ক্রিপ্টোকারেন্সি হচ্ছে ডিজিটাল বা ভার্চুয়াল মুদ্রা যা ক্রিপ্টোগ্রাফি ব্যবহার করে নিরাপদ করা হয়। এটি বিকেন্দ্রীকৃত লেজার প্রযুক্তি ব্লকচেইনের মাধ্যমে পরিচালিত হয়। বিটকয়েন, ইথেরিয়াম, এবং লাইটকয়েনের মতো মুদ্রা বর্তমানে প্রচলিত এবং এই সেক্টরের মূল চালিকাশক্তি।
ক্রিপ্টোকারেন্সি ব্যবহারে বাংলাদেশের অবস্থান
এক দশক ধরে ক্রিপ্টোকারেন্সির ব্যবহার বিশ্বজুড়ে বাড়ছে। একটি সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে দেখা গেছে যে ক্রিপ্টোকারেন্সির ব্যবহার বাড়ছে এবং বাংলাদেশের অবস্থান ৩৫তম। এই তালিকা অনুযায়ী, ভারত, নাইজেরিয়া, এবং ইন্দোনেশিয়া শীর্ষে রয়েছে। পাকিস্তান ৯, শ্রীলঙ্কা ৭২, এবং নেপাল ৭১ নম্বরে রয়েছে। তালিকায় যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান ৪, কানাডার ১৮, এবং চীনের ২০।
ক্রিপ্টোকারেন্সি: বৈধতা এবং সমস্যা
বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ক্রিপ্টোকারেন্সির ব্যবহার নিয়ে বৈধতার নানা অবস্থা রয়েছে। ভারতে ২০১৮ সাল থেকে ক্রিপ্টোকারেন্সির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান গ্রহণ করা হয়েছে। তবে, চেনালাইসিসের প্রতিবেদনে দেখা যাচ্ছে যে নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও ভারতে ক্রিপ্টো ব্যবহার বৃদ্ধি পাচ্ছে। ভারতের আর্থিক গোয়েন্দা সংস্থা ২০২৩ সালে ৯টি অফশোর ক্রিপ্টো এক্সচেঞ্জকে জরিমানা করেছে।
বাংলাদেশে ক্রিপ্টোকারেন্সি ব্যবহারের উপর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক ২০২১ সালে ব্যবহারকারীদের ক্রিপ্টোকারেন্সি ব্যবহার থেকে বিরত থাকতে বলেছিল। কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানিয়ে দিয়েছে যে ভার্চুয়াল মুদ্রা কোন দেশের বৈধ কর্তৃপক্ষের দ্বারা ইস্যু করা হয়নি।
ক্রিপ্টোকারেন্সি আয়: সম্ভবনা ও পদ্ধতি
ক্রিপ্টোকারেন্সি আয় করার বেশ কিছু পদ্ধতি রয়েছে:
মাইনিং: বিটকয়েন বা অন্যান্য মুদ্রার জন্য মাইনিং করলে নতুন ইউনিট তৈরি করা হয়। এটি অনেক শক্তি এবং প্রযুক্তির প্রয়োজন।
ট্রেডিং: ক্রিপ্টোকারেন্সি কিনে, বিক্রি করে লাভ করা যেতে পারে। এটি দ্রুত লাভের জন্য একটি পদ্ধতি, কিন্তু এতে ঝুঁকিও রয়েছে।
স্টেকিং: কিছু ক্রিপ্টোকারেন্সি আপনাকে স্টেকিংয়ের মাধ্যমে আয় করার সুযোগ দেয়। এতে আপনি আপনার মুদ্রা সিস্টেমে লক করে রেখে কিছু কমিশন বা পুরস্কার পেতে পারেন।
ইনভেস্টমেন্ট: দীর্ঘমেয়াদী ইনভেস্টমেন্টে ক্রিপ্টোকারেন্সির মান বাড়লে লাভ করা যেতে পারে। তবে এটি উচ্চ ঝুঁকির সাথে আসে।
বাংলাদেশে ক্রিপ্টোকারেন্সির বৈধতা এবং ভবিষ্যৎ
ক্রিপ্টোকারেন্সির বৈধতা নিয়ে বাংলাদেশে অস্থিতিশীলতা রয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক ইতিমধ্যেই ক্রিপ্টোকারেন্সির ব্যবহার নিষিদ্ধ করেছে এবং এটি আইনিভাবে অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হতে পারে। যদিও কিছু দেশের মতো বাংলাদেশে ক্রিপ্টোকারেন্সির ব্যবহারে পারসেপশন পরিবর্তিত হতে পারে, তবে বর্তমান পরিস্থিতিতে এটি এখনও সীমিত।
ক্রিপ্টোকারেন্সি একটি আধুনিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থা যা বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। যদিও বাংলাদেশে এর বৈধতা সীমিত, বিশ্বজুড়ে ক্রিপ্টোকারেন্সির ব্যবহার ও প্রবণতা ক্রমবর্ধমান। এটি একটি দ্রুত পরিবর্তনশীল ক্ষেত্র যা প্রতিনিয়ত নতুন চ্যালেঞ্জ এবং সুযোগ প্রদান করছে।