জনপ্রিয় গান মানেই জমজমাট ব্যবসা। তাইতো গীতিকারদের এত তোয়াজ। জনপ্রিয় গান তৈরিতে গীতিকারেরা যাতে প্রয়োজনীয় মাল-মশল্লা ঢালেন তার জন্য পয়সাও খরচ করে মিউজিক কোম্পানিগুলো। তবে সব গান কি আর জনপ্রিয় হয়? শ্রোতাদের কোন গান ভালো লাগবে বা কোন গান রাতারাতি জনপ্রিয়তা পাবে তা ঠিক করা কঠিন। কারণ, গানে বিভিন্ন উপাদানের জটিল মিশ্রণ থাকে। সেগুলো কিভাবে বিচার বিশ্লেষণ করা হবে তা সুনির্দিষ্ট করা নেই। আবার জনপ্রিয় গানের ধারা বিভিন্ন সময় বিভিন্ন রকম হয় বলে তা ঠিক করা আরও কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। কিন্তু এই কঠিন কাজটিকেই সহজ করার চেষ্টা করেছেন ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়া, আরভিনের গণিতবিদ নাতালিয়া কোমারোভা। চলতি সপ্তাহে তিনি ‘রয়্যাল সোসাইটি ওপেন সায়েন্স’ সাময়িকীতে এ নিয়ে নিবন্ধ লিখেছেন। তাঁর লেখায় গান জনপ্রিয় হওয়ার পেছনের কিছু তথ্য জানা গেছে।
গানের জনপ্রিয়তার পেছনে ঘাঁটতে গিয়ে নাতালিয়া কম্পিউটার বিশ্লেষণ পদ্ধতি ব্যবহার করেছেন। তাতে দেখা গেছে, বর্তমানে যেসব গানে নাচ করা যায়, বা অনুষ্ঠানে চালানো যায় সেগুলোই গ্রাহকদের টানে বেশি। কোমারোভা ও তাঁর সহকর্মীরা গানের জনপ্রিয়তার কারণ খুঁজতে ১৯৮৫ সাল থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত যুক্তরাজ্য উন্মুক্ত হওয়া গানের তথ্য সংগ্রহ করেন। এ কাজে তারা গানপ্রেমী ও একাডেমিক কাজের উপযোগী প্রকাশ্য গানভাণ্ডারের মেটাডাটা ব্যবহার করেন। জনপ্রিয় গানগুলো কিভাবে তালিকার শীর্ষে এসেছে তার সঙ্গে এসব তথ্যভাণ্ডারের মেটাডাটার সঙ্গে তুলনা করে দেখেন তাঁরা। মেটাডাটা হচ্ছে-গানের ধরণ সম্পর্কিত তথ্য যা থেকে শ্রোতারা ওই গান সম্পর্কে আগাম ধারণা পান।
গবেষকেরা গানের মেটাডাটা ধরে জনপ্রিয় গান হিসেবে শীর্ষে থাকা গানের সঙ্গে ফ্লপ বা অজনপ্রিয় গানের তুলনা করেন। তাঁরা দেখতে পান, সুখের গান তৈরি হয় কম। দুঃখের গানই বেশি। যুক্তরাজ্যে গত তিন দশকে ‘হ্যাপি’ ও ‘ব্রাইট’ ট্যাগের বা সুখ ও আনন্দময় ধরনের গান দুর্লভ হয়ে গেছে। এর বদলে দুঃখের গান হামেশাই হচ্ছে। তবে, জনপ্রিয় গানের তালিকার ক্ষেত্রে এ বিষয়টির প্রতিফলন দেখা যায় না। গানের তালিকায় শীর্ষে আছে যেসব গানে বেশি আনন্দ-উচ্ছাস হয়েছে সেগুলোই। একই বছরে মুক্তিপাওয়া গানের গড়পড়তা জনপ্রিয় গানের চেয়ে কম স্বচ্ছন্দের বা হালকা গানগুলোই বেশি জনপ্রিয় হয়েছে। টপচার্টের অধিকাংশ গান নারীশিল্পীদের গাওয়া।