তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেছেন বঙ্গবন্ধু ভাষা, সংস্কৃতি ও শিক্ষা আন্দোলন থেকে শুরু করে ধাপে ধাপে ২৪ বছরে রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব দিয়ে আমাদের স্বাধীনতা উপহার দিয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার পর একেবারে শূণ্য হাতে যুদ্ধবিধ্বস্থ বাংলাদেশকে মাত্র সাড়ে ৩ বছরে ধ্বংস-প্রাপ্ত রাস্তাঘাট, ব্রিজ-কালভার্ট, রেললাইন, পোর্ট সচল করে অর্থনীতিতে গতি সঞ্চার করেছিলেন।
প্রতিমন্ত্রী আজ বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল মিলনায়তনে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের উদ্যোগে আয়োজিত “জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক নেতৃত্ব এবং সুবর্ণজয়ন্তীতে দেশের উন্নয়ন” শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সিনিয়র সচিব এন এম জিয়াউল আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানের অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের নির্বাহী পরিচালক ড. মো: আব্দুল মান্নান, বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিকর্ণ কুমার ঘোষ, ডিজিটাল নিরাপত্তা এজেন্সি’র মহাপরিচালক মো: খায়রুল আমীন, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো: রেজাউল মাকছুদ জাহেদী, কন্ট্রোলার অব সার্টিফাইং অথরিটিজের নিয়ন্ত্রক আবু সাঈদ চোধুরী।
অনুষ্ঠানের প্রধান আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলা একাডেমির সভাপতি ও বরেণ্য কথা সাহিত্যিক সেলিনা হোসেন।
প্রতিমন্ত্রী বলেন সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশকে মাত্র ১০ মাসের মধ্যে বঙ্গবন্ধু রাষ্ট্রপরিচালনার মূল সংবিধান উপহার দিয়েছিলেন। বিশ্বের এখনো অনেক স্বাধীন দেশ আছে যাদের সংবিধান রচনা হয়নি। তিনি বলেন সংবিধানে অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা ও চিকিৎসা ৫টি মৌলিক অধিকারকে রাষ্ট্রের দায়িত্ব হিসেবে সংরক্ষিত করেছিলেন। পাশাপাশি বাংলাদেশকে সোনার বাংলা গড়ে তোলার জন্য দেশের প্রতিটি নাগরিককে সোনার মানুষে পরিণত করতে শিক্ষানীতি প্রণয়নের জন্য শিক্ষাবিদ কুদরাত-এ-খুদাকে দায়িত্ব দিয়েছিলেন। বেতবুনিয়াতে স্যাটেলাইটের ভূ-উপগ্রহ কেন্দ্র স্থাপন করেছিলেন। তাঁর সময়ই বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশানাল টেলিকমিনিউকেশন ইউনিয়নের সদস্য পদ লাভ করে।
তিনি আরও বলেন বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশকে উন্নত, সমৃদ্ধ ও সোনার বাংলা হিসেবে গড়ে তুলতে পঞ্চ-বার্ষিকী পরিকল্পনা প্রণয়ন করেছিলেন। কিন্তু ৭১’র পরাজিত ঘাতকেরা দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণকে নসাত করা জন্য ৭৫’র ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। ১৯৭৫ থেকে ১৯৯৬ পর্যন্ত ২১ বছর বঙ্গবন্ধু বিহীন বাংলাদেশ নাবিক বিহীন তরীর মত গন্তব্যে পৌছাতে পারেনি। বরং পেছনের দিকে চলেছে।
পলক বলেন ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টা প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা ২০০৮ সালে ঘোষণা করেন ২০২১ সালে বাংলাদেশ হবে তথ্যপ্রযুক্তিনির্ভর ডিজিটাল বাংলাদেশ। তখন অনেকেই তা বিশ্বাস করতে পারেনি। সততা, সাহসিকতা ও দূরদর্শিতা দিয়ে মাত্র ১৩ বছরের মধ্যে সারাবিশ্বকে তাক লাগিয়ে ৪০ শতাংশ বিদ্যুতের দেশকে শতভাগ বিদ্যুতের আওতায় এনেছেন। যেখানে ৫৬ লাখ ইন্টারনেট ব্যবহারকারী ছিল, আইসিটি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের যুগপোযোগী পরিকল্পনা ও সুপরামর্শে ব্রডব্যন্ড কানেক্টিভিটি ইউনিয়ন পর্যন্ত পৌছে গেছে। বর্তমানে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা ১৩ কোটি দাঁড়িয়েছে। প্রযুক্তিগত উন্নয়নের কারণে করোনাকালীন স্বাস্থ্য, শিক্ষা, কৃষি, ব্যবসা-বাণিজ্যসহ বিচারিক কাজ চলমান রাখা সম্ভব হয়েছে। বর্তমানে বিশ্বে বাংলাদেশ উন্নয়নের রোল মডেল।
প্রতিমন্ত্রী বলেন বঙ্গবন্ধুর আদর্শে উদ্বুদ্ধ হয়ে প্রযুক্তি শক্তিকে কাজে লাগিয়ে উদ্ভাবনী বাংলাদেশ বিনির্মাণে নিজেদের আত্মনিয়োগ করতে সকলের প্রতি আহবান জানান।