গ্রামীণফোনের গ্রাহক ১০ সেকেন্ডের চেয়েও কম সময়ে খুলতে পারছেন মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সেবা ‘নগদ’ এর অ্যাকাউন্ট। সম্প্রতি সেবাটি পরীক্ষামূলকভাবে চালু করা হয়েছে। আগামী দু’এক সপ্তাহের মধ্যে এটি আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হবে বলে জানিয়েছে কোম্পানি দুটির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
এই প্রক্রিয়ায় বায়োমেট্টিক পদ্ধতিতে পরিচয় ভ্যারিফাইড করা গ্রামীণফোনের যে কোনো গ্রাহক কেবল *১৬৭# ডায়াল করেলেই ‘নগদ’ অ্যাকাউন্ট খুলতে পারবেন। তবে প্রক্রিয়ার মধ্যে গ্রাহককে কেবল চার ডিজিটের একটি পিন সেট করলেই অ্যাকাউন্ট খোলা হয়ে যাবে।
কোনো গ্রাহক যদি ‘নগদ’ এর অ্যাকাউন্টটি অ্যাপের মাধ্যমে ব্যবহার করতে চান তাহলে ‘নগদ’ এর অ্যাপটি ডাউনলোড করে সেখানে অ্যাকাউন্টটি অ্যাকটিভ করতে হবে।
মোবাইল ফোনে অন্যান্য যে কোনো অ্যাপ ডাউনলোডের পর অ্যাকাউন্টটি অ্যাপে অ্যাক্টিভ করতে যেভাবে মোবাইল নম্বর দেওয়ার পর একটি ভেরিফিকেশন কোড আসে এখানেও সেভাবে ভেরিফিকেশন কোডিটি সেট করলেই অ্যাকাউন্টটি অ্যাপে চালু হয়ে যাবে। ইতিমধ্যে গ্রামীণফোনের অসংখ্য গ্রাহক এই প্রক্রিয়ায় ‘নগদ’ এর অ্যাকাউন্ট খুলেছেন।
এ বিষয়ে ‘নগদ’ এর হেড অব পাবলিক রিলেশন্স মুহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম সজল বলেন, মোবাইল ওয়ালেট খোলার প্রক্রিয়াকে সহজতর করতে তারা শুরু থেকেই কাজ করছেন। সেই প্রক্রিয়ারই অংশ। ”আমাদের বিশ্বাস অ্যাকাউন্ট খোলার প্রক্রিয়াটা সহজ হলে দেশে অধিক সংখ্যক মানুষকে দ্রুততার সঙ্গে ফাইন্যান্সিয়াল ইনক্লুশানের মধ্যে আনা যাবে,” বলেন সজল।
বর্তমানে ব্যাংক এবং বিভিন্ন ধরণের মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সেবার মাধ্যমে দেশের প্রায় ৬০ শতাংশ মানুষ ফাইন্যান্সিয়াল ইনক্লুশানের আওতায় রয়েছে। ‘নগদ’ প্রত্যাশা করে আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে দেশের প্রতিটি বয়োপ্রাপ্ত মানুষ ফাইন্যান্সিয়াল ইনক্লুশানের আওতাভূক্ত থাকবে।
এর আগে প্রথমে টেলিটক এবং পরে রবি ও এয়ারটেলের গ্রাহকদের জন্যেও একই প্রক্রিয়ায় ‘নগদ’ এর অ্যাকাউন্ট খোলার সুবিধা চালু করা হয়। গ্রামীণফোনের পর বাংলালিংকের গ্রাহকদের জন্যেও একই সুবিধা চালু করতে এরই মধ্যে তৃতীয় গ্রাহক সেরা মোবাইল ফোন অপারেটরটির সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছে ‘নগদ’।
বাংলাদেশ ডাক বিভাগের আর্থিক লেনদেন সেবা ‘নগদ’ গত বছর ২৬ মার্চ আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করে নানা ধরণের প্রযুক্তিগত সুবিধা নিয়ে সেবাগুলোকে আকর্ষনীয় করেছে।
*১৬৭# ডায়াল করে অ্যাকাউন্ট খোলার প্রক্রিয়াও তারই একটি অংশ। ‘নগদ’ বলছে, যেহেতু মোবাইল অপারেটদের কাছে তার গ্রাহকের সকল তথ্য বায়োমেট্টিক ভেরিফিকেশন করা আছে সুতরাং একই তথ্য বারবার বিভিন্ন কোম্পানিকে না দিয়ে এক জায়গা থেকেই সেটি সকলে ব্যবহার কতে পারে।
এই সেবাটি চালু করতে আগেই বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের কাছ থেকে অনুমোদন নিয়েছে গ্রাহক সংখ্যার বিবেচনায় দ্বিতীয় অপারেটর ‘নগদ’। বিটিআরসি’র হিসেব অনুসারে, জুন মাসের শেষে গ্রামীণফোনের কার্যকর গ্রাহক সংখ্যা দাঁড়িয়েছে সাত কোটি ৪৫ লাখ ৩১ হাজার।
অন্যদিকে আগস্ট মাস পর্যন্ত ‘নগদ’ এর গ্রাহক সংখ্যা আড়াই কোটি পেরিয়ে গেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসেব অনুসারে জুলাই মাসের শেষে দেশে নয় কোটি ২৬ লাখ মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল অ্যাকাউন্ট আছে যার মধ্যে চার কোটি ২৭ লাখ অ্যাকাউন্ট কার্যকর আছে।