‘প্রিমো আর ফাইভ’। দেশীয় প্রযুক্তিপণ্য নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ওয়ালটনের দারুণ এক ফোরজি হ্যান্ডসেট। ফোনটির বিশেষ ফিচার হিসেবে আছে বড় পর্দার ফুল-ভিউ আইপিএস ডিসপ্লে। এছাড়া, র্যাম, রম, ক্যামেরা, ব্যাটারি, ফেস আনলক সব মিলিয়ে ১০ হাজার টাকার নিচে বেশ ভালো একটি হ্যান্ডসেট এটি।
ডিজাইন: স্মার্টফোনটির ডিজাইন বেশ আকর্ষণীয় ও স্টাইলিশ। এর মসৃণ ও বাঁকানো কোণা স্মার্টফোনটির সৌন্দর্য্য বাড়িয়েছে অনেক। হ্যান্ডসেটটি বেশ হালকা। ব্যাটারিসহ ওজন ১৪৫ গ্রাম। ৮.৩ মিমি ফোনটি হাতে ধরলে একটা প্রিমিয়াম ফিল পাওয়া যায়। ব্ল্যাক অলিভ এবং গোল্ডেন- এই দুটি ভিন্ন রঙে ফোনটি বাজারে মিলছে।
ডিসপ্লে: এই ফোনে ব্যবহৃত হয়েছে আইপিএস প্রযুক্তির এইচডি প্লাস নিউ জেনারেশন ১৮:৯ রেশিওর ফুল-ভিউ ডিসপ্লে। ৫.৭২ ইঞ্চির পর্দার রেজ্যুলেশন ১৪৪০ বাই ৭২০ পিক্সেল। ক্যাপাসিটিভ টাচ স্ক্রিন সুবিধাযুক্ত স্মার্টফোনটিতে রয়েছে ২.৫ডি কার্ভড গ্লাসও। ফলে বিভিন্ন অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহার এবং ভিডিও দেখা, গেম খেলা, বই পড়া বা ইন্টারনেট ব্রাউজিংয়ে বেশ ভালো অভিজ্ঞতা মেলে। এর গ্লাস ধূলা ও আঁচররোধী।
অপারেটিং সিস্টেম: ‘প্রিমো আরফাইভ’ অ্যান্ড্রয়েড ৮.১ ওরিও অপারেটিং সিস্টেমে পরিচালিত। ফলে এই ফোনের কার্যক্ষমতা ও গতি বেশ।
প্রসেসর, র্যাম ও স্টোরেজ: ‘প্রিমো আরফাইভ’-এ ব্যবহৃত হয়েছে ১.৩ গিগাহার্জ গতির কোয়াডকোর প্রসেসর। প্রসেসরের গতিটা আরেকটু বেশি হলে ভালো হতো। তবে ২ জিবি এলপিডিডিআর৩ র্যাম থাকায় ওই অভাবটা সেভাবে বড় হয়ে দেখা দেয় না। আবার গ্রাফিক্স হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে পাওয়অর ভিআর জিই৮১০০। ফলে বিভিন্ন অ্যাপস ব্যবহার, ইন্টারনেট ব্রাউজিং, থ্রিডি গেমিং এবং দ্রুত ভিডিও লোড ও ল্যাগ-ফ্রি ভিডিও স্ট্রিমিং সুবিধা পাওয়া যায়।
মেমোরি: ফোনটির অভ্যন্তরীণ মেমোরি ১৬ গিগাবাইটের। যা মাইক্রো এসডি কার্ডের মাধ্যমে ১২৮ গিগাবাইট পর্যন্ত বাড়ানো যাবে। ফলে অনেক বেশি ছবি, গান, ভিডিও, ডকুমেন্টস ইত্যাদি সংরক্ষণ নিয়ে খুব একটা চিন্তায় পড়তে হবে না।
ক্যামেরা: এই ফোনটির পেছনে রয়েছে এলইডি ফ্ল্যাশযুক্ত বিএসআই ১৩ মেগাপিক্সেল ক্যামেরা। এতে পি.ডি.এ.এফ (ফেস ডিটেকশন অটো ফোকাস) প্রযুক্তি থাকায় ০.১ সেকেন্ডেই ¯^য়ংক্রিয়ভাবে ক্যামেরার ফোকাস সেট করে। যার ফলে বেশ ভালো ছবি পাওয়া যায়। আকর্ষণীয় সেলফির জন্য সামনে রয়েছে সফট এলইডি ফ্ল্যাশযুক্ত বিএসআই ৮ মেগাপিক্সেল ক্যামেরা। উভয় পাশের ফুল এইচডি ভিডিও ধারণ করা যায়।
ক্যামেরায় নরমাল মোড ছাড়াও রয়েছে পোর্টরেইড মোড, ফেস বিউটি, ফেস ডিটেকশন, ডিজিটাল জুম, সেলফ টাইমার, অটো-ফোকাস, টাচ-ফোকাস, টাচ-শট, এইচডিআর, টাইম ল্যাপস, মোশন, প্যানোরমা, স্মার্ট সিন, নাইট মোড, সুপার পিক্সেল, জিফসহ অসংখ্য আকর্ষণীয় ফিচার।
ব্যাটারি: স্মার্টফোনটিতে ব্যবহৃত হয়েছে ৩ হাজার মিলিঅ্যাম্পিয়ারের লিথিয়াম পলিমার ব্যাটারি। যা পর্যাপ্ত পাওয়ার ব্যাকআপ দেয়।
কানেক্টিভিটি: কানেক্টিভিটির জন্য এই ফোনটিতে আছে ওয়াই-ফাই, ব্লুটুথ ভার্সন ৪.২, ইউএসবি ২, ওয়্যারলেস ডিসপ্লে, ল্যান হটস্পট, ওটিএ এবং ওটিজি। সেন্সর হিসেবে আছে জিপিএস, এ-জিপিএস, এক্সেলারোমিটার (থ্রিডি), প্রেক্সিমিটি ইত্যাদি।
সিকিউরিটি: ওয়ালটনের এই ফোনে তিন ধরনের সিকিউরিটি ব্যবস্থা রয়েছে। এতে ফেস আনলক প্রযুক্তি দেয়া হয়েছে। ফলে ব্যবহারকারী ফোন আনলক করতে তার মুখাবয়ব ব্যবহার করতে পারবেন। এতে অনাকাক্সিক্ষত কারো হাতে পড়লেও ফোনের তথ্য থাকবে সুরক্ষিত। তাছাড়া, ফোনের সুরক্ষায় রয়েছে ফিঙ্গারপ্রিন্ট সেন্সরও। দেয়া যাবে স্ক্রিন লক পাসওয়ার্ডও।
অন্যান্য ফিচার: ফোরজি নেটওয়ার্ক সাপোর্ট, ডুয়াল সিম, স্পিøট স্ক্রিন, রেকর্ডিং সুবিধাসহ এফএম রেডিও, ফুল এইচডি ভিডিও প্লে-ব্যাক, নোটিফিকেশন লাইট, স্মার্ট অ্যাকশন, স্মার্ট জেসচার, ইত্যাদি।
অন্যান্য তথ্য: বাংলাদেশে তৈরি বলে এই স্মার্টফোনে বিশেষ রিপ্লেসমেন্ট সুবিধা দিচ্ছে ওয়ালটন। স্মার্টফোন কেনার ৩০ দিনের মধ্যে ত্রæটি ধরা পড়লে ফোনটি পাল্টে ক্রেতাকে নতুন আরেকটি ফোন দেয়া হবে। এছাড়াও, ১০১ দিনের মধ্যে প্রায়োরিটি বেসিসে ৪৮ ঘন্টার মধ্যে ক্রেতা বিক্রয়োত্তর সেবা পাবেন। তাছাড়া, স্মার্টফোনে এক বছরের এবং ব্যাটারি ও চার্জারে ছয় মাসের বিক্রয়োত্তর সেবা তো থাকছেই।
দাম: স্মার্টফোনটির দাম মাত্র ৯,৩৯৯ টাকা।
‘প্রিমো আর ফাইভ’: দেশে তৈরি ফুল-ভিউ ডিসপ্লের দারুণ ফোরজি ফোন
previous post