করোনাভাইরাস মোকাবেলায় ব্যাপক উদ্যেগ নিয়েছে দেশের শীর্ষ ইলেকট্রনিক্স পণ্যের ব্র্যান্ড ওয়ালটন। কর্মীদের সুরক্ষায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়েছে তারা। পাশাপাশি বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংগঠনের মাধ্যমে স্বাস্থ্যকর্মীদের ব্যক্তিগত সুরক্ষামূলক সরঞ্জাম (পারসোনাল প্রোটেকটিভ ইক্যুইপমেন্ট) দিচ্ছে ওয়ালটন। দরিদ্রদের জন্য খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করছে। একই সাথে প্রায় ২০ হাজার পয়েন্টের মাধ্যমে দেশের সর্বত্র সচেতনতা এবং সেনিটাইজেশন কার্যক্রম চালাচ্ছে বাংলাদেশি মাল্টিন্যাশনাল ব্র্যান্ড ওয়ালটন।
উল্লেখ্য, করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ বিশ্বব্যাপী ব্যাপক আকার ধারণ করেছে। প্রাণঘাতি এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ইতোমধ্যেই ১৮ হাজারেরও বেশি মানুষ মৃত্যুবরণ করেছেন। বাংলাদেশেও ব্যাপক আকারে ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। করোনার বিস্তার রোধে সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। সামাজিক দায়বদ্ধতা কার্যক্রম (সিএসআর) এর অংশ হিসেবে করোনার বিপক্ষে লড়াইয়ে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে ওয়ালটন।
করোনাভাইরাস মোকাবেলায় প্রয়োজনীয় সহায়তা দেয়ার উদ্দেশ্যে মঙ্গলবার ওয়ালটনের একটি প্রতিনিধিদল বাংলাদেশ সরকারের স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের (ডিজিএইচএস) সঙ্গে বৈঠক করেছে। বৈঠকে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ডিজিএইচএস-এর অ্যাডিশনাল ডিরেক্টর জেনারেল অধ্যাপক সানিয়া তাহমিনা, ডেপুটি প্রোগ্রাম ম্যানেজার ডা. মোহাম্মদ মারুফুর রহমান, ওয়ালটনের নির্বাহী পরিচালক ও রেফ্রিজারেটর বিভাগের সিইও প্রকৌশলী গোলাম মুর্শেদ এবং প্রধান চিকিৎসা কর্মকর্তা ডাক্তার ইয়াজদান রেজা চৌধুরী। বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সরকারি হাসপাতালগুলোতে বিপুল পরিমাণ বিশ্বমানের এফডিএ এবং সিই সার্টিফাইড পিপিই দিচ্ছে ওয়ালটন। যার মধ্যে রয়েছে প্রোটেকটিভ স্যুট, মেডিক্যাল মাস্ক, গ্লাভস, স্যু কভার, সেফটি গগলস, হেড ক্যাপ এবং হ্যান্ড স্যানিটাইজার।
এ প্রসঙ্গে গোলাম মুর্শেদ বলেন, করোনা ভাইরাস আক্রান্ত রোগীর সেবা দেয়ার বিষয়ে স্বাস্থ্যকর্মীদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। কারণ পর্যাপ্ত পিপিই-এর অভাব। এজন্য প্রাথমিকভাবে ৫ হাজার পিস করে প্রাটেকটিভ স্যুট, মেডিক্যাল মাস্ক, গ্লাভস, স্যু কভার, সেফটি গগলস, হেড ক্যাপ সরবরাহ করছে ওয়ালটন। পরবর্তীতে তাদের চাহিদা অনুযায়ী হাসপাতালগুলোর জন্য অক্সিজেন সরবরাহ যন্ত্র (ভেন্টিলেটর) সহ অন্যান্য উপকরণ সরবরাহ করবে। আশা করি সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় খুব শিগগিরই আমরা এ কঠিন সময় অতিক্রম করতে পারবো।
তিনি জানান, বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার ফর্মূলা অনুযায়ী হ্যান্ড সেনিটাইজার তৈরি করছে ওয়ালটন। সেগুলো বিনামূল্যে দেশব্যাপী বিতরণ করা হচ্ছে। পাশাপাশি দেশজুড়ে ওয়ালটনের প্রায় ২০ হাজার পয়েন্ট থেকে করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে সচেতনতা এবং সেনিটাইজেশন কার্যক্রম চালানো হচ্ছে। একই সাথে এসব পয়েন্ট থেকে সাধারণ মানুষের মাঝে মাস্ক, সেনিটাইজার এবং খাদ্যদ্রব্য বিতরণ করছে ওয়ালটন।
এদিকে, করোনাভাইরাসের কারণে অভাবী মানুষের জন্য সামাজিক সংগঠন বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনে ১০ লাখ টাকা দিয়েছে ওয়ালটন। নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের চাহিদা মেটাতে যারা হিমশিম খাচ্ছেন, এরকম ৪০ হাজার মানুষের খাবার সরবরাহে কাজ করছে বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন। দুস্থ শিশুদের মধ্যে ‘এক টাকায় আহার’ বিতরণ করে ব্যাপক সুনাম অর্জন করে এই সংস্থাটি। মঙ্গলবার বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের ঢাকাস্থ কার্যালয়ের প্রধান সালমান খান ইয়াসিনের হাতে ১০ লাখ টাকার চেক তুলে দেন ওয়ালটনের ডেপুটি এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর ফিরোজ আলম এবং টিভি বিভাগের সিইও মোস্তফা নাহিদ হোসেন।
ওয়ালটনের এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর উদয় হাকিম জানান, স্বাস্থ্যকর্মী এবং সাধারণ মানুষের সুরক্ষার পাশাপাশি বরাবরের মতো সংবাদকর্মীদের পাশে দাঁড়িয়েছে ওয়ালটন। করোনা সংক্রমণের ঝুঁকির মধ্যে যেসব সংবাদকর্মীরা কাজ করছেন, তাদের সুরক্ষায় মাস্ক, গ্লাভস, হ্যান্ড সেনিটাইজার ইত্যাদি সরবরাহ করা হয়েছে। ঢাকা রিপোটার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) এর জরুরি উদ্ধার টিমের সদস্যদের জন্য ৩০টি সুরক্ষা জ্যাকেট সরবরাহ করা হচ্ছে। দেশের টিভি চ্যানেলগুলোর ক্যামেরাম্যানদের জন্য খুব শিগগিরই নিরাপত্তা গ্লাভস দিচ্ছে ওয়ালটন।