সাধারণ বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ সংরক্ষণ করে শেয়ারবাজারে আরো শেয়ার ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পুঁজিবাজারে তালিকাভূক্ত ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড। শেয়ার অফ-লোড থেকে প্রাপ্ত অর্থ নতুন শিল্পে বিনিয়োগের পরিকল্পনা করছেন কোম্পানিটির উদ্যোক্তা-পরিচালকগণ। এ বিষয়ে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলামের সাথে বৈঠক করেছেন ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) গোলাম মুর্শেদ।
উল্লেখ্য, বাজারে ১০ শতাংশের কম শেয়ার থাকায় নতুন করে শেয়ার ছাড়ার অনুরোধ জানিয়ে ওয়ালটনসহ তিনটি কোম্পানিকে গত রোববার চিঠি দেয় বিএসইসি। চিঠিতে আগামি ১ বছরের মধ্যে ওই কোম্পানিগুলোকে বাজারে ১০ শতাংশ শেয়ারে উন্নীত করার অনুরোধ জানানো হয়। ওই চিঠি ইস্যুর পর পরই শেয়ারবাজারে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এবং চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সবকটি মূল্য সূচক কমে যায়।
এরই প্রেক্ষিতে মঙ্গলবার (১৪ সেপ্টেম্বর, ২০২১) বিএসইসি কার্যালয়ে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থার চেয়ারম্যানের সাথে ওয়ালটনের এমডি বৈঠক করেন। বৈঠকে আলোচনার প্রধান বিষয় ছিলো বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষা করে নতুন শেয়ার ছাড়ার বিষয়ে ঐক্যমত্যে পৌঁছানো। বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, বিএসইসি চেয়ারম্যান ও ওয়ালটন এমডির মধ্যে ফলপ্রসু আলোচনা হয়েছে। যার প্রেক্ষিতে বাজারে নতুন শেয়ার ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ওয়ালটন।
জানতে চাইলে ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের এমডি ও সিইও গোলাম মুর্শেদ বলেন, পুঁজিবাজারের নিয়ম-নীতি মেনেই ব্যবসাসহ সামগ্রিক কার্যক্রম পরিচালনা করছে ওয়ালটন। তাই সাধারণ বিনিয়োগকারী ও দেশের সামগ্রিক উন্নয়ণের স্বার্থে বিএসইসি চেয়ারম্যানের সঙ্গে আমরা দেখা করি। পুঁজিবাজারের উন্নয়ণের স্বার্থে পরবর্তী ৩ বছরের মধ্যে বাজারে ৫ শতাংশ শেয়ারে উন্নীত করতে বিএসইসির কাছে ওয়ালটনের উদ্যোক্তা-পরিচালকদের আবেদন ছিলো। বিএসইসি’র চেয়ারম্যান পুঁজিবাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থার অভিভাবক। পুুঁজিবাজারের সামগ্রিক স্বার্থে তিনি ওয়ালটনের উদ্যোক্তা-পরিচালকদের আবেদন বিবেচনা করার বিষয়ে আশ্বস্ত করেছেন।
কোম্পানি সচিব মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম, এফসিএস বলেন, লক-ইন পিরিয়ডে কোম্পানির উদ্যোক্তা-পরিচালকগণের হাতে থাকা শেয়ার বাজারে ছাড়ার নিয়ম নেই। কিন্তু বিএসইসির অনুরোধের প্রেক্ষিতে বিশেষ বিবেচনায় আরো শেয়ার ছাড়ার বিষয়ে ওয়ালটনের উদ্যোক্তা-পরিচালকগণ একমত হয়েছেন। অফ-লোডকৃত শেয়ার থেকে প্রাপ্ত অর্থ তারা নতুন শিল্পে বিনিয়োগের পরিকল্পনা করছেন।
উল্লেখ্য, ২০২০ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজের মোট শেয়ার সংখ্যা ৩০ কোটি ২৯ লাখ ২৮ হাজার ৩৪৩। শুরু থেকেই বিনিয়োগকারীদের কাছে ওয়ালটনের শেয়ারের চাহিদা তুঙ্গে। তালিকাভুক্তির সময় ওয়ালটনের বাজার মূলধন ছিলো ৭ হাজার ৬৩৩ কোটি টাকা। মঙ্গলবার সর্বশেষ কার্যদিবসে ওয়ালটনের বাজার মূলধন দাঁড়ায় ৪০ হাজার ৮৩১ কোটি টাকায়। যা বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠান হিসেবে সর্ব্বোচ। আর সামগ্রিকভাবে বাজার মূলধনে গ্রামীণফোনের পরই অবস্থান ওয়ালটনের।