বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষ কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন ‘বঙ্গবন্ধু হাই-টেক সিটি’-তে বায়োটেকনোলজি নিয়ে কাজ করবে ওরিক্স বায়ো-টেক লিমিটেড। এলক্ষ্যে প্রতিষ্ঠানটিকে ব্লক-২ এ ২৫ একর জমি বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। বঙ্গবন্ধু হাই-টেক সিটি-তে তারা ৩০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করবে বলে জানা গিয়েছে। আজ বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষের সভাকক্ষে আয়োজিত সভায় এই বায়ো-টেক প্রজেক্ট নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়।
উন্নত বিশ্বে এখন (বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র, ইউরেোপ, চীন, জাপান) এই বায়ো-টেকনোলজির ব্যাপক ব্যবহার হচ্ছে। মূলত Human Plasma থেকে বায়ো-টেক পণ্য উৎপাদিত হয়। এইচআইভি এইডস এবং ক্যান্সার রোগের চিকিৎসায় এসব বায়ো-টেক ঔষধ এখন ব্যবহার হচ্ছে। এছাড়া সার্স, ইনফ্লুয়েঞ্জা, পা ও মুখের বিভিন্ন সংক্রমনসহ ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়া ঘটিত রোগ প্রতিরোধে এর ব্যবহার হচ্ছে। উচ্চতর প্রযুক্তির এই বায়ো-প্রোডাক্ট তথা জৈব পণ্য উৎপাদন একটি জটিল প্রক্রিয়া। ওরিক্স বায়ো-টেক লিমিটেড বঙ্গবন্ধু হাই-টেক সিটি-তে বছরে ১২০০ টন প্লাজমা বিশ্লেষণে সক্ষম প্ল্যান্ট নির্মাণ করতে চায় যার সাথে ২০টি প্লাজমা সংগ্রহ স্টেশন সংযুক্ত থাকবে। প্রতিষ্ঠানটি এক্ষেত্রে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাসহ অন্যান্য উন্নত বিশ্বের মান বজায় রাখার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। এর মাধ্যমে বাংলাদেশের বাজারে বায়ো-টেক পণ্য সহজলভ্য হবে বলে ওরিক্স বায়ো-টেক লিমিটেড এর উপস্থাপনায় বলা হয়। প্রতিষ্ঠানটি এক্ষেত্রে চীনের বৃহত্তম বায়ো-টেক প্রতিষ্ঠান Sino Pharm এর কাছ থেকে প্রযুক্তিগত সহায়তা নিবে।
এই প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে বাংলাদেশ ৩০০ মিলিয়ন ডলারের বৈদেশিক বিনিয়োগ, প্রায় ২০০০ জনের উচ্চ বেতনে কর্মসংস্থান সৃষ্টিসহ বায়ো-প্রযুক্তিতে অনেক দূর এগিয়ে যাবে যা ভিশন ২০২১ বাস্তবায়নে ব্যাপক অবদান রাখবে বলে উপস্থাপনায় বলা হয়। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জনাব জুনাইদ আহমেদ পলক এমপি এসময় প্রকল্প বাস্তবায়নে সম্ভাব্য সময় এবং পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা করেন। তিনি ওরিক্স বায়ো-টেক লিমিটেড-কে দ্রুত কাজ শুরু করার তাগিদ দেন এবং যেকোনো প্রয়োজনে পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি প্রদান করেন। তিনি বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষের কর্মকর্তাদেরকে এবিষয়ে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করার নির্দেশনা প্রদান করেন।
এরপর সামিট টেকনোপলিশ লিমিটেড ও নেটওয়ার্ল্ড হোল্ডিংস লিমিটেড এর মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়। এর আওতায় কোম্পানিটি দুই একর জায়গায় এমআইসিআর চেক বুক উৎপাদন, ক্লাউড সার্ভিস এবং বিভিন্ন সফটওয়্যার নিয়ে কাজ করবে। প্রতিষ্ঠানটি সেখানে প্রাথমিকভাবে ১০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করবে এবং ৫০ জনের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করবে বলে জানিয়েছে।
বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (সচিব) জনাব হোসনে আরা বেগম এনডিসি আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন। সামিট টেকনোপলিশ লিমিটেড ও বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এসময় উপস্থিত ছিলেন।