ওয়াইম্যাক্স প্রযুক্তির ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান কিউবি বাংলাদেশ থেকে তাদের ব্যবসা গুটিয়ে নিচ্ছে। অংশীদার প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যকার টানাপড়েন কিউবির আর্থিক ভিত দুর্বল করেছে। লং টার্ম ইভল্যুশনের (এলটিই) জন্য বড় বিনিয়োগের প্রয়োজন হলেও জোগান আসছে না। এ কারণে এরই মধ্যে জনবল কমিয়ে এনেছে প্রতিষ্ঠানটি। প্রধান কার্যালয়ও গুলশান থেকে মিরপুরে স্থানান্তর করেছে। এখন বাংলালায়নে গ্রাহক স্থানান্তরের মাধ্যমে বাংলাদেশ থেকে ব্যবসাই গুটিয়ে নিচ্ছে কিউবি। ১ জুলাই, রবিবার বণিক বার্তায় প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানা গেছে।
জানা গেছে, নিজেদের মধ্যে গত মাসে সম্পাদিত এক চুক্তির ভিত্তিতে গ্রাহক হস্তান্তরের এ কার্যক্রম শুরু করেছে কিউবি ও বাংলালায়ন। চুক্তির আওতায় কিউবির গ্রাহকদের পর্যায়ক্রমে বাংলালায়নের সেবার আওতায় নিয়ে আসা হচ্ছে। রাজস্ব ভাগাভাগির ভিত্তিতে নিজেদের গ্রাহককে বাংলালায়নের কাছে হস্তান্তর করছে কিউবি। এরই মধ্যে কিউবির অনেক গ্রাহকই বাংলালায়নে স্থানান্তরের বার্তা পেয়েছেন।
বাংলালায়ন সূত্র বলছে, কিউবি সেবাটি বন্ধ করে দিচ্ছে। তারা তাদের গ্রাহকদের বাংলালায়নের কাছে হস্তান্তর করছে। কিউবি এরই মধ্যে গ্রাহকদের কয়েকটি নোটিফিকেশন দিয়েছে। আর এসব গ্রাহককে তাদের বর্তমান প্যাকেজের সঙ্গে মিলিয়ে নতুন প্যাকেজ অফার করছে বাংলালায়ন। জানতে চাইলে বাংলালায়নের চিফ মার্কেটিং অফিসার জিএম ফারুক খান বলেন, আমরা তাদের গ্রাহকদের সম্ভাব্য গ্রাহক হিসেবে ধরছি। শুধু তাদের সাহায্য নিয়ে নোটিফিকেশন দিচ্ছি। চেষ্টা করছি আরো ভালো প্যাকেজ দিয়ে তাদের বাংলালায়নের সেবার আওতায় আনতে।
বিটিআরসির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জহুরুল হক এ প্রসঙ্গে বলেন, এমনিতেই নিয়ন্ত্রক সংস্থার অনুমোদন ছাড়া নিজেদের গ্রাহক অন্য প্রতিষ্ঠানের কাছে হস্তান্তরের সুযোগ নেই। এছাড়া এমন হস্তান্তর হতে পারে দুটি প্রতিষ্ঠান একীভূত হওয়ার ক্ষেত্রে। অথবা কোনো প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম বন্ধ হলে গ্রাহকদের অন্য প্রতিষ্ঠানে চলে যাওয়ার সুযোগ দিতে পারে নিয়ন্ত্রক সংস্থা।
দ্রুতগতির তারবিহীন ইন্টারনেট সেবা দিতে ২০০৮ সালে ব্রডব্যান্ড ওয়্যারলেস অ্যাকসেস (বিডব্লিউএ) লাইসেন্স পায় কিউবি। ওই বছরের সেপ্টেম্বরে অনুষ্ঠিত নিলামের মাধ্যমে ২১৫ কোটি টাকায় এ লাইসেন্স নেয় প্রতিষ্ঠানটি। ওয়াইম্যাক্স লাইসেন্সের নিলামের ক্ষেত্রে এ দর বিশ্বের সর্বোচ্চ। উচ্চমূল্যে লাইসেন্স নেয়ার পর ব্যবসা পরিচালনার ক্ষেত্রে হুমকির মুখে পড়ে কিউবি।
বিটিআরসি সূত্রে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, ২০১৩ সালের মাঝামাঝি থেকে ধারাবাহিকভাবে গ্রাহক হারাতে শুরু করে ওয়াইম্যাক্স প্রযুক্তিনির্ভর সেবাটি। ২০১০ সালে কিউবির মোট গ্রাহকসংখ্যা ছিল ১৪ হাজার ৬৬৬। ২০১১ সালে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৮৬ হাজার ৮৩৬ ও ২০১২ সালে ১ লাখ ২৪ হাজার ৪৯৯। চলতি বছরের মে মাস শেষে প্রতিষ্ঠানটির গ্রাহক সংখ্যা ৫০ হাজারের নিচে নেমে এসেছে।