নভেল করোনাভাইরাসের সংক্রমণ এড়াতে সব বন্ধ করে দিয়ে সবাইকে ঘরে থাকার নির্দেশে জীবনযাত্রায় কতটা প্রভাব পড়েছে, গুগল তা বোঝার চেষ্টা করেছে ফোনের লোকেশন ডেটা বিশ্লেষণ করে। বাংলাদেশসহ ১৩০টি দেশে সাধারণ জনসমাগমের স্থানগুলোতে ১৬ ফেব্রুয়ারি থেকে ২৯ মার্চের মধ্যে মানুষের চলাচল কতটা কমেছে, তার একটি চিত্র উঠে এসেছে গুগলের এই প্রতিবেদনে।
তাতে দেখা যাচ্ছে, রেস্তোরাাঁ, ক্যাফে, শপিং মল, থিম পার্ক, জাদুঘর, লাইব্রেরি ও সিনেমা হলের মত জায়গায় ১৬ ফেব্রুয়ারির তুলনায় ২৯ মার্চ পর্যন্ত মানুষের আনাগোনা কমেছে ৬৮ শতাংশ। চীনের উহান থেকে ছড়াতে শুরু করা নভেল করোনাভাইরাস মাত্র তিন মাসে ছড়িয়ে পড়েছে ১৮১টি দেশে। জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের হিসাবে সারা বিশ্বে ১০ লাখের বেশি মানুষ এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন, মৃতের সংখ্যা ৫৪ হাজার ছাড়িয়ে গেছে।
অতিমাত্রায় ছেঁয়াচে এ ভাইরাসের সংক্রমণ কমাতে অনেক দেশের মত বাংলাদেশেও গত ২৬ মার্চ থেকে অফিস আদালত, বিপণি বিতান, যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দিয়ে সবাইকে ঘরে থাকতে বলা হচ্ছে। গুগলের প্রতিবেদন বলছে, এই আদেশের ফলে বাংলাদেশে কাঁচা বাজার, মুদি দোকান, খাবারের দোকান, ফার্মেসিতে মানুষের যাতায়াত কমেছে ৪৬ শতাংশ।
পার্ক, সমুদ্র সৈকত, উদ্যান বা মুক্ত এলাকা- যেসব জায়গায় মানুষ বিনোদনের জন্য যায়, সসেব জায়গায় এই সময়ে যাতায়াত ২৬ শতাংশ কমেছে । গণপরিবহন, বাস টার্মিনাল, রেলওয়ে স্টেশনের মত জায়গা, যেখানে প্রায় সব সময় ভিড় লেগে থাকে, তেমন জায়গাগুলোতেও এখস মানুষের আনাগোনা ৬৬ শতাংশ কমে গেছে।
অফিসপাড়া, কলকারখানা বা যেসব জায়গায় মূলত কর্মজীবীদের আনাগোনা বেশি, সেসব এলাকায় মানুষের চলাচল কমেছে ৬০ শতাংশ। এর বিপরীতে আবাসিক এলাকাগুলোতে মানুষের চলাচলের চিহ্ন বেড়েছে ২৪ শতাংশ।
করোনাভাইরাসে সবচেয়ে বেশি মৃত্যু যে দেশে ঘটেছে, সেই ইতালিতে রেস্তোরাাঁ, ক্যাফে, শপিং মলে ৯৪ শতাংশ; পার্ক, সৈকত, উদ্যান বা খোলায় জায়গায় ৯০ শতাংশ; বাজার, দোকান, ফার্মেসিতে ৮৫ শতাংশ এবং কর্মক্ষেত্রে ৬৩ শতাংশ কমেছে মানুষের আনাগোনা। আবাসিক এলাকায় বেড়েছে ২৪ শতাংশ।
ঘরে থাকার নির্দেশ বাস্তবায়ন করতে গিয়ে বিভিন্ন দেশের সরকারকে যে বেগ পেতে হচ্ছে, সে ধারণাও পাওয়া যাচ্ছে গুগলের এই বিশ্লেষণ থেকে। সিঙ্গাপুর ও যুক্তরাজ্যের মত দেশে যেখানে যাতাযাতে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে, সেখানে সুপার শপ-মুদি দোকানে মানুষের যাতায়াত বেড়ে গেছে। আবার যুক্তরাষ্ট্রের স্যান ফ্রান্সিকোর কিছু এলাকায় মানুষের ঘোরাঘুরি বেড়ে গেছে পার্কে।