করোনাভাইরাসের প্রভাবে চীনা নির্মাতাদের তৈরি স্মার্টফোন বিক্রি কমে গেছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ক্ষতির মুখে পড়বে হুয়াওয়ে। চলতি বছরের প্রথম তিন মাসেই দেশটিতে স্মার্টফোন বিক্রি ২০ শতাংশ পর্যন্ত কমে যেতে পারে। বাজার গবেষণা প্রতিষ্ঠান কাউন্টারপয়েন্টের বিশেষজ্ঞরা গত বৃহস্পতিবার এ তথ্য জানান। তাঁরা বলেছেন, বিশ্বের বৃহত্তম স্মার্টফোন বাজারে স্মার্টফোন বিক্রির হার অর্ধেকে নেমে আসতে পারে। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
হংকংভিত্তিক কাউন্টারপয়েন্টের দেওয়া পূর্বাভাস এশিয়ার চিপ ও মোবাইল ফোন শিল্পে ব্যাপক ব্যবহৃত হয়। নতুন প্রতিবেদনে কাউন্টারপয়েন্ট জানিয়েছে, করোনাভাইরাসের প্রভাবে চীনের অফলাইন বাজারে স্মার্টফোন বিক্রি ৫০ শতাংশ কমতে পারে। এ ছাড়া প্রথম প্রান্তিকে সর্বমোট ফোন বিক্রি ২০ শতাংশ কমবে।
কাউন্টারপয়েন্টের বিশেষজ্ঞ টম ক্যাং বলেন, মার্চ মাস পর্যন্ত ভাইরাসের প্রভাব থাকবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। চীনের ব্যবসা কার্যক্রম স্বাভাবিক হতে আরও দুই মাসের বেশি সময় লাগবে বলে মনে করা হচ্ছে। এতে বছরের প্রথম প্রান্তিকেই চীন ও বৈশ্বিক স্মার্টফোন বাজারে নেতিবাচক প্রবৃদ্ধির বিষয়টি আশঙ্কা করা হচ্ছে।
করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব চীনে অর্থনীতির ওপর বিশেষ চাপ সৃষ্টি করবে বলে মনে করা হচ্ছে। এতে নতুন বছরের শুরুর পর থেকেই চীনা প্রতিষ্ঠানগুলোকে উৎপাদন প্রক্রিয়ায় ফিরতে কষ্ট করতে হবে।
কাউন্টারপয়েন্টের বিশেষজ্ঞ ফ্লোরা ট্যাং বলেন, অফলাইন ফোন বিক্রির ওপর নির্ভরশীল হওয়ায় হুয়াওয়ের পাশাপাশি চীনা স্মার্টফোন নির্মাতা অপো ও ভিভোর ওপরেও প্রভাব পড়বে। তবে অনলাইনকেন্দ্রিক বিক্রির চ্যানেল থাকায় শাওমি, ওয়ানপ্লাস ও রিয়েলমির ওপর প্রভাব পড়বে কম।
গত বৃহস্পতিবার শাওমির পক্ষ থেকে বলা হয়, করোনাভাইরাসের কারণে তাদের প্রথম প্রান্তিকের স্মার্টফোন বিক্রিতে প্রভাব পড়বে। তবে বছরের দ্বিতীয় ও তৃতীয় প্রান্তিকে চাহিদা আবার আগের জায়গায় ফিরবে বলে মনে করছে তারা।
বাজার গবেষণা প্রতিষ্ঠান ক্যানালিস এ সপ্তাহের শুরুর দিকে এক প্রতিবেদনে বলেছিল, চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে চীনা স্মার্টফোনের চাহিদা অর্ধেকে নেমে যাবে। আরেক গবেষণা প্রতিষ্ঠান আইডিসির পূর্বাভাস বলছে, চীনা স্মার্টফোন বিক্রি ৩০ শতাংশ পর্যন্ত কমবে। চীনের তিন শীর্ষ অ্যান্ড্রয়েড ব্র্যান্ড শাওমি, হুয়াওয়ে ও অপো এ বছরের প্রথম তিন মাসে নতুন স্মার্টফোনের ঘোষণা দিতে পারে।
কাউন্টারপয়েন্টের পূর্বাভাস অনুযায়ী, করোনার প্রভাব অ্যাপলের ওপরেও পড়বে। ১৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত স্টোরে আইফোন বিক্রি বন্ধ রাখায় ১০ লাখ আইফোন বিক্রি কমে যাবে।