বাংলাদেশ ডাক বিভাগের সেবা ও দেশের অন্যতম জনপ্রিয় মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস ‘নগদ’ প্রতিবছরের মতো এবারও রাজস্ব ভাগাভাগি করেছে। ২০২১-২২ অর্থ বছরের আয় থেকে ৪ কোটি ৫০ লাখ ৪৬ হাজার টাকার রাজস্ব ডাক বিভাগেকে বুঝিয়ে দিয়েছে ‘নগদ’।
আজ বুধবার আগারগাঁওয়ে ডাক ভবনে এক অনুষ্ঠানে ‘নগদ’ কর্তৃপক্ষ ডাক বিভাগের প্রাপ্য অংশের চেক হস্তান্তর করে। অনুষ্ঠানে মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস ‘নগদ’-এর নির্বাহী পরিচালক মো. সাফায়েত আলমের হাত থেকে চেকটি গ্রহণ করেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব মো. খলিলুর রহমান। এ সময় ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার, ডাক অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. হারুনুর রশীদ, ‘নগদ’-এর প্রতিষ্ঠাতা ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক তানভীর এ. মিশুকসহ ‘নগদ’-এর শীর্ষ কর্মকর্তারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
‘নগদ’ লিমিটেড ও ডাক বিভাগের চুক্তি অনুযায়ী, ‘নগদ’-এর সেবা থেকে মোট আয়ের ৫১ শতাংশ রাজস্ব পাবে বাংলাদেশ ডাক বিভাগ। আর বাকি ৪৯ শতাংশ রাজস্ব পায় ‘নগদ’ লিমিটেড। এর আগে ২০১৯-২০ অর্থ বছরে ১ কোটি ১২ লাখ টাকা ও ২০২০-২১ অর্থ বছরে ৩ কোটি ৩১ লাখ ৯৪ হাজার ৮৭৭ টাকার রাজস্ব ডাক বিভাগকে বুঝিয়ে দিয়েছে ‘নগদ’।
চেক গ্রহণ অনুষ্ঠানে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের মাননীয় মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেন, ‘আমার কাছে মনে হয়েছে, নগদ-এর অস্তিত্বই দেশের হাজার হাজার কোটি টাকা বাঁচিয়েছে। দেশে ভালো কাজ করলে পা ধরে নামানোর চেষ্টা করা হয়। নগদ কেবল দেশের কাজ করেনি, অনেকের স্বার্থেও আঘাত করেছে। নিজেদের স্বার্থ হাসিলের জন্য অনেকে ঘায়েল করার চেষ্টা করবে। আমরা শুরু থেকে নগদ-এর সাথে ইতিবাচক ছিলাম, আছি, থাকব।’ তিনি বলেন, ‘নগদ সম্পর্কে অনেক বিভ্রান্তি ও ভুল তথ্য আছে। সেসব সম্পর্কে সচেতন হতে হবে। শুধু নগদ ও বিকাশের লেনদেনের মধ্যে যে পরিমাণ ক্যাশ আউট চার্জের পার্থক্য আছে, সেটা কয়েক হাজার কোটি টাকা। এই কৃতিত্ব তো নগদ-কে দিতে হবে। দেশ ও জাতির জন্য নগদ-কে প্রয়োজন।’
ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের মাননীয় মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার আরও বলেন, মানুষের ধাক্কার জন্য নগদ পড়ে যাবে, এটা বিশ্বাস করার সুযোগ নাই। মানুষ চেষ্টা করবে, কিন্তু আমাদের পরাজিত করতে পারবে না। আমাদের বিরুদ্ধে নানাভাবে অপপ্রচার করা হয়েছে। কিন্তু আমরা মনে করি এসব অপপ্রচার আমাদের কাছে কোনো বিষয় না। তিনি নগদ-কে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, ‘নগদ ডাক বিভাগের একটি সেবা। নগদ-এর যখন অর্জন হয়, তখন সেটি ডাক বিভাগের অর্জন হয়। নগদ-এর প্রবৃদ্ধি হয়, আমারও প্রবৃদ্ধি হয়। এটি তো আমার জন্য একটি বোনাস।’
ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব মো. খলিলুর রহমান বলেন, ‘আমাদের পেছনে শত্রু আগে ছিল, এখনো আছে। আমি মনে করি যে, শত্রু শেষ হয়ে যাবে না, এটা চলতে থাকবে। এরমধ্য দিয়ে কাজ করে যেতে হবে।’ তিনি বলেন, ‘আমি এখানে (নগদ-এর সাথে ডাক অধিদপ্তরের) কোনো ঝামেলা দেখছি না, সবই স্পষ্ট আছে। আজকের মেসেজটা যখন নিউজ আকারে যাবে, তখন একটি স্পষ্ট জবাব দেওয়া সম্ভব হবে।’
এ সময় ‘নগদ’-এর প্রতিষ্ঠাতা ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক তানভীর এ মিশুক বলেন, ‘আমরা প্রতি বছরের মতো এবারও ডাক অধিদপ্তরকে তার রাজস্বের অংশ ভাগাভাগি করলাম। ডাক অধিদপ্তর ও নগদ-এর মধ্যে করা চুক্তি ৫১ ও ৪৯ শতাংশ অনুসারে এই রাজস্ব ভাগাভাগি করা হলো।’
২০১৯ সালের মার্চে যাত্রার পর থেকেই ডাক বিভাগের সেবা হিসেবে সাধারণ মানুষের আস্থা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে ‘নগদ’। পিছিয়ে পড়া মানুষকে অর্থনৈতিক অন্তৰ্ভুক্তিতে এনে দেশের ডিজিটাল আর্থিক খাতে বিপ্লব ঘটিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।
‘নগদ’ দেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো অ্যাকাউন্ট ওপেনিং পদ্ধতিতে ই-কেওয়াইসি ও ডি-কেওয়াইসি উদ্ভাবন করে। পাশাপাশি সর্বনিম্ন ক্যাশ আউট চার্জ, সেন্ড মানি ফ্রিসহ এমন আরও অনেক অত্যাধুনিক সব সেবার মধ্য দিয়ে আর্থিক খাতে পরিবর্তন ঘটিয়েছে ‘নগদ’। ফলে মাত্র সাড়ে তিন বছরে ‘নগদ’ জনমানুষের ওয়ালেট হিসেবে পরিণত হয়েছে।
দেশের সাধারণ মানুষ এখন যেকোনো সময় যেকোনো জায়গা থেকে উপভোগ করতে পারছে মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসের প্রকৃত সেবা। এ ছাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষা ভাতা থেকে শুরু করে, সরকারের বিভিন্ন সহায়তা ও ভাতার টাকা অত্যন্ত স্বচ্ছভাবে উপকারভোগীদের কাছে পৌঁছে দিচ্ছে ‘নগদ’।
অত্যাধুনিক সব উদ্ভাবন ও সাশ্রয়ী সেবার জন্য ‘নগদ’ ইতিমধ্যেই অর্জন করেছে বহু জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পুরস্কার।