ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে ব্যবসায়িক সফলতা অর্জন করে আসছেন, এমন উদ্যোক্তাদের গল্প তুলে ধরতে ফেসবুক গত ২১ ডিসেম্বর থেকে বাংলাদেশে ‘বি ডিসকাভারড’ ক্যাম্পেইন শুরু করেছে। ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসার সহায়তায় বিশ্বব্যাপী ক্যাম্পেইনের অংশ হিসেবে বাংলাদেশি উদ্যোক্তাদের অভিজ্ঞতা বিনিময়ের সুযোগ করে দিবে ফেসবুক।
‘বি ডিসকাভারড’ ক্যাম্পেইনের আওতায় ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রামে কয়েক পর্বের লাইভ আলোচনা আয়োজন করা হবে। সেখানে উদ্যোক্তারা তাদের অভিজ্ঞতা এবং অনলাইনে সফলতার কৌশল সম্পর্কে আলোচনা করবেন। আলোচনায় উদ্যোক্তাদের সাথে ফেসবুক মুখপাত্ররা ডিজিটাল টুলস ও ফিচারস সম্পর্কে টিপস প্রদান করবেন যা ব্যবসায়িক ভাবনাকে বাস্তবে রূপ দিতে সহায়তা করবে। এই ক্যাম্পেইন ডিজিটাল প্লাটফর্মে কম খরচে কীভাবে ব্যবসাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবে, সেই বিষয়ে আগ্রহীদের গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ প্রদান করবে।
ক্যাম্পেইনের উদ্বোধন করতে কর্পোরেট প্রশিক্ষক ও ডন সামদানি ফ্যাসিলিটেশন এর প্রতিষ্ঠাতা গোলাম সামদানি ডন ফেসবুকে একটি লাইভ ভার্চুয়াল আলোচনা পরিচালনা করেন। আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন দুইজন বাংলাদেশী উদ্যোক্তা, ফেসবুক এবং বাংলাদেশ সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস (বেসিস)-এর প্রতিনিধি।
“মহামারীর কারণে বাংলাদেশে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা, বিশেষ করে নারী উদ্যোক্তারা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে”, বলেন ফেসবুকের এশিয়া প্যাসিফিকের ইমার্জিং মার্কেটস এর ডিরেক্টর, জর্ডি ফোর্নিস। তিনি আরও বলেন, “আমরা উদ্যোক্তাদের সহযোগিতা করতে এবং বর্তমান চাহিদার সাথে কীভাবে খাপ খাওয়াতে হবে, সে বিষয়ে সহায়তা করতে চাই। চারপাশে অনেক সফলতার গল্প আছে যা আমাদের অনুপ্রেরণা যোগায়। আমরা আশা করি ‘বি ডিসকাভারড’ ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ীরা পারস্পরিক অভিজ্ঞতা বিনিময়ের মাধ্যমে উপকৃত হবে এবং ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের সঠিক ব্যবহার সম্পর্কে জানতে পারবে।”
স্টাইল ইকোর প্রতিষ্ঠাতা ও স্বত্তাধিকারী সায়মা রহমান এবং কুকআপসের সহ-প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নামিরা হোসেন আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন। তারা ফেসবুকের মাধ্যমে সফল ব্যবসায়ী হয়ে ওঠার অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন। আরও জানান মহামারীর সময়ে কীভাবে ব্যবসার কৌশল পরিবর্তন করে তারা ফেসবুকে গ্রাহকদের সাথে সংযুক্ত থেকেছেন এবং নানা বাঁধা পেরিয়ে অনলাইনে তাদের সেবা সবার কাছে পৌঁছে দিয়েছেন।
বেসিসের সভাপতি সৈয়দ আলমাস কবির ডিজিটাল টুলস জেন্ডারভিত্তিক বৈষম্য দূর করতে ডিজিটাল প্লাটফর্মের অবদান সম্পর্কে আলোচনা করেন। তিনি বলেন, “বাংলাদেশের দুর্গম প্রান্ত থেকে স্বপ্নচারী ও উদ্যোক্তাদের ফেসবুক তাদের পণ্য বিক্রয়ের সুযোগ করে দিয়েছে। আমি আশা করছি, ভবিষ্যতেও ফেসবুক বাংলাদেশের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী, বিশেষ করে নারী উদ্যোক্তাদের সহায়তা করে যাবে। এতে যেমন আমাদের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি আসে, সেই সাথে তারাও আর্থিকভাবে আরো স্বাবলম্বী হতে পারে।”
চলতি মাসে ফেসবুক, অরগানাইজেশন অব ইকোনোমিক কো-অপারেশন এন্ড ডেভেলপমেন্ট এবং ওয়ার্ল্ড ব্যাংক-এর সম্মিলিত প্রয়াসে প্রকাশিত হয় গ্লোবাল স্টেট অব স্মল বিজনেস রিপোর্ট। দেখা গিয়েছে বিশ্বব্যাপী ৩৫ শতাংশ ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসা মহামারীর পরে নতুন কর্মপদ্ধতির সাথে খাপ খাওয়াতে ডিজিটাল টুলস ও প্লাটফর্মের সহযোগিতা নিয়েছে। বাংলাদেশে জরিপকৃত ৪৬ শতাংশ উদ্যোক্তা গত মাসে তাদের পণ্যের চার ভাগের এক ভাগ ডিজিটাল টুলসের সহায়তায় বিক্রি করেছেন। এছাড়া ৬১ শতাংশ উদ্যোক্তা ব্যবসার ভবিষ্যৎ নিয়ে আশাবাদী।
ফেসবুক বিশ্বজুড়ে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের যেভাবে সহযোগীতা করছে সে সম্পর্কে আরও জানতে ভিজিট করুন: https://www.facebook.com/business