জ্যোতিপদার্থবিজ্ঞান শুনলেই আমাদের চোখের সামনে ভেসে ওঠে নানা রঙের ফুলঝুরি ছড়ানো কিছু ছবি, টেলেস্কোপ, তারা, ছায়াপথ, মহাকাশ নিয়ে নানান সুন্দর ফিচার। কিন্তুযারা সত্যিকার গবেষণা করেন তাদের কাছে জোতিপদার্থবিজ্ঞান কেমন? এতদূরে বসে তারা কীভাবেই বা জানলেন ওইসব দূর নক্ষত্রের খবর?
যারা জোতির্বিজ্ঞানে কাজ করেন তাদের জগত কেবল ডেটা, গ্রাফ, কোডিং আরকম্পিউটার। বিভিন্ন টেলিস্কোপ বিভিন্ন সময়ে আকাশের বিভিন্ন অংশের উজ্জ্বলতার আর বর্ণালীর ডাটা নেয়। এরকম বিপুল পরিমান ডেটা বিজ্ঞানীরা বিশ্লেষণ করেআমাদের মহাকাশ সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নেন।
১৬ ও ১৭ আগস্ট তারিখে তারিখে মাকসুদুল আলম বিজ্ঞানাগারে (ম্যাসল্যাব) অনুষ্ঠিত হয় জ্যোতির্বিজ্ঞান ও জ্যোতিপদার্থবিজ্ঞান গবেষণা পরিচিতি শীর্ষক কর্মশালা ।
এই কর্মশালাটি আয়োজন করে বাংলাদেশ বিজ্ঞান জনপ্রিয়করণ সমিতি। এই কর্মশালায়সহযোগিতা করছে জার্মানির বিখ্যাত গবেষণা প্রতিষ্ঠান ম্যাক্স প্লাঙ্ক ইন্সটিটিউটফর অ্যাস্ট্রোনমি এবং হাউজ অফ অ্যাস্ট্রোনমি। এতে অংশ নেন বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজের শিক্ষার্থীরা। দুইদিনব্যাপী এই কর্মশালায় বিভিন্ন অ্যাস্ট্রোনমিকাল ডেটাবেজ ব্যবহারের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। ডেটাবেজের তথ্য ব্যবহার করে বোধগম্য গ্রাফ ও সিদ্ধান্ত নেবার পদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা প্রদান করা হয় এই কর্মশালায়। বিভিন্ন কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এসকল পদ্ধতি ব্যবহারে হাতে কলমে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে।
কর্মশালায় TOPCAT সফটওয়ার ব্যবহার করে অ্যাস্ট্রোনমিকাল ডেটাবেজে প্রবেশ করা এবং প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহ করার পদ্ধতি শেখান হয়। গায়া (GAIA) স্যাটেলাইট এবং সুপারনোভার উপাত্ত থেকে গ্রাফ বানানো, নতুন তথ্য বের করা এবং সিদ্ধান্ত গ্রহন করা শেখেন অংশগ্রহনকারীরা। তাদের CDS Services ব্যবহার করার বিভিন্ন দিক সম্পর্কেও ধারণা দেয়া হয়।
কর্মশালায় প্রশিক্ষক হিসেবে ছিলেন কোরিয়া অ্যাডভান্সড ইন্সটিটিউট অফ সাইন্স অ্যান্ড টেকনোলজির (KAIST) পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী ইশতিয়াক আকিব।
তিনি ম্যাক্স প্লাঙ্ক ইন্সটিটিউট ফর অ্যাস্ট্রোনমিতে রিসার্চ ইন্টার্ন হিসেবে কাজকরেছেন। তার সহযোগী ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞানের শিক্ষার্থী
গৌতম চন্দ্র পাল। কার্মশালা শেষে অংশগ্রহণকারী সকল শিক্ষার্থীকে বাংলাদেশ বিজ্ঞান জনপ্রিয়করন সমিতি, ম্যাসল্যাব, ম্যাক্স প্লাঙ্ক ইন্সটিটিউট ফর অ্যাস্ট্রোনমি ও হাউজ অফ অ্যাস্ট্রোনমির পক্ষ হতে সার্টিফিকেট ও ভালো ফলাফলের ভিত্তিতে পুরস্কার প্রদান করা হয়। কর্মশালায় অংশগ্রহনকারীদের পরবর্তীতে ম্যাসল্যাব এবং ম্যাক্স প্লাঙ্ক ইন্সটিটিউটের পক্ষ হতে পরিচালিত গবেষণায় অংশ নেওয়ার সুযোগ দেয়া হবে।