তথ্যপ্রযুক্তিতে নিরাপত্তা এখন বড় বিষয়। সেখানে একসঙ্গে কাজ করবে বাংলাদেশ ও রাশিয়া। এ ছাড়া দক্ষ মানব সম্পদ তৈরি, ই-গভর্নমেন্টসহ চারটি খাতে রাশিয়ার কাছে সাহায্য চেয়েছে বাংলাদেশ। রাশিয়া তাতে রাজি। বিশেষ করে তথ্য প্রযুক্তিতে নিরাপত্তার বিষয়টিতে বেশি আগ্রহ রাশিয়ার।
আজ রোববার রাজধানীর আইসিটি টাওয়ারে এক অনুষ্ঠানে জানানো হয়, প্রযুক্তিখাতে একে অপরকে সহযোগিতা করবে বাংলাদেশ-রাশিয়া। আইটি সেক্টরে রাশিয়ার সাথে আরো বেশি সহযোগিতার ক্ষেত্র প্রসারিত করার প্রত্যাশা নিয়ে ‘রাশিয়া-বাংলাদেশ আইটি সামিট-২০১৮’ অনুষ্ঠিত হয়।
বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (সচিব) হোসনে আরা বেগম এনডিসি স্বাগত বক্তব্যে বাংলাদেশের আইটি সেক্টরে বিনিয়োগের অপার সম্ভাবনার চিত্র তুলে ধরেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষ দেশের ২৮টি স্থানে হাই-টেক/সফটওয়্যার পার্ক স্থাপন করছে, এরমধ্যে ঢাকায় জনতা টাওয়ার সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক এবং যশোরে শেখ হাসিনা সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্কে ইতোমধ্যে কাজ শুরু হয়েছে। দেশের আইটি সেক্টরে দক্ষ জনবল সৃষ্টিতে রাশিয়া ও বাংলাদেশের একত্রে কাজ করার অনেক সুযোগ রয়েছে বলে তিনি মনে করেন।
আইটি সামিটে প্রধান অতিথি ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী জনাব মোস্তাফা জব্বার বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নের অবদানের কথা স্মরণ করেন। বাংলাদেশের সাথে রাশিয়ার ঐতিহাসিক সম্পর্কের কথা উল্লেখ করে বাংলাদেশের উন্নয়নে রাশিয়ার সাথে যুগপৎ প্রয়াসের আশাবাদ ব্যক্ত করেন। বাংলাদেশের নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্ল্যান্টে (রূপপুর,পাবনায়) একসাথে কাজ করার কথা উল্লেখ করে দুই দেশের আস্থার সম্পর্ক আরো দৃঢ় হয়েছে বলে মন্ত্রী উল্লেখ করেন।
বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান উন্নয়নের কথা উল্লেখ করে রুশ আইটি এক্সপার্ট জনাব আনঝিগানোভ ইলিয় বলেন, এই উন্নয়নের ধারা আরো দ্রুত এগিয়ে নিতে ই-গভর্নমেন্ট, স্মার্ট-সিটি, হেলথ-সার্ভিস, স্মার্ট-পাওয়ার ও এনার্জিসহ সকল সেক্টর দ্রুত ডিজিটালাইজ করতে হবে। রাশিয়া বাংলাদেশের সকল উন্নয়ন কার্যক্রমের অংশীদার হতে প্রস্তুত বলে তিনি জানান।
রুশ সরকার কর্তৃক সরাসরি পরিচালিত উন্নত তথ্যপ্রযুক্তিভিত্তিক প্রতিষ্ঠান স্কলকোভো ইনোভেশন সেন্টার এর স্কলকোভো ফাউন্ডেশন মূলত এনার্জি, স্ট্রাটেজিক কম্পিউটার প্রযুক্তি, বায়ো-মেডিসিন, পারমাণবিক প্রযুক্তি এবং মহাকাশ প্রযুক্তি এই পাঁচটি সেক্টরে কাজ করে। আইটি-সামিটে স্কলকোভো ফাউন্ডেশন এর সহায়তায় বাংলাদেশে ইতোমধ্যে কাজ শুরু করা কয়েকটি আইটি প্রতিষ্ঠানের পরিচয় করিয়ে দেয়া হয়। এসব কোম্পানির মধ্যে রয়েছে– Softline Group, Group-iB এবং Digital Design।
আইটি-সামিটে বাংলাদেশের সাইবার সিকুরিটি, ই-গভর্নমেন্ট, স্মার্ট সিটি, ডাটা সেন্টার, আই-ক্লাউড, ফরেনসিক ল্যাবসহ অন্যান্য আইটি সেক্টরে একযোগে কাজ করার আগ্রহ প্রকাশ করা হয়। সামিটে জানানো হয় রাশিয়ার এই প্রতিষ্ঠানটি ইতোমধ্যেই বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এই সব প্রযুক্তিগত সাহায্য দিয়ে আসছে। উচ্চ প্রযুক্তিগত অপরাধ, অনলাইন প্রতারণা ইত্যাদি রোধে রাশিয়া ২০০৩ সাল থেকে ইন্টারপোল এবং ইউরোপোলের সাথে কাজ করে আসছে। রুশ বিনিয়োগকারিরা এইসব মডেল পরিদর্শন করার আমন্ত্রন জানান। বাংলাদেশ সরকার এবং বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোতে সাইবার সিকুরিটি নিশ্চিত করার জন্য বিশ্ব মানের ফরেনসিক ল্যাব প্রতিষ্ঠার আগ্রহ ব্যক্ত করেন।
আইসিটি বিভাগের সচিব জনাব সুবীর কিশোর চৌধুরী আইটি-সামিটে সভাপতিত্ব করেন।