বাংলাদেশের প্রথম লুনার স্যাটেলাইট ডেভেলপমেন্ট প্রকল্প বাস্তবায়নে ওয়ালটন হাইটেক ইন্ডাস্ট্রি পিএলসি-র ওয়ালটন টেলিভিশন’এর ক্লিনরুম রিসার্চ ল্যাব ব্যবহার করবে এসপায়ার টু ইনোভেট-এটুআই।
এ লক্ষ্যে গতকাল সোমবার আইসিটি টাওয়ারে উভয় প্রতিষ্ঠানের মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়।
এটুআই এর প্রকল্প পরিচালক (যুগ্মসচিব) মো: মামুনুর রশীদ ভূঞা এবং ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজের ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর জনাব নজরুল ইসলাম সরকার নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে এই সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করেন।
এসময় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ এর সচিব মোঃ সামসুল আরেফিন এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে অনুষ্ঠানে অনলাইনে যুক্ত ছিলেন এটুআই এর পলিসি অ্যাডভাইজর আনীর চৌধুরী।
সমঝোতা স্মারক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির হিসেবে আইসিটি সচিব জনাব মোঃ সামসুল আরেফিন বলেন, চাঁদে এমন কিছু পদার্থ আছে, যা পৃথিবীতে অপ্রতুল।
চাঁদের হিলিয়াম-৩ আইসোটপ পৃথিবীর জন্য ক্লিন এনার্জির এক অন্যতম উৎস। তাই চাঁদ হচ্ছে আমাদের ভবিষ্যত বাণিজ্যের ঠিকানা।
সেখানে যদি আমরা আগেই পদার্পণ করতে পারি তাহলে ভবিষ্যতে আমরা এখান থেকেও বড় ধরনের একটি ব্যবসা-বাণিজ্যের আশা করতে পারি। এমন মিশনে এটুআই এর পাশে থেকে তাদের ক্লিনরুম রিসার্স ল্যাব ব্যবহার করার সুযোগ করে দেয়ার জন্য ওয়ালটন টেলিভিশনকে ধন্যবাদ জানাই।
ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজের ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর জনাব নজরুল ইসলাম সরকার প্রকল্পটির অগ্রগতি কামনা করে বলেন, এই প্রজেক্টটি সাফল্যমণ্ডিত করার জন্য ওয়ালটন টেলিভিশনের উৎপাদন কারখানায় সকল ধরনের সরঞ্জাম আছে ও ক্লিনরুম ল্যাব সহযোগিতার পাশাপাশি অনন্য কারিগরি সহযোগিতা প্রদান করা হবে।
ওয়ালটন টিভির চিফ বিজনেস অফিসার (সিবিও) প্রকৌশলী মোস্তফা নাহিদ হোসেন বলেন, ওয়াল্টন হেডকোয়াটার্সের টিভি ম্যানুফ্যাচারিং প্ল্যান্টে আইএসো ক্লাস সেভেন ডাস্ট ফ্রি ক্লিনরুম ছাড়াও রয়েছে আন্তর্জাতিক মানের রিসার্চ সক্ষমতা, সর্বাধুনিক ল্যাব এবং টেস্টিং ফ্যাসেলিটিজ যার মাধ্যমে অন্য যেকোন সংস্থাকে আমরা এই সংক্রান্ত সহযোগিতা করতে সক্ষম।
দেশে তৈরি চাঁদের অরবিটে প্রথম স্যাটেলাইট পাঠাবার যে প্রচেষ্টা, তাতে ওয়ালটন টিভির নিজস্ব গবেষণা সক্ষমতার মধ্য দিয়ে এটুআই-এর সাথে টেকনোলজি পার্টনার হিসেবে সংযুক্ত হতে পারাটা আমাদের জন্য অত্যন্ত গর্বের।
অনুষ্ঠানের সমাপনী বক্তব্য প্রদান করেন এটুআই এর প্রকল্প পরিচালক (যুগ্মসচিব) মো: মামুনুর রশীদ ভূঞা।
তিনি বলেন, ‘সাগর থেকে মহাকাশে এটুআই আছে মিশে। আমরা এই লুনার স্যাটেলাইট এর মাধ্যমে নতুন ধাপে যাত্রা শুরু করলাম।’
উল্লেখ্য, বর্তমানে নাসার গ্লি মিশনের জন্য এসপায়ার টু ইনোভেট-এটুআই, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান অ্যাভিয়েশন অ্যান্ড অ্যারোস্পেস বিশ্ববিদ্যালয় ও ওয়ালটন টেলিভিশনের যৌথ প্রচেষ্টায় বাংলাদেশ প্রথম বারের মতো ফেমটো আকৃতির স্যাটেলাইট উন্নয়ন করতে চলেছে।
নাসার কলেরেডো স্পেস গ্রান্ড কন্সোর্টিয়াম একটি আন্তর্জাতিক গভীর মহাকাশ মিশন পরিচালনা করছে যার নাম ‘দ্যি গ্রেট লুনার এক্সপিডিশান ফর এভরিওয়ান’।
আর্টেমিস চ্যালেঞ্জে উত্তীর্ণ হওয়ার মাধ্যমে এটুআই ইনোভেশন ল্যাব উক্ত মিশনে বাংলাদেশকে প্রতিনিধিত্ব করছে। ২২টি দেশ ও পরবর্তীতে আরো ৮টি দেশ সংযোজনের মাধ্যমে মোট ৩০টি দেশের ‘লুনার এলিট ক্লাব’- এ প্রবেশ করতে চলেছে বাংলাদেশ।
এসময় অন্যান্যদের মধ্যে এটুআই ইনোভেশন ফান্ডের প্রধান নাঈম আশরাফী, লুনার স্যাটেলাইট প্রকল্পের টিম লিডার ও প্রধান প্রকৌশলী জনাব জাহিদ হাসান শোভন, ওয়ালটন টিভির ডিপুটি চিফ বিজনেস অফিসার (ডিসিবিও) আবির আহমেদ, রিসার্চ ও ইনোভেশন প্রধান মিঠুন চক্রবর্তী এবং এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর জনাব জাহিদ হোসাইনসহ এটুআই ও ওয়ালটনের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।