চলতি বছরের মধ্যেই দেশের চার হাজার ইউনিয়নে দ্রুতগতির ইন্টারনেট সেবা সরবরাহ নিশ্চিত করা হবে। গ্রাম ও শহরের ব্যবধান কমিয়ে ডিজিটাল প্লাটফর্মকে আরও প্রসারিত করতেই সরকার এই উদ্যোগ নিয়েছে বলে জানিয়েছেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক।
মঙ্গলবার ঢাকার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ‘দারাজ সেলার সামিটে’ একথা জানান তিনি। তিনি বলেন, ‘গত নয় বছরে বাণিজ্যিক ও সরকারি কার্যক্রমের জন্য আমরা জেলা-উপজেলা থেকে শুরু করে দুই হাজার ইউনিয়নে ফাইবার অপটিক কেবল ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টার পর্যন্ত নিয়ে গিয়েছি। ২০১৮ এর মধ্যে আমরা প্রায় চার হাজার ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টার পর্যন্ত দ্রুত গতির ইন্টারনেট নিয়ে যাব।’
বর্তমানে দেশে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা নয় কোটি জানিয়ে পলক বলেন, ‘১৬ কোটি মানুষের মধ্যে নয় কোটিই ইন্টারনেট ব্যবহারকারী। আজ থেকে নয় বছর আগে ২০০৮ এ দেশে যেটা ছিল মাত্র নয় লাখ, নয় বছরের ব্যবধানে তা নয় লাখ থেকে নয় কোটিতে উন্নীত হয়েছ।’
ইন্টারনেটের খরচ কমানোর ফলেই ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা বেড়েছে বলে মনে করেন তিনি। পলক বলেন, ‘ইন্টারনেট সংযোগ সহজলভ্য ও সুলভ মূল্যে সবার কাছে পৌঁছে দিতে না পারলে আমরা ই-কমার্স বা ডিজিটাল প্লাটফর্ম করতে পারব না।’ বর্তমানে থ্রি-জি ও ফোর জি ইন্টারনেট সংযোগ ঢাকা ও এর বাইরে রয়েছে বলে জানান তিনি।
পলক বলেন, ‘দারাজ সারাদেশে তিন হাজার হাব তৈরি করেছে যেখানে তারা যে কোনো পণ্য লেনদেন করতে পারবে। এই তিন হাজার পার্টনারদের সাথে আমরা যদি পাঁচ হাজার দুইশ ৭২টি ডিজিটাল সেন্টারকে যুক্ত করতে পারি, তাহলে আমরা শহর আর গ্রামের মধ্যে বৈষম্য কমিয়ে ডিজিটাল বিপ্লব ই-কমার্সের ক্ষেত্রে করতে পারব।’
প্রতিমন্ত্রী বলেন, “প্রতিনিয়ত প্রযুক্তির পরিবর্তন হচ্ছে। এখন ডিজিটাল প্লাটফর্মে চলে এসেছে। আলিবাবার বিনিয়োগ এসেছে, আমেরিকা-চীনে যে ধরনের ইমার্জিং টেকনোলজি ব্যবহার হচ্ছে, আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ব্যবহার করে আমাদের ইউজার এক্সপেরিয়েন্স আরও ভালো করতে হবে। পাশাপাশি আমাদের এই পুরো ডিজিটাল প্লাটফর্মকে নিরাপদ করতে হবে।”
চীনের আলিবাবা ও আমেরিকার আমাজনের মতো বাংলাদেশে দারাজ ই-কমার্সে নেতৃত্ব দেবে বলে আশা প্রকাশ করেন পলক। তিনি বলেন, ডিজিটাল কমার্স পলিসি প্রণয়নের ফলে বিদেশি বিনেয়োগ ও ই-কমার্স সম্প্রসারণের দ্বার আরও বেশি উন্মুক্ত হবে।
অনুষ্ঠানে দারাজ বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ মোস্তাহিদুল হক বলেন, “বিগত দুই বছরে দারাজের গ্রোথ হয়েছে তিন থেকে চার গুণ। এই গ্রোথের পেছনে সবচেয়ে বড় অবদান রেখেছে সেলাররা।”
আলিবাবার টেকনোলোজি সেলারদের কাছে ছড়িয়ে দিতেই প্রথমবারের মতো আয়োজন করা হয়েছে ‘দারাজ সেলার সামিট’। আগামীতে প্রতি বছরে একটি করে সেলার সামিট করা হবে বলে জানান মোস্তাহিদুল।
বর্তমানে দারাজের সেলার সংখ্যা চার হাজারের বেশি, পণ্যের সংখ্যা প্রায় ৫ লাখ এবং গ্রাহক সংখ্যা ১৪ লাখ। গত ৮ মে দক্ষিণ এশিয়ার ই-কমার্স কোম্পানি দারাজ গ্রুপকে কিনে নেয় বিশ্বজুড়ে পরিচালিত চীনা ই-কমার্স কোম্পানি আলিবাবা। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন দারাজ গ্রুপের কো-সিইও বিয়ারকে মিকেলসন এবং টেন মিনিট স্কুলের উদ্যোক্তা আয়মান সাদিক।