সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভুয়া, উসকানিমূলক, আপত্তিকর এবং বিতর্কিত পোস্ট দিলে- তা নিজে থেকেই সরিয়ে বা মুছে দেবে সংস্থাটির কর্তৃপক্ষ। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার সিলিকন ভ্যালির প্রধান কার্যালয়ে বুধবার এই নতুন নীতির বিষয়ে জানিয়েছেন ফেসবুকের এক মুখপাত্র।
সম্প্রতি শ্রীলঙ্কায় পরীক্ষামূলকভাবে এই প্রযুক্তি প্রয়োগ করে সাফল্য মিলেছে বলে সংস্থাটির দাবি। আগামী কয়েক মাসের মধ্যে সারা বিশ্বেই এই প্রযুক্তি প্রয়োগ করা হবে বলে সংস্থার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। সংস্থার ওই মুখপাত্র জানিয়েছেন, আমরা একটি নীতি পরিবর্তনের দিকে যাচ্ছি। এই পদ্ধতিতে ভার্চুয়াল দুনিয়ায় ছড়ানো বিদ্বেষ, হিংসা, গুজব এবং ভুল তথ্যে বাস্তব জগতে উত্তেজনা বা হিংসা ছড়াতে পারে এমন পোস্ট সরিয়ে দেয়া হবে। ফলে পোস্টের মালিক বা অন্য কেউ সেগুলো আর দেখতে পারবেন না।
কীভাবে সেগুলো চিহ্নিত করবে ফেসবুক? এ বিষয়ে ফেসবুকের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এসব চিহ্নিত করতে স্থানীয় প্রশাসন, স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাসহ নানা স্তরের লোকজনের সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি করা হচ্ছে। সারা বিশ্বেই নেটওয়ার্ক আরও বাড়ানো হচ্ছে। পাশাপাশি নিজেদের নজরদারি পদ্ধতিও আরও জোরদার করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, কিছুদিন আগেই শ্রীলঙ্কায় সোশ্যাল মিডিয়ায় গুজব ছড়ায়, বৌদ্ধদের হত্যার উদ্দেশে মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষজন খাবারে বিষ মিশিয়ে বিক্রি করছে। এর জেরে হিংসা ছড়িয়ে পড়ে। এরপরই ফেসবুক শ্রীলঙ্কায় এই নীতি প্রয়োগ করে এবং সব উসকানিমূলক পোস্ট মুছে দিতে শুরু করেছে। এবার সেই পদ্ধতিই সারা বিশ্বে কার্যকর করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ।
এত দিন পর্যন্ত সাধারণভাবে কোনো পোস্ট ফেসবুক কর্তৃপক্ষ নিজে থেকে মুছে দিত না। কোনো পোস্ট নিয়ে কেউ রিপোর্ট করলে অর্থাৎ অভিযোগ জানালে তবেই সেগুলো সরিয়ে বা মুছে দিত। নতুন পদ্ধতিতে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ নিজেই সরিয়ে বা মুছে দেবে এই ধরনের আপত্তিকর পোস্ট। এর আগে বুধবারই নিউইয়র্কে একটি অনুষ্ঠানে ফেসবুকের পক্ষ থেকে বলা হয়, মিথ্যা খবর সরিয়ে নেবে না তারা। প্রতিষ্ঠানটির ভাষ্য ছিল, মনগড়া পোস্টগুলো সরিয়ে নেয়া বাক-স্বাধীনতার মূলনীতির সঙ্গে সাংঘর্ষিক। মিথ্যা খবর তাদের কমিউনিটে স্ট্যান্ডার্ড লঙ্ঘন করে না।
তারা জানায়, যেসব পোস্টকে ভুয়া খবর বলে মনে হবে, সেগুলোকে নিউজ-ফিডে নিচু অবস্থানে রাখা হবে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে সামাজিকমাধ্যম ব্যবহার করে ভোটারদের প্রভাবিত করার চেষ্টা করেছিল রাশিয়া- এমন তথ্য আসার পর ভুয়া খবর বা মিথ্যা খবর ছড়ানোর ক্ষেত্রে ফেসবুকের ভূমিকা পর্যবেক্ষণ শুরু হয়। বুধবারই নিউইয়র্কে একটি অনুষ্ঠানে প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে সাংবাদিকদের বোঝানোর চেষ্টা করা হয় যে, তারা এ সমস্যা সমাধানে গুরুত্ব দিয়েছে।
তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার, এনডিটিভি, ফিনান্সিয়াল এক্সপ্রেস ও ডেইলি মেইলের।