উবার, ক্যাব, সিএনজির মালিকরা বেশ ভালো আয় করছেন। কিন্তু তারা করের আওতার বাইরে রয়েছে। তাই তাদেরকে করের আওতায় আনতে হবে বুধবার বিকেলে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সভায় ইআরএফ নেতারা এমন কথাই জানালেন।
নতুন অর্থবছরে পাঠাও-উবারসহ বিভিন্ন রাইড শেয়ারিং প্রতিষ্ঠানগুলোকে করের আওতায় আনা হবে বলে জানিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এনবিআরের চেয়ারম্যান বলেন, শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের সুবিধার্থে ইয়োলো বাস আমদানিতে শুল্কমুক্ত সুবিধা দেওয়ার প্রস্তাব অত্যন্ত যৌক্তিক। এছাড়া করের আওতা বাড়াতে উবার, পাঠাও, ক্যাব, সিএনজিসহ সংশ্লিষ্ট যাত্রীসেবা প্রতিষ্ঠানগুলোকে করের আওতায় আনা হবে।এনবিআরের সম্মেলন কক্ষে অর্থনৈতিক বিটের সাংবাদিকদের সংগঠন ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের (ইআরএফ) সঙ্গে অনুষ্ঠিত প্রাক-বাজেট আলোচনায় এনবিআর চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া এসব কথা বলেন।
বৈঠকে এনবিআর চেয়ারম্যান আরো বলেন, ২০১৮-১৯ অর্থ বছরের বাজেটে ব্যক্তির ক্ষেত্রে করমুক্ত আয়ের সীমা না-ও বাড়ানো হতে পারে। বিদ্যমান করমুক্ত আয়সীমা আড়াই লাখ টাকাই বহাল থাকতে পারে। তবে কমতে পারে ন্যুনতম করের পরিমাণ। তিনি বলেন, ন্যুনতম করের পরিমাণ কমিয়ে সবাইকে করের আওতায় আনতে হবে। সরকার নাগরিক অনেক সুবিধা করে দিচ্ছে, সেখানে কর দেওয়া সবার জাতীয় নৈতিক দায়িত্ব। এটা কিভাবে করা যায়, ভাবা হচ্ছে।
এর প্রেক্ষিতে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, আমাদের দেশে কর দেওয়ার অভ্যাস গড়ে উঠেছে। সকলে যদি এটা অনুধাবন করে-করের পরিমাণ যাই হোক, প্রতিবছর আমি কর দেই। আড়াই লাখ টাকা আয় ধরলে কারো বছরে কর ৩-৫ হাজার টাকা আসবে, এটা দেওয়া তেমন বিষয় নয়। বছরে অনেকে একটা-দুইটা মোবাইলও বদল করেন।
ইআরএফ সাধারণ সম্পাদক জিয়াউর রহমান বলেন, শেয়ারবাজারের লিস্টেড কোম্পানি এবং নন লিস্টেম কোম্পানিগুলোর কর হার ব্যবধান ১০ শতাংশ। এক্ষেত্রে লিস্টেড কোম্পানির করহার আরেকটু কমানো দরকার।তিনি বলেন, কর সুবিধা দেওয়া হলে নন-লিস্টেড কোম্পানিগুলো বাজারে আসবে। তাদের উপর মনিটরিং বাড়বে। ফলে করহার কমানো সত্ত্বেও মোট কর হার কমবে না বরং বাড়বে। এছাড়া বহুজাতিক কোম্পানিগুলো তালিকাভুক্ত না হলে তাদের করহার বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়ার প্রয়োজন। এসময় মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া বলেন, শেয়ারবাজারের লিস্টেড কোম্পানি এবং নন লিস্টেড কোম্পানিগুলোর কর হার ব্যবধানের বিষয়টি দেখা হবে। আর বহুজাতিক কোম্পানিগুলোকে বাজারে আসতে আমরা বলতে পারি।
বৈঠকে ইআরএফ সহ-সভাপতি সালাউদ্দিন বাবলু বলেন, ঢাকায় যানজটের কারণে বছরে ৪০ হাজার কোটি টাকা ক্ষতি হয়। ঢাকায় ২৫ লাখ শিক্ষার্থী আছে। এরা যখন রাস্তায় নামে, সাথে আরো ১৫ লাখ অভিভাবক নামে অর্থাৎ প্রায় ৪০ লাখ। তাদের একটা অব্যবস্থাপনার মধ্য দিয়ে শিক্ষাঙ্গনে আসতে হয়। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে শিক্ষার্থীদের পরিবহনে ইউনিফর্ম আদলে ইয়োলো বাস আছে। কিন্তু আমাদের ঢাকায় সেটি নেই। অনেকের আগ্রহ থাকলেও ট্যাক্সের ভয়ে গাড়ি নামান না। এক্ষেত্রে ট্যাক্স মওকুফ করে দিলে-অনেক গাড়ি নামবে। কেউ ব্যবসায়িক ভাবে এটা ব্যবহার করতে পারবে না, তাহলে ঢাকার যানজট অর্ধেক নেমে যাবে।