যুক্তরাষ্ট্রে একটি পরীক্ষামূলক ওষুধের মাধ্যমে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের জীবন বাঁচানো সম্ভব হয়েছে বলে খবর বেরিয়েছে। দুই শীর্ষ মার্কিন চিকিৎসক জানান, একটি পরীক্ষামূলক ওষুধের মাধ্যমে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের জীবন বাঁচানো সম্ভব হয়।মোট ১৫ জন গুরুতর অসুস্থ রোগীর ওপর এই ওষুধ প্রয়োগ করা হয়েছে এবং প্রত্যেকেই সুস্থ হয়ে উঠছেন বলে জানা গেছে।
যুক্তরাষ্ট্রে ১৬ মার্চ থেকে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিনের পরীক্ষামূলক প্রয়োগ (ট্রায়াল) শুরু হতে যাচ্ছে। দ্য ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব হেলথের (এনআইএইচ) তত্ত্বাবধানে ওয়াশিংটনের সিয়াটলের হেলথ রিসার্চ ইনস্টিটিউটে এক রোগীর ওপর পরীক্ষামূলকভাবে এই ভ্যাকসিন প্রয়োগ করা হবে।
এনআইএইচ ও মডের্না ইনকের যৌথ সহযোগিতায় এই ভ্যাকসিন তৈরি করা হয়েছে, যা ৪৫ জন রোগীর ওপর পর্যায়ক্রমে প্রয়োগ করা হবে। ভ্যাকসিনে কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া আছে কি না, সেদিকই বিশেষ গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা হবে।
বিশ্বের নানা ল্যাবরেটরিতে বেশ কয়েকটি রিসার্চ গ্রুপ কোভিড-১৯-এর জন্য কার্যকর ভ্যাকসিন তৈরির কাজ করে যাচ্ছে।
কিছু রিসার্চ গ্রুপ সাময়িক (টেম্পোরারি) ভ্যাকসিনের জন্য কাজ করছে, যা স্থায়ী ভ্যাকসিন তৈরির আগে মাস চারেক পর্যন্ত রোগীকে সুস্থ রাখবে।
এই প্রতিষেধকের গবেষণা দলে ছিলেন ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেভিস মেডিকেল সেন্টারের সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ জর্জ থম্পসন। করোনায় আক্রান্ত এক মার্কিন নারীর ওপর প্রথম পরীক্ষামূলকভাবে এই প্রতিষেধক ওষুধ প্রয়োগ করা হয়। ওই নারীর শরীরে গত ২৬ ফেব্রুয়ারি করোনাভাইরাসের উপস্থিতি ধরা পড়ে।
ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেভিস মেডিকেল সেন্টারের সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ জর্জ থম্পসন গত শুক্রবার এক বিজ্ঞানবিষয়ক সাময়িকীতে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘আমরা ভেবেছিলাম, রোগী (নারী) মারা যাবেন। তিনি ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রে প্রথম করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তি। হাসপাতালে ভর্তির ৩৬ ঘণ্টা পর চিকিৎসকেরা তাঁকে রেমডেসিভির দিয়ে চিকিৎসা করার সিদ্ধান্ত নেন। এই ওষুধ “আইভি” বা ইনজেকশনের মাধ্যমে সরাসরি রক্তে প্রবেশ করানো হয়। এটি শরীরে থাকা “আরএনএ পলিমেরাজ” নামের একটি এনজাইম বিকল করে দেয়। অনেক ভাইরাস নিজেদের অনুলিপি তৈরি করতে এই এনজাইম ব্যবহার করে। রোগীর অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় চিকিৎসকেরা কোনো ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল ছাড়াই এই প্রতিষেধক ব্যবহারের জন্য এফডিএর কাছ থেকে বিশেষ বিবেচনায় ব্যবহারের অনুমতি পেতে সক্ষম হন। “রেমডেসিভির”র ক্ষেত্রে আরও পরীক্ষা করা দরকার।’