আপনার মতো ফেসবুক পোকা কেউ নয় বলে মনে করেন? আসলে অনেকেই এমনভাবে ফেসবুক ব্যবহার করেন যাতে নিজের সবকিছু দিয়ে দেন। অথচ ফেসবুক সম্পর্কে এমন কিছু তথ্য আছে যা আমরা জানি না৷ এই যেমন ২০০৯ সালে চিনে ফেসবুক ব্যবহারকে নিষিদ্ধ করা হয়েছিল৷ জানতেন কি এটা?
চলুন ঘুরে আসি ২০০৪ সালের ফেসবুক তৈরির শুরুর সময় থেকে। ফেসবুক তৈরির পর থেকে এর নির্মাতা জাকারবার্গকে পড়তে হয়েছে নানা ঝামেলায়। অনেকেই দাবি করেছেন যে জাকারবার্গ ফেসবুকের নির্মাতাই নন, কিন্তু আদালতের রায়ে সেই বিতর্ক এখন থেমে গেছে। যাঁরা ‘দ্য সোশ্যাল নেটওয়ার্ক’ চলচ্চিত্রটি দেখেছেন তাঁরা ফেসবুক নির্মাণ ও এর মালিকানা নিয়ে দ্বন্দ্ব সম্পর্কে নিশ্চয় জানেন।
এখন স্বীকৃত যে, ২০০৪ সালে হার্ভার্ডের ডরমেটরিতে ফেসবুক প্রতিষ্ঠা করেছিলেন মার্ক জাকারবার্গ ও তাঁর ঘনিষ্ঠদের মধ্যে কম্পিউটার বিজ্ঞান বিষয়ের ছাত্র এডওয়ার্ডো সেভারিন, ডাস্টিন মস্কোভিজ এবং ক্রিস হিউজ। ন্যাপস্টার প্রতিষ্ঠাতা শন পার্কারের পরামর্শে ফেসবুক থেকে ‘দ্য’ বাদ দিয়ে শুধু ফেসবুক করা হয়। ফেসবুকের সদস্য প্রাথমিকভাবে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল, কিন্তু পরে সেটা বোস্টন শহরের অন্যান্য কলেজ, আইভি লীগ এবং স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত সম্প্রসারিত হয়। আরো পরে এটি বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ, হাই স্কুল এবং ১৩ বছর বা ততোধিক বয়স্কদের জন্য উন্মুক্ত করা হয়।
বছর চোদ্দ আগে নেট দুনিয়ায় বিপ্লব এনেছিল বহুল ব্যবহৃত সাইটটি৷ সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বেড়েছে চাহিদা৷ কিন্তু, রেহাই মেলেনি, পড়তে হয়েছে কড়া সমালোচনার মুখে৷ তবে, সেজন্য ভাটা পড়েনি জনপ্রিয়তায়৷ ইউজারদের চাহিদা মেটাতে সংস্থা এনেছে আপডেটেড ফিচারসগুলি৷ যা আবারও আকর্ষণ করেছে ইউজারদের৷ বর্তমানে ২২০ কোটির বেশি ব্যবহারকারী রয়েছে ফেসবুকের। কিন্তু এখন অনেক প্রাইভেসি সংকান্ত ঝামেলায় পড়তে হচ্ছে ফেসবুককে।
১) ফেসবুকের প্রতিষ্ঠাতা মার্ক জাকারবার্গ৷ কিন্তু অনেকেই হয়ত জানেন না, মার্ককে ফেসবুক থেকে কখনই ব্লক করা সম্ভব নয়৷
২) বহু মানুষের মৃত্যুর জন্য দায়ী ফেসবুকের ‘আনফ্রেন্ড’ অপসনটি৷
৩) ব্যবহারকারীকে নিজের পছন্দের ভাষা ব্যবহারের সুযোগ দিচ্ছে সাইটটি৷
৪) ফেসবুকে এখনও প্রায় ৩০ মিলিয়ন মৃত ইউজার অ্যাকাউন্ট রয়েছে৷
৫) ‘ফেসবুকে অন হলেই এক চড়৷’ এমনই অদ্ভুত নির্দেশ দিয়েছিলেন এক ব্লগার৷ তিনি নাকি কাজটির জন্য এক মহিলাকে হায়ারও করেছিলেন৷
৬) প্রত্যেকদিন প্রায় ৬০০,০০০ লাখ ফেসবুক অ্যাকাউন্টে হ্যাকিংয়ে্র চেষ্টা হয়ে থাকে৷
৭) লগ-আউটের উপর পরও ফেসবুকে থেকে যায় হিস্ট্রি৷ ইউজার প্রতিদিন কোন সাইটগুলিতে ভিজিট করছেন, তা সবই থেকে যায় ফেসবুকে৷
৮) ফেসবুকে স্ট্যাটাস আপলোড করার ট্রেন্ড বহুদিনের৷ কিন্তু, জানেন কি প্রতি তিনজনের মধ্যে একজন ফেসবুক ভিজিট করার পর নিজের জীবন নিয়ে অসন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন৷
৯) ফেসবুকে ফেক অ্যাকাউন্টকে ঘিরে ঘটেছিল আরও এক মজার ঘটনা৷ যেখানে এক মহিলাকে জেলবন্দী করা হয় ২০ মিনিটের জন্য৷ তার অপরাধ, ভুয়া অ্যাকাউন্ট তৈরি করে নিজেই নিজের অ্যাকাউন্টে অপমানজনক ম্যাসেজ পাঠিয়েছিলেন৷
১০)ফেসবুক ব্যবহারকারী তরুণদের গড়ে ৩০০ জন করে বন্ধু রয়েছে। আর শতকরা ৭৫ ভাগ তরুণের সঙ্গে তাঁর অভিভাবকেরা ফেসবুকে বন্ধুত্ব গড়ে তুলেছেন। ফেসবুক ব্যবহারকারীরা প্রতিমাসে গড়ে অন্তত সাড়ে আট ঘণ্টা শুধু ফেসবুকেই সময় কাটান।
১১) সবার আগে ফেসবুক চালিয়েছেন কে? অনেকেই হয়তো ধারণা করেন যে, ফেসবুকের সহ-প্রতিষ্ঠাতা ও বর্তমান প্রধান নির্বাহী মার্ক জাকারবার্গ ছাড়া আর কে হবেন তিনি! কিন্তু আসলে ফেসবুক ব্যবহারকারী হিসেবে জাকারবার্গ চতুর্থ। তাহলে তাঁর আগে ফেসবুকে অ্যাকাউন্ট খুলেছিলেন কে? আগের তিনটি অ্যাকাউন্ট খোলা হয়েছিল ফেসবুক পরীক্ষামূলক চালানোর জন্য। প্রথম তিনটি আইডি রাখা হয়েছিল পরীক্ষামূলকভাবে ফেসবুক চালানোর জন্য। আর এ তালিকার চতুর্থ অ্যাকাউন্টটি জাকারবার্গের। প্রথম দশজন ফেসবুক ব্যবহারকারীর সবাই ছিলেন জাকারবার্গের সুপরিচিত। জাকারবার্গ ছাড়াও এই তালিকায় আছেন ফেসবুকের সহ-প্রতিষ্ঠাতা ক্রিস হিউজ, হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে জাকারবার্গের রুমমেট আরি হাসিত। এ ছাড়াও পরিচিতদের মধ্যে ছিলেন ডাস্টিন মস্কোভিজ, অ্যান্ড্রু ম্যাককুলাম ও ক্রিস পাটনাম।
১২) বর্তমানে ফেসবুক ব্যবহারকারীর সংখ্যা ১২০ কোটির বেশি। কিন্তু ফেসবুকের যত অ্যাকাউন্ট আছে, সব অ্যাকাউন্টধারীই কী বাস্তবের মানুষ? প্রযুক্তি গবেষণাপ্রতিষ্ঠান ইমার্কেটার্সের গবেষকেরা হিসাব করে দেখেছেন, ফেসবুকে ১০ শতাংশের বেশি অ্যাকাউন্টের মালিক কোনো মানুষ নয়। ফেসবুকে ১০ কোটিরও বেশি অ্যাকাউন্ট রয়েছে পশু, বস্তু বা কোনো ব্র্যান্ডের নামে। আর ফেসবুক ব্যবহার শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত তিন কোটি মানুষ পৃথিবীর মায়া কাটিয়ে গেছেন।
২ comments
আসলে পোস্ট ভালো লেখেছেন।ধন্যবাদ শেয়ার জন্য।
Nice Post