আজকের যে বিলিয়ন ডলার কোম্পানি উবার এবং ইনস্টাগ্রাম তাদেরও জন্ম হয়েছিল কোনো এক কো-ওয়ার্কিং স্পেসের ছোট্ট কোণেই । যদি তার আগে একটু ফিরে দেখি যেমন মাইক্রোসফট, অ্যাপল, গুগল, আমাজন, এইচ.পি এদের জন্ম হয়েছিল একটা গ্যারেজে। এই কথা গুলা মনে করিয়ে দেয়ার উদ্দেশ্যে হলো তারাও বাসার একটা ছোট্ট রুম থেকেই শুরু করতে পারতো কিন্তু তা না করে কেন কো-ওয়ার্কিং স্পেস বা গ্যারেজকে বেছে নিয়েছিল ? কারণ একটাই – কাজের জন্য একটা পরিবেশ লাগে আর একটা কর্ম পরিবেশ কাজের গতির পাশাপাশি প্রোডাক্টিভিটি বাড়িয়ে দেয় বহুগুন।
এবার আসা যাক কো-ওয়ার্কিং স্পেস কি, কেনইবা কো-ওয়ার্কিং স্পেসের ছোট্ট কোণেই জন্ম নিতে পারে ভবিষ্যতের অ্যাপল-ফেইসবুক:
কো-ওয়ার্কিং স্পেস হলো এমন একটা জায়গা যেখানে ভিন্ন ভিন্ন উদ্যোক্তা বা ব্যবসায়ী একটা জায়গায় বসে তাদের নিজেদের ব্যবসায়িক কাজ কর্ম করে থাকেন, শুধু কি তাই ? না – কারণ সে এই একই জায়গায় বসে ভিন্ন ভিন্ন মানুষের সাথে কথা বলতে পারে, একে অপরের সাথে আইডিয়া শেয়ার করতে পারে আর এর মাধ্যমে সে পেয়েও যেতে পারে তার ব্যবসায়িক অংশীদার । তাছাড়া কো-ওয়ার্কিং স্পেসে যখন সবাই মিলে একটা কর্ম পরিবেশে কাজ করে তখন সে কখনোই একাকিত্ব অনুভব করে না, যে কারণে কাজের গতি বেড়ে যায় । অফিস ভাইব -এর গবেষণা অনুযায়ী – কো-ওয়ার্কিং স্পেসের কর্ম পরিবেশ ৬৪% উদ্যোক্তাকে বেশি প্রোডাকটিভ করে, ৬৮% উদ্যোক্তাকে আরও বেশি ফোকাস করে কাজের প্রতি এবং ৯০% উদ্যোক্তা খুবই কনফিডেন্ট থাকে।
কেন এবং কিভাবে কো-ওয়ার্কিং স্পেসেই শুরু হতে পারে স্টার্টআপদের প্রথম স্বপ্ন যাত্রা :
একটা কথা আছে মানুষ তার স্বপ্নের মতোই বড় । একজন উদ্যোক্তাও বিরাট এক স্বপ্ন নিয়ে শুরু করে তার স্টার্টআপ ( হতে পারে ই-কমার্স, আই.টি ব্যবসা, সফটওয়্যার কোম্পানি, ট্যুরিজম ব্যবসা, ডোমেইন-হোস্টিং এবং ফ্রীলান্সার )। কিন্তু শুরুতেই একটা অফিস নিয়ে যাত্রা শুরু করা তার জন্য একটু কষ্ট সাধ্য হয়ে পড়ে কারণ অফিস নিলে শুধু অফিস ভাড়ায় নয় সেটার ইন্টেরিয়র ডিসাইন , অগ্রিম সেলামী, ফার্ণিচার, ইউটিলিটি বিল, পিয়ন, সিকিউরিটি গার্ড, রিসিপশনিষ্ট, ইন্টারনেট বিল সহ যাবতীয় খরচ বহন করতে হয়। আর এই গুলা করতে গিয়ে শুরুতেই সে তার আসল ব্যবসা থেকে দুরে সরে যাওয়ার উপক্রম হয় । তাই সে যদি একটা কো-ওয়ার্কিং স্পেসকে তার স্বপ্ন যাত্রার প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে বেছে নেয় তাহলে তাকে আর এই
বিষয় গুলোর সম্মুখীন হতে হবে না।
প্রোডাকটিভিটি বাড়াতে কো-ওয়ার্কিং স্পেস আপনাকে যা যা দিবে :
ক্রমশ কো-ওয়ার্কিং স্পেসের চাহিদা বাড়ার সাথে সাথে কো-ওয়ার্কিং স্পেসও হয়ে উঠছে সব ধরনের সুযোগ সুবিধা সমৃদ্ধ যেমন কফিশপ, কনফারেন্স রুম, মিটিং রুম, রেকর্ডিং বা ইউটিউব ষ্টুডিও, হ্যাংআউট জোন পাশাপাশি মেইল বক্স, ডেডিকেটেড ফোন লাইন, কো-ওয়ার্কিং স্পেসের ঠিকানা ব্যবহার করে নিজের কোম্পানির ভিজিটিং কার্ড, ট্রেড লাইসেন্স করা, ডকুমেন্ট প্রিন্টিং, ক্লায়েন্ট মিটিং ইত্যাদি সুবিধা রয়েছে , যা তৈরী করেছে একটা কমপ্লিট ওয়ার্কিং এনভায়রনমেন্ট যা আবার কর্মউদ্দীপনা জাগাতে সাহায্য করে, আর এই কারণেই হয়তো টেক জায়ান্ট ভেরিজন, আই.বি.এম এবং মাইক্রোসফট ভবিষ্যতের ইনোভেটিভ স্টার্টআপ বা আইডিয়া শেয়ারিংয়ের জন্য কো-ওয়ার্কিং স্পেসের সাথে পার্টনারশীপ শুরু করেছে।
কো-ওয়ার্কিং স্পেস বাছাই করার ক্ষেত্রে যা যা মাথায় রাখতে হবে:
ঢাকা শহরের মোটামুটি সব এরিয়াতেই যেমন মেরুল বাড্ডা, গুলশান, মিরপুর, মগবাজার, বনানী, উত্তরা, ধানমন্ডিতে কো-ওয়ার্কিং স্পেস আছে এবং এদের সবার সুযোগ সুবিধাও প্রায় কাছাকাছি, ২-১ টা সুবিধাতে পার্থক্য় যেমন শুধুমাত্র ‘বণিক’ একমাত্র কো-ওয়ার্কিং স্পেস যাদের অন্যান্য সব সুযোগ সুবিধার পাশাপাশি ইউটিউব ষ্টুডিও রয়েছে । তাই যাদের ই-কমার্স বিজিনেস আছে তাদের আসলে প্রোডাক্ট ফটোশুট বা প্রোমোটের জন্য ফেইসবুক লাইভ করতে হয়, তাই তাদের জন্য এই ধরনের কো-ওয়ার্কিং স্পেস বেছে নেয়া ভালো। এখানে একটা বিষয় মাথায় রাখতে হবে কো-ওয়ার্কিং স্পেস হলো একটা সার্ভিস, তাই যারা সার্ভিস ভালো দেবে সেই কো-ওয়ার্কিং স্পেসকেই বেছে নেয়ায় বুদ্ধিমানের কাজ হবে। তাছাড়া আপনি যে এলাকায় বসবাস করেন বা আপনার কোম্পানির ধরন অনুযায়ী যারা আপনাকে সর্বোচ্চ সুবিধা দেবে তাদেরকেই বেছে নেয়া।
ঢাকার ৫ টি কো ওয়ার্কিং স্পট
HIVE
01678-128088
মোড়
01733-711297
হাবঢাকা
01614-355643
শুরু ক্যাম্পাস
01700-766084
Bonik
Merul Badda
01811480832
YY Goshti
লেখক: শামীম হুসাইন, ডিজিটাল মার্কেটিং পরামর্শক।
ফেসবুক আইডি: https://www.facebook.com/iceshamimiu
লেথকের অন্য লেখা: পিসির নিরাপত্তায় এন্টিভাইরাস কতটা জরুরী