স্কেইলআপ বাংলাদেশ, বাংলাদেশের ক্ষুদ্র ও বর্ধনশীল ব্যবসার (এসজিবি) জন্য একটি ১২ মাস মেয়াদি বিনিয়োগ প্রস্তুতিমূলক অ্যাকসিলারেটর কর্মসূচি। রাজধানীর মহাখালির ব্র্যাক সেন্টার ইনে আজ এই কর্মসূচির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়েছে। ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্স কর্পোরেশন (আইএফসি) এর সহায়তায় বাংলাদেশের ক্ষুদ্র কিন্তু বর্ধনশীল ব্যবসার জন্য এই কার্যক্রমের আয়োজক বেটারস্টোরিজ। এই উদ্যোগের সঙ্গে আরো রয়েছে আভিস্কার, গ্রামীণফোন অ্যাকসিলারেটর, ব্রিটিশ কাউন্সিল, পামএনএল এবং ক্লাইমেট বিজনেস ইনোভেশন নেটওয়ার্ক (সিবিআইএন)। বাংলাদেশী ব্যবসা উদ্যোগের উন্নয়ন, বিনিয়োগ উপযুক্ত হওয়া ও নিশ্চিত ভবিষ্যতের জন্য সহায়ক হবে এই অ্যাকসিলারেটর কর্মসুচি।
ভৌগলিক অবস্থান ও সীমিত ভোক্তাশ্রেণীর বাইরে নিজেদের ব্যবসার গন্ডি অতিক্রম করার জন্য প্রয়োজন অর্থের। এক্ষেত্রে নিজেদের ছাড়িয়ে যাওয়ার প্রবল স্পৃহা রয়েছে এমন ২৫টি বাণিজ্যিকভাবে টেকসই ব্যবসা, যাদের প্রত্যেকের ৫-২০০ কর্মচারী রয়েছে তারা এই কর্মসূচিতে মনোনীত হবেন। স্কেইলআপ বাংলাদেশ শিরোনামের এই অ্যাকসিলারেটর কর্মসূচিতে ওয়েবসাইটের মাধ্যমে (www.scaleupbangladesh.com) আবেদন করা যাবে ২১ মার্চ ২০১৮ পর্যন্ত।
মনোনীত ব্যবসা উদ্যোগগুলোর জন্য ৩ সপ্তাহের বুটক্যাম্প করবে স্কেইলআপ বাংলাদেশ। পণ্যের বাস্তবতা যাচাই, ব্র্যান্ডিং পরিমার্জন এবং ডিজিটাল ফুট প্রিন্ট, আর্থিক সক্ষমতা বৃদ্ধি ও বিনিয়োগ উপযোগী গ্রহণযোগ্য পরিকল্পনা তৈরিতে সহায়তা দেয়া হবে এই বুটক্যাম্পে। পরবর্তী ৭ মাসে তাদের যোগাযোগ করিয়ে দেয়া হবে পামএনএল এর কারিগরি বিশেষজ্ঞ, সিবিআইএন-এর জলবায়ু পরামর্শক এবং সারাবিশ্বের বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে।
এসবতথ্য জানাতেই আনুষ্ঠানিকভাবে স্কেইলআপ বাংলাদেশ এর উদ্বোধন হল আজ। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত। এ সময় আরো বক্তব্য রাখেন আইএফসি সাউথ এশিয়া’র অপারেশন্স অফিসার ও পিপিসিআর এর প্রজেক্ট লিড হারশ বিবেক; বেটারস্টোরিজ লিমিটেড এর চিফস্টোরি টেলার মিনহাজ আনওয়ার; গ্রামীনফোন এর চিফ ট্রান্সফরমেশন অফিসার কাজী মাহবুব হাসান; ইউএস অ্যামবাসি, ঢাকার ডেপুটি চিফ অব মিশন জোয়েল রিফম্যান এবং বাংলাদেশ স্টার্টআপ কাপ ২০১৭-র খুলনা বিভাগের বিজয়ী শারমিন সুলতানা।
অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত স্কেইলআপ বাংলাদেশ ২০১৮ এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। এ সময় তিনি বলেন, “এসএমই বাংলাদেশের অর্থনীতির মেরুদণ্ড এবং তাদের নিয়ে কাজ করা নিঃসন্দেহে একটি অসাধারণ উদ্যোগ। আমি আশা করছি বেটারস্টোরিজ লিমিটেড এভাবে সমাজের ভাল গল্পগুলো সামনে নিয়ে আসবে স্কেইলআপ বাংলাদেশ ২০১৮ এর মাধ্যমে।“
বেটারস্টোরিজের চিফ স্টোরি টেলার মিনহাজ আনওয়ার বলেন, “স্কেইলআপ বাংলাদেশ একেবারে নতুন একটি অ্যাকসিলারেটর কর্মসূচি। বাংলাদেশের ক্ষুদ্র ও বর্ধনশীল ব্যবসার জন্য বিশেষ সহায়ক এই কর্মসূচি তাদের সক্ষমতা এবং সম্ভবনাকে বৃদ্ধি করবে। দীর্ঘদিনের মাঠ পর্যায়ের অভিজ্ঞতা আর বাংলাদেশের বিনিয়োগ ইকো সিস্টেম সম্পর্কিত দক্ষতার উপর ভিত্তি করেই তৈরি হয়েছে এই সহায়ক কর্মসূচি। এই উদ্যোগে গুরুত্বপূর্ণ পার্টনার হিসাবে আইএফসিকে পেয়েছি। পাশাপাশি গ্রামীণফোন অ্যাকসিলারেটর, ব্রিটিশ কাউন্সিল, আবিস্কার, পামএনএল এবং ক্লাইমেট বিজনেস ইনোভেশন নেটওয়ার্ককে (সিবিআইএন) পাওয়ায় আমরা বিশেষভাবে আনন্দিত।”
উল্লখ্য, বাংলাদেশ স্টার্টআপকাপ ২০১৭ অনুষ্ঠিত হয়েছিল রাজকীয় নেদারল্যান্ড দূতাবাস, আভিস্কার ইন্ডিয়া এবং বেটারস্টোরিজ এশিয়ার সম্মিলিত উদ্যোগে। সেই সাফল্যেও উপর ভিত্তি করেই স্কেইলআপ বাংলাদেশ-এর পরিকল্পনা প্রণয়ন করা হয়েছে। স্টার্টআপ কাপ ২০১৭’র প্রাথমিক পর্যায় অনুষ্ঠিত হয়েছিল সাতটি বিভাগে: বরিশাল, চট্টগ্রাম, খুলনা, ময়মনসিংহ, রাজশাহী, রংপুর ও সিলেট। প্রতিটিি বভাগে ৭ দিনের একটি করে বুটক্যাম্প অনুষ্ঠিত হয়। এতে মোট ২০০ ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। বাংলাদেশ স্টার্টআপ কাপ এবং স্কেইলআপ বাংলাদেশ মিলেই সম্পূর্ণ হচ্ছে একটি বৃত্ত; যা কিনা বাংলাদেশে ইকোসিস্টেম তৈরির কাজ করছে।