আজকাল প্রায় সব ধরনের পেশা ও লেখাপড়ার কাজে দীর্ঘ সময় কম্পিউটার ব্যবহার করতে হচ্ছে। কিন্তু স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে কম্পিউটার ব্যবহার না করায় তৈরি হচ্ছে নানা ধরনের স্বাস্থ্য জটিলতা।
কী কী শারীরিক সমস্যা দেখা যায়
■ দীর্ঘ সময় কম্পিউটার টেবিলে বসে থাকা এবং শরীরের দেহভঙ্গি ঠিক না থাকার কারণে মাংসপেশির ওপর অতিরিক্ত চাপ পড়ে, রক্ত চলাচল বাধাগ্রস্ত হয়। এর ফলে ঘাড়ব্যথা, কোমরব্যথা, ঘাড়ের মাংসপেশি শক্ত হয়ে যাওয়া, কাঁধ ও হাতব্যথা হতে পারে।
■ বারবার বা অতিরিক্ত কম্পিউটার অপারেটিংয়ের ফলে কনুই, কবজি, হাতব্যথাসহ ফুলে যাওয়া, সন্ধি শক্ত হয়ে যাওয়া, মাংসপেশি অবশ ও দুর্বল হতে পারে।
■ কম্পিউটারের মনিটর ও চোখের দূরত্বের অসামঞ্জস্যের জন্য মাথাব্যথা, চোখব্যথা, চোখে ঝাপসা দেখা, পানি পড়া ইত্যাদি সমস্যাও তৈরি হতে পারে।
চেয়ার ও কম্পিউটার টেবিল কেমন হওয়া উচিত
■ যেকোনো অফিস সাজানোর আগে একজন এর্গোনোমিকস এক্সপার্টের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
■ বসার চেয়ারের ডিজাইন এমন হবে, যেখানে ঘাড় সোজা ও পিঠ বিশ্রামে থাকবে, কোমরে বা পেছনে সাপোর্ট থাকবে, বসার গদি আরামদায়ক হবে, চেয়ারের উচ্চতা ঠিক রাখার জন্য সুবিধাজনক স্ক্রু থাকবে, হাঁটু থেকে টেবিলের মধ্যে একটি ফাঁক থাকবে এবং পা মাটিতে বা ফ্লোরে লেগে থাকবে। মাউস ও কি-বোর্ড টেবিলের মাঝামাঝি থাকবে, যাতে কনুই ও হাত টেবিলের ওপর সাপোর্টে থাকে।
করণীয়
প্রতি ১ ঘণ্টা কাজের ফাঁকে ৫ মিনিট বিরতি নিন এবং একটু হাঁটাহাঁটি করুন। কিছু স্ট্রেচিং ব্যায়াম করুন। এতে মাংসপেশিতে রক্ত চলাচল স্বাভাবিক থাকবে এবং মাংসপেশি ক্লান্ত হবে না। যেমন
ক) ডানে, বাঁয়ে, সামনে, পেছনে ঘাড়কে হেলিয়ে টান টান শক্ত করে ৫ সেকেন্ড ধরে রাখুন এবং ছেড়ে দিন। এটি ৫-১০ বার করুন। এতে ঘাড়ব্যথা হবে না।
খ) দুই হাত সোজা করে শক্তভাবে মুঠ করুন। এভাবে ৫ সেকেন্ড ধরে রাখুন ও ছাড়ুন। এটিও ৫-১০ বার করুন। এতে কবজি ও হাতের আঙুল ব্যথা থেকে মুক্তি পাবেন।
গ) সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে দুই হাত কোমরের পেছনে রেখে যতটুকু সম্ভব ধনুকের মতো বেঁকে যান এবং আবার সোজা হোন। এটি ৫-১০ বার করুন। এতে আপনার কোমরে মাংসপেশি স্ট্রেচিং হবে এবং সহজে আপনি কোমরব্যথা থেকে মুক্তি পাবেন।