মহাকাশ থেকে দেখা যাচ্ছে যে, আমাদের এই গ্রহটির শরীর থেকে ঠিকরে বেরিয়ে আসছে লক্ষ লক্ষ হীরার আলো! কিন্তু ঠিক কোথায় থেকে বেরিয়ে আসছে সেই হীরা ঠিকরোনো আলো? আজ থেকে ২৪ বছর আগে সেই ভুতুড়ে হীরা ঠিকরোনো আলো প্রথম দেখেছিলেন কার্ল সাগান। কিন্তু এতদিন সেই ভুতুড়ে আলোর রহস্য ভেদ করা যায়নি।
জানা যায়নি, বোঝা যায়নি, তা বেরিয়ে আসছে পৃথিবীর কোথায় থেকে? সমুদ্র থেকে? বরফে মোড়া পাহাড়ের শৃঙ্গগুলি থেকে? নাকি সেই হীরা ঠিকরোনো আলো বেরিয়ে আসছে ভূপৃষ্ঠের অনেক অনেক ওপরে বায়ুমণ্ডলেরই কোন অজানা, অচেনা স্থান থেকে?
সম্প্রতি সেই ভুতুড়ে আলোর রহস্য ভেদ করল নাসার অধীনে থাকা ন্যাশনাল ওশেনিক অ্যান্ড অ্যাটমস্ফিয়ারিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (নোয়া)-এর পাঠানো উপগ্রহ ‘ডিপ স্পেস ক্লাইমেট অবজারভেটরি’ (ডিসকভার)। উপগ্রহটিকে মহাকাশে পাঠানো হয়েছিল ২০১৫ সালে। যা মাত্র এক বছর ধরে মহাকাশ থেকে নজর রেখে পৃথিবী থেকে ওই হীরা ঠিকরোনো ভুতুড়ে আলোকে বেরিয়ে আসতে দেখেছে কয়েকশো’ বার।
উপগ্রহটির পাঠানো ছবি ও তথ্যাদি বিশ্লেষণ করে শেষ পর্যন্ত জানা গিয়েছে, ভূপৃষ্ঠের অনেক ওপরে বায়ুমণ্ডলের অনেক ওপরের স্তরের মেঘে ভেসে থাকা অত্যন্ত ঝকঝকে বরফের কেলাসই তার ওপরে পড়া সূর্যের আলোকে ফিরিয়ে দেওয়ায় (প্রতিফলন) ওই হীরে ঠিকরোনো ‘ভুতুড়ে’ আলো বেরিয়ে আসছে পৃথিবী ‘ফুঁড়ে’! যাকে মহাকাশ থেকে দেখলে অসম্ভব রকমের মায়াবী মনে হচ্ছে। গবেষণাপত্রটি প্রকাশিত হয়েছে আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান-জার্নাল ‘জিওফিজিক্যাল রিসার্চ লেটার্স’-এর ১৫ মে সংখ্যায়।
তথ্যসূত্র : আনন্দবাজার