বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে (এপ্রিল-জুন) ৩,৩০৭ কোটি টাকা রাজস্ব অর্জন করেছে গ্রামীণফোন। মোবাইল অপারেটর কোম্পানিটি বলছে, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৮.২% কম। ২২% মার্জিন নিয়ে এ সময়ে প্রতিষ্ঠানের কর পরবর্তী মুনাফা দাঁড়িয়েছে ৭৩০ কোটি টাকা। দ্বিতীয় প্রান্তিকে শেয়ার প্রতি আয় হয়েছে ৫.৩৮ টাকা। গ্রামীণফোনের মোট গ্রাহক সংখ্যা ৭কোটি ৪৫ লাখ যার ৫৪.৮ % বা ৪ কোটি ৮ লাখ ইন্টারনেট ব্যবহারকারী।
গ্রামীণফোনের সিইও ইয়াসির আজমান বলেন, “বিগত চার মাস ধরে একটি নজিরবিহীন বৈশ্বিক মহামারি আমাদের কাজের ধরনের উপর ব্যপক প্রভাব ফেলেছে। আমাদের কাজের ধরন থেকে শুরু করে গ্রাহক সেবা নিশ্চিত করতে ব্যাপক পরিবর্তন আনতে হয়েছে। কভিড-১৯ এর সাথে বৈরি আবহাওয়া ও রেগুলেটরি বাস্তবতার কারণে গত বছরের তুলনায় ২০২০ সালের দ্বিতীয় প্রান্তিকে রাজস্ব অর্জনের নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। ”
“এই চ্যালেঞ্জিং সময়ে সকল প্রতিকূলতা সত্বেও আমরা দেশব্যাপী জরুরী সেবা নিশ্চিত করতে আমারা নিরবিচ্ছিনভাবে মোবাইল টেলিযােগাযোগ সেবা অব্যাহত রাখতে সমর্থ হয়েছি। সাইক্লোন আমফানের বৈরি আবহাওয়ার সময় আমরা পার্টনার, স্টেকহোল্ডার, আইন-শৃংখলা বাহিনী, স্থানীয় সামাজিক প্রতিনিধিদের সাথে নিয়ে এক সাথে কাজ করেছি এবং ক্ষতিগ্রস্ত নেটওয়ার্ক দ্রুততার সাথে পুনস্থাপন করতে সমর্থ হয়েছি।“
আজমান আরও বলেন, কভিড-১৯ মোকাবিলায় আমরা আমাদের সহযোগীদের নিয়ে নানা উদ্যোগ গ্রহন করেছি। ব্র্যাকের সাথে যৌথ উদ্যোগ “ডাক আমার দেশ” এর মাধ্যমে আমরা ১০০,০০০ পরিবারকে জরুরি খাদ্য সহায়তা প্রদান করেছি। বিভিন্ন হাসপাতালে সম্মুখযোদ্ধা করোনা চিকিৎসকদের আমরা পিপিই প্রদান করেছি। প্রাতিষ্ঠানিক পরিবর্তন ও আধুনিকায়ন কার্যক্রমের মাধ্যমে বিগত কয়েক বছরে আমরা কাজ করার নতুন নতুন পদ্ধতি দ্রুততার সাথে বাস্তবায়নের দক্ষতা অর্জন করেছি। এই মহামারির সময়ে ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহার করে নিরাপদে বাসায় থেকে কর্মীদের কাজ করার উৎসাহ দিচ্ছি।”
গ্রামীণফোনের সিএফও ইয়েন্স বেকার বলেন, “সাধারণ ছুটি থাকায় দেশের অর্থনীতির শ্লথ গতির কারনে ২০২০ সালের দ্বিতীয় প্রান্তিকে গ্রামীণফোন চ্যালেঞ্জিং সময় পার করেছে। তবে মে থেকে অবস্থার কিছুটা পরিবর্তন শুরু হয়েছে। ইন্টারনেট সেবায় প্রবৃদ্ধি ঠিক থাকলেও দ্বিতীয় প্রান্তিকে রাজস্ব অর্জন ও নেটওয়ার্কে গ্রাহক সংখ্যায় নেতিবাচক প্রবৃদ্ধি দেখেছি। তবে দেশের প্রযুক্তিখাতের উন্নয়নে আমাদের বিনিয়োগ অব্যাহত থাকবে, একই সাথে কভিড-১৯ মোকাবিলায় সরকারকে আমাদের প্রযুক্তি সহযোগিতাও অব্যাহত থাকবে। আমরা আনন্দের সাথে জানাচ্ছি যে গ্রামীণফােনের পরিচালনা পর্ষদ পরিশোধিত মূলধনের ১৩০% অর্ন্তবর্তী লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে।”
দ্বিতীয় প্রান্তিকে গ্রামীণফোন নেটওয়ার্ক উন্নয়নে ২৫০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছে। এ সময়ে ১৩২টি নতুন ফোরজি সাইট স্থাপন করা হয়েছে। জুন শেষে মোট নেটওয়ার্ক সাইটের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৬,৫৫৭। দ্বিতীয় প্রান্তিক পর্যন্ত গ্রামীণফোন সরকারের কোষাগারে কর, ডিউটি, ফিস ও স্পেকটার্ম চার্জ বাবদ মোট রাজস্বের ৬৭% বা ৪,৬৪০ কোটি টাকা জমা দিয়েছে।