জায়গা থেকে খবর পাওয়া যায় নানা দুর্ঘটনার।
তাই আজ আমরা জেনে নিব ঝড়ের সময়সতর্কতা মূলকপদ্ধতি হিসাবে আমাদের করনীয়-
- ঝড় শুরু হয়ে গেলে যত দ্রুতসম্ভব নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নিতে হবে।খোলা আকাশের নিচে বা ভেঙ্গে পড়তে পারে এমন কিছুর নিচে থাকা যাবে না।
- বানিজ্যিক প্রতিষ্ঠান ও বসত বাড়ীতে বজ্রনিরোধের ব্যাবস্থা করতে হবে।অবশ্যই বৈদ্যুতিক লাইনের আর্থিং করে রাখতে হবে।
- বিদ্যুৎ চমকানোর সময় ফোন বা মোবাইলে কথা বলা থেকে বিরত থাকুন।
- বাসার বিদ্যুৎ লাইনসমূহ ঠিক আছে কিনা পরীক্ষা করিয়ে নিন। নিরোধক যন্ত্রের কার্যকারিতা যাঁচাই করুন। পূর্বপ্রস্তুতি নিন এবং নিরাপদ থাকুন।
- ড্যাম বা অন্য কোনও কারণে যদি বাড়িতে কোথাও কোনও ফাটল ধরে থাকে, তাহলে অবশ্যই এখনই সারিয়ে ফেলুন।
- পরিবারের সকলের মধ্যে বজ্রপাতের প্রভাব সম্পর্কে সচেতনতা জাগ্রত করুন এবং বজ্রপাতের সময় বৈদ্যুতিক ও যোগাযোগ তার সমূহ, যেমন – টিভির এন্টেনা, ডিসের এ্যান্টেনা, টেলিফোনের তার ইত্যাদি বিচ্ছিন্ন রাখার অভ্যাস গড়ে তুলুন।
- বাসা থেকে বের হবার পূর্বে কম্পিউটার, টিভি ও অন্যান্য বিদ্যুৎ চালিত যন্ত্রপাতির, সম্ভব হলে, বৈদ্যুতিক সংযোগ বিচ্ছিন্ন করুন।
- ঝড়-বৃষ্টির সময় বাসার ডিশ ও ইন্টারনেট সংযোগ খুলে রাখুন।
- বিদ্যুৎ চমকানোর কারণে ভোল্টেজ প্রচন্ড ভাবে উঠা-নামা করে। এ ক্ষতির হাত থেকে রক্ষার জন্য বাসার টেলিফোন সেট, কর্ডলেস ফোন, টিভি, ফ্রিজ, কম্পিউটার, ল্যাপটপ, সাউন্ড সিস্টেম, ইন্টারনেট লাইন ইত্যাদির সংযোগ বিচ্ছিন্ন রাখুন।
- মোমবাতি কিংবা ব্যাটারি চালিত কোনও আলো সবসময় হাতের কাছে রাখুন। যাতে লোডশেডিং হলে অন্ধকারে অসুবিধা না হয়।
- মোটরসাইকেল, সাইকেল চালকরা বাইক/সাইকেল থেকে নেমে পড়ুন এবং নিরাপদ আশ্রয় খুঁজুন।
- বড় গাছের নিচে কখনও অবস্থান করবেন না কারণ গাছ বিদ্যুৎ সুপরিবাহী ও বিদ্যুৎ আকর্র্ষী।
- সম্ভব হলে মেইন পাওয়ার সুইচ বন্ধ করুন। কারণ প্রচন্ড বজ্রপাতে সেটি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
- অত্যন্ত প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ওয়াটারপ্রুফ ফাইলে ভরে রাখুন।
- জানালা-দরজার লক ঠিক আছে কিনা দেখে নিন।
- ঘরে পর্যাপ্ত পরিমানে শুকনো খাবার, পানি, ওষুধ হাতের কাছে রাখবেন।
- মোবাইলে সবসময় পুরো চার্জ দিয়ে রাখুন।
- কার বা জীপে থাকাকালীন গাড়ীর দরজা ও জানালা বন্ধ রাখুন। এটি সরাসরি বিদ্যুৎস্পৃষ্ঠ হওয়ার সম্ভাবনা কমাবে এবং তীব্র শব্দের সরাসরি আঘাত হতে আপনাকে রক্ষা করবে।
- বেশি বিদ্যুৎ চমকানোর সময় কখনই পানির কলের কাছে যাবেন না। এসময় কলের পানিতে গোসল, হাত ধোয়া থেকে বিরত থাকাই সবচেয়ে ভাল।
- ঝড়ের সময় গ্যাসোলিন জাতীয় দাহ্য পদার্থ ব্যবহার পরিহার করুন।
- শিশুদের প্রতি বিশেষ যত্নবান হোন। কারণ বজ্রপাতের বিকট শব্দে তারা ভীত হতে পারে। বজ্রমেঘ দেখা মাত্র শিশুদের খেলার মাঠ থেকে ডেকে নিন।
- ঘরের সব দরজা জানালা বিশেষ করে কাঁচের জানালা বন্ধ রাখুন এবং লোহার রড, গ্রীল স্পর্শ করা থেকে বিরত থাকুন।
- বিদ্যুৎ চমকানোর সময় স্টীলের হাতলের পরিবর্তে কাঠের হাতলযুক্ত ছাতা বেশী নিরাপদ।
- বজ্রমেঘদেখে, চিনতে শিখুন। নিরাপত্তামূলক পদক্ষেপ গ্রহন করুন। নিজের জীবন ও সম্পত্তি রক্ষা করুন।
- পুকুর, খাল, নদী বা এ জাতীয় জলাশয়ে অবস্থান করবেন না। কারন এসব জলাশয়ে বজ্রপাত হলে পুরো জলাশয়টি উচ্চ ভোল্টেজ এ পরিনত হবে। আপনি যদি উম্মুক্ত স্হানে নৌকায় অবস্হান করেন তব দ্রুত নিকটতম যেকোন ঘরে ঢুকে পড়ুন।